সোনারগাঁয়ে পাওনা টাকা চাওয়ায় দুই ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে জখম

453

তৌরব হোসেনঃসোনারগাঁয়ের বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের হাড়িয়া বৈদ্যেপাড়া এলাকায় পাওনা টাকা চাওয়ায় দুই জমি ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে জখম করেছে বলে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।
বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। আহত দুই ব্যবসায়ীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় আহত ব্যবসায়ীর ভাই কামাল পারভেজ বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
পুলিশ ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার হাড়িয়া বৈদ্যেপাড়া গ্রামের হাজী আব্দুল হারেছের ছেলে রোমান গত ৬ মাস আগে পার্শ্ববর্তী সাতভাইয়াপাড়া গ্রামের গাজী আমিনউদ্দিনের ছেলে গাজী হামিদুলকে জমি কেনার জন্য ৬৫ হাজার টাকা দেন। জমি কেনার পর ওই টাকা দিতে গড়িমসি করছে হামিদুল। বৃহস্পতিবার সকালে গাজী হামিদুল হাড়িয়া এলাকায় গেলে পুনরায় ওই টাকা ফেরত চান রোমান। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর দুপুরে গাজী হামিদুলের নেতৃত্বে মোক্তার, মাখন, জাহাঙ্গির, জাহিদুল, রাজিব, রনি, শ্যামল, সোহান ও নয়নসহ ১০-১২জনের একটি দল চাপাতি, লোহার রড, টেঁটা, বল্লমসহ দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ওই এলাকায় গিয়ে জমি ব্যবসায়ী রোমান ও আমিরের উপর হামলা করে।
এ সময় রোমান ও আমিরকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে জখম করে হামলাকারীরা। হামলার সময় ব্যবসায়ী রোমান চিৎকার দিলে এলাকাবাসী ছুটে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এলাকাবাসী আহতদের উদ্ধার করে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। এ ঘটনায় আহত ব্যবসায়ী রোমানের বড় ভাই কামাল পারভেজ বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
আহত ব্যবসায়ী রোমানের বড় ভাই কামাল পারভেজ জানান, একটি জমি কিনে আমার ভাইকে পার্টনার দেওয়ার কথা বলে আমার ভাইয়ের কাছ থেকে ৬৫ হাজার টাকা নিয়ে যায়। দীর্ঘ ৬ মাসে টাকা ফেরতও দেয়নি, জমিও দেয়নি। এ টাকা ফেরত চাওয়ার আমার ভাইসহ দুজনকে কুপিয়ে আহত করে।
অভিযুক্ত গাজী হামিদুলের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, আমি হাড়িয়া এলাকায় যাওয়ার পর আমাকে সহ ৪ জনকে পিটিয়ে আহত করেছে রোমানের লোকজন। আমি বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছি।
এব্যাপারে হাড়িয়া বৈদ্যপাড়ার মেম্বার আবুল হোসেন বলেন, আমি শুনেছি ঘটনাটি, এটা আমাদের জন্য অত্যান্ত দুঃখজনক ব্যপার। হামিদুল ও জাহাঙ্গীর গং চেয়ারম্যান রউফ সাহেবের অতিকাছের লোক। তারা এলাকায় বিভিন্ন সময়ে আরো অনেক ঘটনা ঘটিয়েছে। হামিদুল বাহীনিদারা দুইজন গুরুতর আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেল ভর্তি আছে শুনেছি। আমি তাদের দেখতে যাব।
এব্যাপারে হাড়িয়া বৈদ্যপাড়ার প্রাক্তন মেম্বার আমীর হোসেন বলেন, আমি শুনেছি ঘটনাটি, এটা আমাদের জন্য অত্যান্ত দুঃখজনক ব্যপার। হামিদুল ও জাহাঙ্গীর গং চেয়ারম্যান রউফ সাহেবের শেল্টারে চলে, তারা খাস চেয়ারম্যানের লোক তাই তাদের এত দাপট। তার অনেক অনৈতিক কাজ করছে বলেও জানা যায়।তাদের আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত বিচার করা প্রয়োজন বলে মনে করি।
বৈদ্যের বাজার ইউপির স্বেচ্ছাসেবক্লীগের সভাপতি ফারুক হোসেন বলেন, এই হামিদুল গং সন্ত্রাসীরা টাকার জন্য সব কিছু করে যাচ্ছে । হামিদুল তপন হত্যার অন্যতম আসামী এবং সক্রিয় চাদাবাজ। এই চাদাবাজ ও স্নত্রাসী হামিদুলকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবী জানাছি।
গ্রামের অন্যান্যরা নাম প্রকাশে অনুচ্ছুক জানান, হামিদুল গংদের চেয়ারম্যান আঃ রউফ তার নিজের স্বার্থের জন্য কেডার হিসেবে ব্যবহার করেন।বৈদ্যের বাজার ইউপিতে কয়েকটি কোম্পানী সরকারি খাস জমি ,নদী ও খাল দখল করে ঘড়ে উঠেছে বলে জানান। এই কোম্পানী থেকে নিয়মিত মাসোহারা নিতে চেয়ারম্যান হামিদুল গংদের ব্যবহার করছে বলে জানা যায়।
এব্যপারে চেয়ারম্যান আঃ রউফ সাহেবকে মোবাইলে কল করলে তিনি ধরেন নি।
এ ব্যপারে এম পি খোকা সাহেবকে কল করলে তিনিও মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি।
সোনারগাঁ থানার ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, হামলা ঘটনায় অভিযোগ পেয়ে তদন্তে পাঠিয়েছি। তদন্তে দোষী প্রমানিত হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।