মধ্যরাতে বান্ধবী নিয়ে মদ্য পান, ২ জন আটক

390

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ মধ্যরাতে বান্ধবী নিয়ে মদ্য পান, দুজনকে পুলিশ আটক করে এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওয়াজেদ আলী খোকনের ছেলেকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার (১ এপ্রিল) দিবাগত রাতে চাষাড়া বালুরমাঠ নিজ বাস ভবন হতে সদর থানা পুলিশ এসে তাকে উদ্ধার করে এবং ঐ সময় দুজনকে পুলিশ আটক করেন। আহত পিপির ছেলে আকিব সাদাত (২০) কে চিকিৎসার জন্য নারায়ণগঞ্জ ৩শ শয্যা হাসপাতালে নেয়া হয়।আটককৃত দুই জনের একজন আকিবের বন্ধু ইয়ামিন (২০)। সে নগরীর খানপুর এলাকার জাহাঙ্গীর কবির পোকনের ছেলে। অপর জন তাদের বান্ধবী সায়মা (২০)। সে বালুমাঠ এলাকার বিশিষ্ট সূতা ব্যবসায়ী বাদশার ছোট ভাই আবদুর রব এর মেয়ে।

আটককৃত ইয়ামিনের ভাষ্যমতে জানা যায়, পিপি ওয়াজেদ আলী খোকনের নিজ বাস ভবন বালুর মাঠ এলাকায়। যে বাসার চতুর্থ তলার ফ্ল্যাটে আকিব, বন্ধু ইয়ামিন ও বান্ধবী সায়মা প্রায় মদ পান করে। ঘটনার দিনও তারা মদ পান করে। মদ পানের এক পর্যায়ে আকিবের হাত কেটে গেলে অনাকাঙ্খিত ঘটনার সৃষ্টি হয়।

অপরদিকে এলাকাবাসী জানান, পিপির বাড়ির চতুর্থ তলার ফ্ল্যাটে তুমুল হট্টগোলের শব্দ পেয়ে স্থানীয়রা ওয়াজেদ আলী খোকনকে অবহিত করে। এমন হট্টগোলের নেপথ্যে কি ঘটছে তা জানতে ওয়াজেদ আলী খোকন চতুর্থ তলায় ছুটে যান। অনেক চেষ্টা করেও দরজা খুলতে ব্যর্থ হয়ে সদর থানা পুলিশকে খবর দেয়া হয়। পুলিশ দীর্ঘ চেষ্টার পর ফ্ল্যাটের ভিতর থেকে আকিব সাদত, বন্ধু ইয়ামিন ও তাদের বান্ধবী সায়মাকে উদ্ধার করে। তবে, এসময় পিপি ওয়াজেদ আলী খোকন তার পুত্রকে খানপুর ৩শ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যায়।

অন্যদিকে, অপর দুজনকে পুলিশ থানায় নিয়ে যায়।খবর পেয়ে সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, জেলা আওয়ামীলীগ নেতা ও নারায়ণগঞ্জ জেলা ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি চন্দন শীলসহ অনেকেই হাসপাতালে ছুটে আসে। হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার ডা. জাহাঙ্গির আলমও মধ্যরাতে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে এসে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যান মদ্যপানে অসুস্থ্য আকিব সাদাতকে।
হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক সারোয়ার হোসেন বলেন, আকিব সাদত গুরুতর আহত নন। তার হাত সামান্য কেঁটে গেছে। ধারণা করা হচ্ছে মদ পানের পর কোন কাঁচ জাতীয় কিছুতে আঘাত পেয়েছে। কোন সেলাই করতে হয়নি । সামন্য ড্রেসিং করে দেয়া হয়েছে।
এদিকে সদর থানায় আটক করে নিয়ে আসা ইয়ামিন পুলিশকে হুমকি দিয়ে বলে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ আমাদের কিছুই করতে পারবে না। এ ছাড়াও অকথ্য ভাষায় পুলিশকে উদ্দেশ্য করে গালিগালাজের অভিযোগও পাওয়া গেছে।সদর থানার দায়িত্বরত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমানের নির্দেশে মদ্যপান করা ইয়ামিনকে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে নিয়ে যাওয়া হয়।
সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক গোলাম মোস্তফা ইমনের কাছে ইয়ামিন স্বীকার করে, সে ও আকিব এবং সায়মা বিদেশী মদের সাথে কোক মিশিয়ে পান করেছে। এসময় ইয়ামিন অপকপটেই জানায়, তারা প্রায় দিন ওয়াজেদ আলী খোকনের বাড়ীতে মদ্যপানের আসরে মিলিত হয়।ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশের কয়েকজন সদস্য জানান, মদ ও নারী কেলেংকারীর ঘটনায় পিপির বাড়িতে এমন লংকাকান্ড দেখে আমরা হতবাক। যে দৃশ্য আমরা দেখেছি তা ভাষায় প্রকাশ করাও যায় না।
ঘটনার বিষয়ে উপ পরিদর্শক সাব্বির খান বলেন, মধ্যরাতে পিপি ওয়াজেদ আলী খোকন আটককৃতদের ছাড়াতে এসেছিলেন। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্মকর্তা সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানিয়ে দেয়ায় তিনি ফিরে গেছেন।এব্যাপারে পিপি ওয়াজে আলী খোকন বলেন, আমি বিস্তরিত কিছু জানি না। আমার ছেলে সুস্থ্য হলে সব জানতে পারবো।নারায়ণগঞ্জ সদর থানার দায়িত্বরত ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর। তাই যাচাই বাছাই করে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে আমাদের কিছু সময় লাগবে। আমরা দুই জনকে আটক করেছি।
এদিকে মাদক সেবনের অপরাধে আটক ইয়ামিন ও সায়মার বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ঐ দুই জনকেই আদালতে পাঠিয়েছে নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশ।