নিজস্ব প্রতিনিধিঃ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে উপজেলা নির্বাচনে নৌকা প্রতিকে ভোট দেয়ায় বারদী ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি বাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে মারধর করে লুটপাট করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত রোববার রাতে উপজেলার বারদী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মান্দারপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সন্ত্রাসীরা রামদা, ছুরি, দেশীয় তৈরী পিস্তল, ককটেল ও বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র নিয়ে নৌকার সমর্থক জয়নাল আবেদীন, ডাঃ মোঃ
বোরহান উদ্দিন, হাজী আবুল হোসেন, হাজী আব্দুস সালাম, নুরুদ্দিন, আরাফাত আলী, বিল্লাল, শরীফ, মাইনুদ্দিনের বাড়িঘরসহ ১৫টি বাড়ী-ঘর ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়ে ২০জনকে আহত করে। এসময় তারা নুরুদ্দিন নামে একজনকে কুপিয়ে মারাত্মক জখম করে। তাকে উদ্ধার করে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থা আশংকাজনক বলে জানিয়েছে চিকিৎসকরা। এ ঘটনায় সোনারগাঁ থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
স্থানীয় এলাকাবাসীসূত্রে জানা গেছে, সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে গত রোববার আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী মোঃ মোশারফ হোসেন বিপুল ভোটে বিজয়ী হলে এবং নৌকা প্রতিকে ভোট দেয়ায় উপজেলার বারদী ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের মান্দারপাড়া গ্রামের স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহফুজুর রহমান কালামের ঘোড়া প্রতিকের সমর্থক হাবিবুর রহমান হাবু মেম্বার ওরফে হাবু ডাকাতের নের্তৃত্বে সন্ত্রাসী জাকির, ফালান, ফারুক, রহিম, ডালিম ও মোতালিবসহ ১০/১৫ জন সন্ত্রাসী প্রথমে ককটেল ফাঁটিয়ে এলাকায় আতংক সৃষ্টি করে। পরে সন্ত্রাসীরা দেশীয় তৈরী রামদা, ছুরি, পিস্তল ও বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র নিয়ে নৌকার সমর্থক একই গ্রামের জয়নাল আবেদীন, ডাঃ মোঃ বোরহান উদ্দিন, হাজী আবুল হোসেন, আরাফাত আলী, বিল্লাল, শরীফ, মাইনুদ্দিন ও নুরুদ্দিনের বাড়িঘরসহ ১৫টি বাড়ী-ঘর ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়ে ২০জনকে আহত করে। এসময় হামলাকারীদের বাঁধা দিতে গেলে নারী-পুরুষসহ ২০ জনকে পিটিয়ে মারাত্মক আহত করে। সন্ত্রাসীরা রিক্সাচালক নুরুদ্দিনকে পথিমধ্যে একা পেয়ে এলোপাথারী কুপিয়ে তার হাতে ও পাঁয়ে ছুরিকাঘাত করে মারাত্বক জখম করে। সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত নুরুদ্দিনের ডাক-চিৎকার শুনে তার স্বজনরা দ্রæত এগিয়ে এসে উদ্ধার করে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিয়ে ভর্তি করে। তার অবস্থা আশংকাজনক বলে জানিয়েছে চিকিৎসকরা।
সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত ডাঃ মোঃ বোরহান উদ্দিন, হাজী আবুল হোসেন জানান, বহু বছর ধরে আমরা সবাই আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। গত রোববার সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আমরা সকলে মিলে সারাদিন ভোট কেন্দ্রে ছিলাম। সন্ধ্যায় নৌকার প্রার্থী বিজয়ী হলে ৪নং ওয়ার্ডের সন্ত্রাসী হাবিবুর রহমান হাবু মেম্বার ওরফে হাবু ডাকাত আমাদের সকলের অনুপস্থিতিতে আমাদের বাড়ীঘরে প্রবেশ করে প্রথমে ককটেল ফাটিয়ে হামলা চালায়। ভোট কেন্দ্র থেকে সন্ধ্যায় পাশের বাড়ীর রিক্সাচালক নুরুদ্দিন বাড়ীতে ফেরার সময় পথিমধ্যে সন্ত্রাসীরা তার উপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে, ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে। এছাড়াও সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে আমাদের সকলের বাড়ীঘর ভাংচুর করে লুটপাট চালায় এবং নারী-পুরুষসহ বেশ কয়েকজনকে আহত করে।
তারা আরও জানান, সন্ত্রাসী হাবু মেম্বার ওরফে হাবু ডাকাত দীর্ঘদিন যাবত এলাকায় তার সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে আসছে। সেসহ তার লোকজন বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন অপরাধ ও অপকর্মের সাথে জড়িত এবং কয়েকটি মামলার আসামীও তারা। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী। উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সে আমাদেরকে দীর্ঘদিন যাবত ঘোড়া প্রতিকে ভোট দেয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে আসছিল। এলাকাবাসীর সকলেই সন্ত্রাসী হাবু মেম্বার ওরফে হাবু ডাকাতের এই সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিচার চান এবং প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এব্যাপারে অভিযুক্ত হাবিবুর রহমান হাবু মেম্বারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি এ ঘটনার সাথে জড়িত নই। তবে আমার কর্মীরা এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকতে পারে।