সময়ের চিন্তা ডট কমঃ ভুমিদস্যু, মাদক ব্যবসায়ী, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কড়া হুশিয়ারি দিয়েছেন নারায়নগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ। তিনি বলেছেন, কোন ভূমিদস্যু, মাদক ব্যবসায়ী, সন্ত্রাসী পর্দার আড়ালে অপকর্ম করবেন আর বড় ভাইয়ের পরিচয় দিবেন এটা হবে না। আমরা অবশ্যই ভুমিদস্যু, মাদক ব্যবসায়ী, সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। আমরা যেহেতু কোন পুলিশ সদস্যকেই ছাড় দিচ্ছি না সুতরাং নারায়ণগঞ্জের কোন চিহ্নিত সন্ত্রাসী আপনারা যাদের ছত্রছায়াই থাকেন না কেন তাদেরকেও ছাড় দেয়া হবে না বলে বলেছেন এস পি হারুন অর রশীদ।
১লা মার্চ শুক্রবার চাষাড়ায় অবস্থিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুলিশ মেমোরিয়াল ডে উপলক্ষে র্যালী শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
পুলিশের অভিযানে জনপ্রতিনিধি ও সাংবাদিকদের সমর্থন রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের অভিযানে কিন্তু এমপি শামীম ওসমানও সমর্থন দিয়েছেন। তিনিও বিভিন্ন স্থানে মাদক ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কথা বলছেন। আমি মনে করি, সব জনপ্রতিনিধিরাই আমাদের সমর্থন করছেন। সাংবাদিকরাও আমাদের সমর্থন করছেন।’
এস পি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জের মূল সমস্যা হচ্ছে মাদক। মাদকের বিরুদ্ধে জেলার প্রতিটি পুলিশ সদস্যদের নিয়ে অভিযান পরিচালনা করছি। মাদকের বিরুদ্ধে যেখানেই অভিযোগ পাচ্ছি সেখানেই যাচ্ছি। আমরা মাদকের কিছু কিছু গডফাদারদের ধরতে পারি নাই। কিন্তু মাদকসহ কিছু লোককে আমরা গ্রেফতার করেছি এবং আমাদের অভিযান প্রতিনিয়ত চলবে। এই মাদকের সাথে উচু স্তুরের কিছু কিছু মানুষ জড়িত। যার কারণে সঠিক প্রমাণ আমরা পাচ্ছি না। মাদক ব্যবসা যারা করে তাদের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অভিযোগ রয়েছে। তাদের সম্পর্কে আমাদের পুলিশ সদস্যরা খোঁজ খবর নিচ্ছে।’এসপি আরও বলেন আমরা ইতিমধ্যে ভুমিদস্যুদের বিরুদ্ধে খোজ খবর নিয়েছি। আগে যারা কথা বলার সাহস পেতো না তারাও আমাদের কাছে এসে অভিযোগ দিয়ে যাচ্ছে। আমরা অভিযোগ অনুযায়ী আমরা কাজ করছি।’
অপকর্মের সাথে কোন পুলিশ সদস্য জড়িত থাকলে তাদেরও ছাড় দেয়া হবে উল্লেখ করে জেলা পুলিশের এই উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, আমাদের পুলিশও মাদকের সাথে জড়িত আছে। আড়াইহাজার পুলিশের মধ্যে কিছু পুলিশ সদস্য জড়িত আছে। আমাদের কাছে অভিযোগ ও প্রমাণ আসলে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমরা অনেক পুলিশ সদস্যকে ওএসডি ও সাসপেন্ড করেছি। আমাদের কাছে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল। আপনারা দেখেছেন, আমরা বন্দর থানার ওসিকেও ক্লোজ করেছি। পুলিশের কোন সদস্য যেকোন অপরাধের সাথে জড়িত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নেবো।’
এসপি বলেন, এক সময় নারায়ণগঞ্জে ডিবির অপতৎপরতা ছিল, বিভিন্ন থানায় সিভিল টিমের অপতৎপরতা ছিল। আমরা ডিবির কার্যক্রম সীমিত করেছি, থানা থেকে সিভিল টিম বন্ধ করেছি।’তিনি আরও বলেন, কোন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মাদক সেবনের অভিযোগ পেলে তাকে ডোপ টেস্ট করাব এবং রক্তের মধ্যে কোন মাদকের উপস্থিতি পেলে প্রয়োজনীয় ও কঠোর ব্যবস্থা নেব।’
হারুন অর রশীদ বলেন, নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের মতো অনেক ঘটনা ঘটেছে। উদ্দেশ্য একটাই, নানা অপতৎপরতা। যারা ভুমিদস্যু, মাদক ব্যবসায়ীদের প্রশ্রয় দিচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি। হাতে নাতে প্রমাণ পেলে কারোর তদবির শুনব না, আইনের আওতায় নিয়ে আসব।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) মোহাম্মদ নূরে আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. ফারুক হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক’ সার্কেল) মো. ইমরান সিদ্দিকী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খ’ সার্কেল) মো. খোরশেদ আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ’ সার্কেল) মো. আনিচ উদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) সুবাস চন্দ্র সাহা, সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুল ইসলাম, ফতুল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ্ মো. মঞ্জুর কাদের, সিদ্দিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর শাহীন শাহ পারভেজ, বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।