সময়ের চিন্তা ডট কমঃ গুম, খুন, আতঙ্কের জেলা হিসেবে পরিচিতি পাওয়া একসময়কার প্রাচ্যের ডান্ডি খ্যাত শিল্প-বাণিজ্য সমৃদ্ধ নারায়ণগঞ্জ জেলাতে চাইলে ‘সুশাসন’ প্রতিষ্ঠাও যে সম্ভব, ঠিক যেন তেমনই একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করে দেখালেন আলোচিত প্রভাবশালী পুলিশ সুপার মো: হারুন অর রশীদ, পিপিএম, বিপিএম।
সদ্য নারায়ণগঞ্জে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সিটি কর্পোরেশন মেয়র ডা: সেলিনা হায়াত আইভীকে সহযোগিতা করতে জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদকে আহবান জানিয়েছিলেন নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের এমপি বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতিক।
পাশাপাশি গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৃতীয়বারের মত নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের এমপি নির্বাচিত হয়ে প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ আলহাজ¦ এ কে এম শামীম ওসমানও নারায়ণগঞ্জে সুশাসন প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছিলেন।
আর দুই মাস পূর্বে নারায়ণগঞ্জ জেলায় যোগদানের পর থেকেই নির্ভুল, দ¶ ও কার্যকরী শাসন ব্যবস্থা প্রচলনের মাধ্যমে প্রত্যাশিত সুশাসন প্রতিষ্ঠায় একজন আপোষহীন অগ্রদূত হিসেবে একের পর এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করে চলেছেন এসপি হারুন অর রশীদ।
জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতিবিদ, অপরাধী যত বড় প্রভাবশালী ব্যাক্তিই হউক না কেন, ঘোষণা অনুযায়ী কাউকেই ছাড় দিচ্ছেন না প্রভাবশালী এই এসপি। এমনকি পুলিশ সদস্যসহ কারো বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ততার অভিযোগ পাওয়া মাত্রই তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসছেন তিনি। যেন নারায়ণগঞ্জে সুশাসন প্রতিষ্ঠাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবেই নিয়েছেন আলোচিত এই পুলিশ সুপার।
কিন্তু কার্যত সুশাসন কি? আইনজ্ঞদের ভাষ্যমতে, ‘মানবাধিকার ও আইনের শাসনকে নিশ্চিত করে সুশাসন। অর্থাৎ যার অর্থ হলো, নির্ভুল, দ¶ ও কার্যকরী শাসন ব্যবস্থা।’
যা কিনা করতে ইতিমধ্যেই নারায়ণগঞ্জ জেলায় সক্ষম হয়েছেন, খারাপের আতংক হিসেবে আলোচিত পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ বলে মন্তব্য করেছেন সচেতন নাগরিক সমাজ।
তাদের অভিমত, জেলায় যোগদানের পূর্বে এসপি হারুনের সম্পর্কে মানুষের মনে ভ্রান্ত ধারনা জন্মালেও নারায়ণগঞ্জে যোগদানের পর থেকে অদ্যবধি নিজের কর্মদক্ষতায় ¯^ল্প সময়ের মধ্যেই আবার নারায়ণগঞ্জবাসীর মনিকোঠায় নিজের অবস্থান করে নিতে সক্ষমও হয়েছেন তিনি। বিগত সময়ে মাদক, সন্ত্রাস, ভূমিদস্যুতাসহ যেকোন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িত থেকে ক্ষমতাসীন দলের নেতা, জনপ্রতিনিধি কিংবা প্রভাবশালী ব্যাক্তিসহ কতিপয় পুলিশ সদস্যরা ছাড় পেলেও এক্ষেত্রে যে এসপি হারুন সত্যিই আপোষহীন তার একাধিক প্রমাণও দিয়েছেন তিনি।
বিশেষ করে, অপরাধমূলক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ততার অভিযোগে সাম্প্রতিক সময়ে ক্ষমতাসীন দলের একাধিক জনপ্রতিনিধিসহ প্রভাবশালী নেতাদের আইনের আওতায় আনার পাশাপাশি গত ১৮ ফেব্রæয়ারী দিবাগত রাতে স্থানীয় মসজিদ কমিটির হিসেব দেয়ানেয়াকে কেন্দ্র করে নগরীর নিতাইগঞ্জে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়িয়ে অপরাধমূলক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত হওয়ার অপরাধে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী দুই নেতা নাসিক ১৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মো: কবির হোসাইন এবং একই ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও মহানগর শ্রমিক লীগ সাধারন সম্পাদক কামরুল হাসান মুন্নাসহ সংঘর্ষে জড়িত উভয়পক্ষের ২২ জনকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে সুশাসন প্রতিষ্ঠার এক নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন এসপি হারুন অর রশীদ।
যার ফলে, গত ২ মার্চ নগরীর ২নং রেলগেট এলাকায় মহান ¯^াধীনতা দিব উপলক্ষ্যে নিজ উদ্যোগে আয়োজিত স্মরণকালের সর্ববৃহৎ জনসভাতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যকালে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মো: হারুন অর রশীদের কর্মকান্ডের প্রশংসায় গর্ববোধ করেন নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের আওয়ামীলীগের প্রভাবশালী এমপি শামীম ওসমান।
তিনি এসপি হারুনকে নিয়ে গর্ববোধ করে বলেন, ‘অল্প কয়েকদিনের মধ্যে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার মাদক, চাঁদবাজি, সন্ত্রাস নির্মূলে অনেক ভাল কাজ করেছেন। যার ফলে জেলা আইনশৃংখলা পরিস্থিতি আগের তুলনায় অনেক ভাল। আমাদের পুলিশ সুপারকে নিয়ে আমি প্রাউডফিল করি। হি ইজ এ ওয়ান অব দ্য বেষ্ট পুলিশ সুপার।’
আর অপরাধীদের ক্ষেত্রে এসপি হারুনের এমন কঠোর অবস্থান বিরাজমান থাকলে অচিরেই সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নারায়ণগঞ্জে সুশাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিশিষ্টজনেরা।