বিশেষ প্রতিবেদক: নিজেকে দেউলিয়া ঘোষনা করে সরকারি ব্য্ংাকের হাজার কোটি টাকা মেরে দিচ্ছে ব্যবসায়িরা, আর সরকারি কোয়ার্টারের জায়গা ভাড়া দিয়ে কোটি-কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সরকারি কর্মচারিরা। তবে ব্যাংকের টাকা মারার জন্য যেমন সহযোগীতা করে অসাধু উচ্চপদস্ত কর্মকর্তাগণ, ঠিক তেমনি সরকারি জায়গা ভাড়া দিয়ে কোটি-কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার জন্য হয়তো সরকারি কর্মচারিদের সহযোগীতা করেন দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাগণ। তানা হলে সামান্য একজন সরকারি মুদ্রাক্ষরিক কিভাবে প্রায় কুড়ি বছর যাবত অনুনমোদিত ওয়াকফ্ এবং সরকারের অনুমতি ছাড়া মসজিদের নামে পিডব্লিউডি’র জায়গায় মার্কেট এবং বাড়ি নির্মান করে কোটি-কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে! সাধারন মানুষ জানতে চায় “তাদের খুটির জোড় কোথায়”। সরকারি কোয়ার্টারগুলোতে এমন অনেক অভিযোগ থাকলেও আজকের প্রতিবেদন সরকারি কর্মচারিদের বসবাস খিলগাওঁ গভ. স্টাফ কোয়ার্টার-এ সরকারের কোন অনুমোদন ছাড়াই নির্মিত মসজিদ কমিটির সাধারন সম্পাদক সুলতান আহমেদ এর বিরুদ্ধে।
সুলতান আহমেদ’র বসবাস খিলগাঁও পুলিশ ফাঁড়ির পাশে বিশ্বরোড সংলগ্ন খিলগাঁও গভ. স্টাফ কোয়ার্টার “ছায়া’ বিল্ডিং এর ডি/২য় তলায়। যদিও তার পাশেই খিলগাঁও আবাসিক এলাকায় রয়েছে কোটি টাকা মুল্যের আলিসান ফ্ল্যাট (৫৩৮/সি, খিলগাঁও, ঢাকা)। এছাড়াও রয়েছে নামে বেনামে কোটি টাকার সম্পদ। আজকে জানাব গনপূর্ত বিভাগের ৩য় শ্রেনিতে কর্মরত মুদ্রাক্ষরিক “কার ক্ষমতায় গনপূর্তের জায়গা ভাড়া দিয়ে কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে টাইপিষ্ট” এর ১ম পর্ব।
গত কয়েক মাস যাবৎ বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকায় দেখা যায়, “কমিটির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অর্থ আত্নসাতের নানা অভিযোগ”/ “সরকারি কলোনিতে মসজিদ ঘিরে রমরমা মার্কেট বানিজ্য”/ ইমাম-মোয়াজ্জিনের বাসায় অবৈধ গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানির সংযোগ”/ “রাজধানিতে মসজিদের অন্তরালে অর্থ আতœসাতের মহোৎসব। নজরে আসে ওকে নিউজ টুয়েন্টিফোর বিডি ডট কম এর। দীর্ঘ প্রায় মাস খানেক দরে বিষয়টা নিয়ে সময় দেয় আমাদের “বিশেষ প্রতিবেদক”, স্টাফ রিপোর্টার এবং “অনুসন্ধানী সাংবাদিকগণ”। বের করে নিয়ে আসেন গুরুত্বপূর্ন এবং অভাক হবার মতো যতসব তথ্য। ভিন্ন ধর্মের সাংবাদিকরাও আশ্চর্য্য হয় দুনিয়ার সবচাইতে পবিত্র ঘর মসজিদ-কে পুঁজি করে, সরকারের আইনকে অবমামনা করে কোন অনুমোদন ছাড়াই “মসজিদ”, মার্কেট, ইমাম’র বাড়ি, মোয়াজ্জেন’র বাড়ি, কলোনিবাসির চলাচলের পথ, ছেলে-মেয়েদের খেল-াধুলার মাঠ এবং বিনা রশিদে মসজিদের অনুদান নিয়ে মসজিদ কমিটির কিছু সংখ্যক কর্মকর্তার সহযোগীতায় কোটি-কোটি টাকার মালিকসহ গড ফাদার সেজে গেছেন এক সময়ের বিএনপি’র সক্রিয় কর্মী, গণপূর্ত বিভাগের মুদ্রাক্ষরিক সুলতান আহমেদ।
ওকে নিউজ টুয়েন্টিফোর বিডি ডট কম এর অনুসন্ধানি দল সত্যতা যাচাই এর জন্য এবং সরকারি জায়গা ব্যবহারের অনুমোদন সংক্রান্ত কর্তৃক্ষ এবং সুবিধা-অসুবিধাভূগীদের সাথে যোগাযোগ করতে চেষ্টা করেন, যেমন- খিলগাঁও গভ. স্টাফ কোয়ার্টারের বাসিন্দা, গৃহায়ন ও গনপুর্ত, খিলগাঁও গভ. স্টাফ কোয়ার্টারের ওয়েলফেয়ার এ্যসোশিয়েমন, বর্তমান মসজিদ কমিটির সাধারন সদস্য, সরকারি আবাসন কর্তৃপক্ষ, স্থাপত্য অধিদপ্তর, দুর্নীতি দমন কমিশন, তিতাস গ্যাস, ডিপিডিসি(বিদ্যুৎ), উল্লেখিত ব্যক্তির বিরেুদ্ধে অভিযোগের গনপুর্তের ইনকোয়ারি প্রধান, মসজিদের বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি, সভাপতি এবং অভিযুক্ত সাধারন সম্পাদকের সাথে। তবে আজ উপস্থাপন করছি শুধুমাত্র গনপুর্তের কর্মকর্তাদের মন্তব্য-
