আইভীর বিরুদ্ধে শামীম ওসমান অনুসারীদের স্মারকলিপি

507

নিজস্ব প্রতিনিধিঃনারায়ণগঞ্জে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন এমন অভিযোগ এনে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।
সোমবার (১৯ মার্চ) সকাল ১১টায় জেলা প্রশাসক রাব্বি মিয়ার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর এ স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। স্মারকলিপিতে ‘নারায়ণগঞ্জের সচেতন নাগরিক সমাজ’ এর ব্যানারে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ একেএম শামীম ওসমান অনুসারী বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক, সামাজিক, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
স্মারকলিপি প্রদান শেষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে প্রেস ব্রিফিং করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি হাসান ফেরদৌস জুয়েল।
প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, সম্প্রতি বেশ কয়েকটি সমাবেশে নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী নারায়ণগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ‘ওসমান পরিবার’কে নিয়ে নানা কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন। নারায়ণগঞ্জের সকল হত্যাকান্ডের সাথে ওসমান পরিবারের সম্পৃক্ততা রয়েছে উল্লেখ করে ‘ওসমান পরিবার’কে খুনি পরিবার বলেও আখ্যা দিয়েছেন তিনি। আমরা নারায়ণগঞ্জের নাগরিক সমাজ এর তীব্র নিন্দা জানাই। তাছাড়া মেয়র আরো বলেছেন, সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি ও তনু হত্যার কেন বিচার হচ্ছে সেটা তিনি জানেন। এসব বক্তব্য দিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী ও তার সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করছেন। মেয়র আইভী সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি ও তনু হত্যার বিচার কেন হচ্ছে না সেটা যদি জেনে থাকেন তাহলে তা যেন দেশবাসীকে জানান। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি, মেয়রের এই বক্তব্যের কারণ এবং তিনি কি জানেন সেটা জানার জন্য তাকে যেন জিজ্ঞাসাবাদের আওতায় আনা হয়।
স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত থাকা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ মো. বাদল বলেন, স্মারকলিপিতে একটা বিষয় এসেছে সেটা হচ্ছে, ওসমান পরিবারকে খুনি পরিবার বলা যাবে না। তীব্রভাবে নারায়ণগঞ্জবাসী এর প্রতিবাদ জানিয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল বলেন, ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ ও ৭৫ পরবর্তী সময়ে যে ওসমান পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে সেই পরিবারের মান সম্মান ক্ষুন্ন করার জন্য একটি ষড়যন্ত্রকারী মহল প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে। কোন ঘটনা ঘটলেই এই পরিবারকে দোষারোপ করে। এই বিষয়টি আমাদেরকে লজ্জিত ও দুঃখিত করে। তাই আমরা নারায়ণগঞ্জের সচেতন নাগরিক হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করে স্মারকলিপি জমা দিয়েছি।
এদিকে স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে, মেয়র আইভীর সাথে জামায়াতের কানেকশন রয়েছে। সম্প্রতি মেয়রের দেয়া বক্তব্যের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।
তবে এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি নাসিক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী। তিনি প্রতিবেদককে বলেন, আমি এ বিষয়ে এখনই কোন প্রতিক্রিয়া জানাতে চাচ্ছি না। আগে আমি বিষয়টা ঠিকমতো জানি, স্মারকলিপিটা পড়ি তারপর মন্তব্য করবো।
স্মারকলিপি প্রদানের সময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত শহীদ মো. বাদল, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. খোকন সাহা, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফুল্লাহ বাদল, সাধারণ সম্পাদক এম শওকত আলী, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন মিয়া, সোনারগাঁ থানা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শামসুল ইসলাম ভ‚ইয়া, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শাহ্ নিজাম, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, মহানগর যুবলীগের সভাপতি শাহাদাত হোসেন সাজনু, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রফেসর শিরিন বেগম, মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইসরাত জাহান স্মৃতি, নাসিক প্যানেল মেয়র-২ মতিউর রহমান মতি, নাসিক ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নাজমুল আলম সজল, নাসিক ১৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শফিউদ্দিন প্রধান, নাসিক ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দুল করিম বাবু, নাসিক ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাইফুদ্দিন আহমেদ দুলাল, জেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম চেঙ্গিস, মহানগর কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান লিটন, বাংলাদেশ মেডিক্যাল এসোসিয়েশন (বিএমএ) সাধারণ সম্পাদক ডা. দেবাশীষ সাহা, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি হাসান ফেরদৌস জুয়েল, সাধারণ সম্পাদক মোহসিন মিয়া, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মো. জুয়েল হোসেন, সাবেক জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাফায়েত আলম সানি, জেলা ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি আজিজুর রহমান আজিজ, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম রাফেল, মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ, সাধারণ সম্পাদক হাসনাত রহমান বিন্দু প্রমুখ।