অনুসন্ধানি দল তাদের মধ্যে গনপুর্তের এরিয়ার দায়িত্বে থাকা অফিসিয়্যাল ডিভিশন-৪ এর এক্সিয়েন স্বর্নেন্দু শেখর মন্ডল এর সাথে ১৭/০৩/২০১৯ এবং ২০/০৩/২০১৯ ইং তারিখে বার-বার ফোনে চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নাই। আশা করছি পরবর্তি পর্বে আবারো চেষ্টা করা হবে যদি সম্ভব হয় তাহলে পাঠকদের জন্য অবশ্যই উপস্থাপন করব।
গনপুর্তের এরিয়ার দায়িত্বে থাকা অফিসিয়্যাল সাবডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার রেজা তৈমুর মালিক এর সাথে ১৭/০৩/২০১৯ ইং তারিখে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, খিলগাও গভ. স্টাফ কোয়ার্টার এর মসজিদ কমিটির সাধারন সম্পাদকের বিরুদ্ধে একটা অভিযোগ আছে এবং তদন্তের জন্য এসডি হাসিনুর রহমানকে প্রধান করে ৪ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি করে দিয়েছেন ডিভিশন-৪ এর এক্সিয়েন স্বর্নেন্দু শেখর মন্ডল। তার রিপোর্ট সম্ববত এখনো দেননি। তিনি বলেন, একবার মনে হয় তদন্তও করেছেন হাসিনুর রহমান (এসডি)। অনেক দিন হয়ে গেছে এখনো তদন্ত রিপোর্ট দিচ্ছেন না কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, যেহেতু আমি সেই তদন্ত কমিটির মধ্যে নেই তাই আমি অন্য কোন মন্তব্য করতে চাইনা।
গনপুর্তের এরিয়ার দায়িত্বে থাকা ওয়ার্ক সহকারী (ফিল্ড)-ফারুক হোসেন এর সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি এই জায়গার দায়িত্বে আছি সম্ভবত পাঁচ বছর হবে, আর অনেক আগে থেকেই এই মসজিদটি করেছেন, কিন্তু আমি যে টুকু জানি এই মসজিদের সাথে সংস্লিষ্ট কোন কিছুরই সরকারি কোন অনুমোদন নেই। আর মার্কেটের দোকানগুলো এবং ইমাম সাহেবের বাড়ি আমি আসার আগেই করেছে, আর মোয়াজ্জেনের বাড়ি করেছে কিছু দিন আগে। এই বিষয়ে আপনার করনিয় জানতে চাইলে ফারুক হোসেন জানান, আমি কমিটিকে না করেছি তারা কোন গুরুত্বই দেননি, পরে আমি মৌখিকভাবে অফিসে জানিয়েছি উর্দ্দতন স্যারদের, তারাও কোন পদক্ষেপ নেননি, আমার আর কি বলার বা করার আছে বলেন? প্রশ্ন রাখেন প্রতিবেদককে। মার্কেট এবং মসজিদের আয় ব্যায়ের হিসাবের কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কমিটির সভাপতি-সাধারন সম্পাদক কারো কাছে কোন হিসাব দেননা, যেভাবে পারে টাকা মেরে খাচ্ছেন, কারো কোন কিছু বলা-কয়ার নেই। কমিটির ব্যাপারে জানতে চাইলে ফারুক বলেন, সাধারন সম্পাদক তারমতো করে কমিটি করে নেন, তার পক্ষে কথা বলবে এমন লোকদেরই কমিটির সদস্য করেন।
তবে মসজিদ কমিটির বর্তমান সভাপতি মাতলেবুর রহমানকে ফোন করলে তিনি বলেন, কয়েক দিন আগে ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন এর একটি নির্বাচন হয়েছে, সেই নির্বাচনে যারা হেরেছে তারা এই সকল কুৎসা রটে বেড়াচ্ছেন। সভাপতি প্রতিবেদককে সরজমিনে দেখা করার জন্য আমন্ত্রন জানান। তিনি আরো বলেন, আমাদের সব হিসাব ঠিক আছে। কিন্তু প্রতিবেদনে আগেই উল্লেখিত ওকে নিউজের প্রতিবেদকরা সংশিষ্ট বিভাগে কথা বলেন এবং অনিয়মের প্রমানও পেয়েছেন।
পরবর্তি পর্বে জানতে পারবেন প্রজ্ঞাপনে সরকারী কলোনী এলাকায় মসজিদ, মাদ্রাসা ও স্কুলের জমি বরাদ্দের নিয়মাবলি এবং কলোনীবাসির মতামত / ওয়েল ফেয়ার এ্যসোসিয়েশনের মতামত / মসজিদ কমিটির সদস্যদের মতামত / আবাসন কর্তৃপক্ষের মতামত / স্থাপত্য অধিদপ্তরের মতামত / দুর্নীতি দমনের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মতামত / তিতাস গ্যাস আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষের মতামত / ডিপিডিসি(বিদ্যুৎ) এর আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষের মতামত অথবা মসজিদ কমিটি প্রধানদের মতামত নিয়ে প্রতিবেদন। —-সুত্র ওকে নিউজ ২৪বিডি