সোনারগাঁয়ে আমান গ্রুপের নির্মাণাধীন ফুড এন্ড বেভারেজ কোম্পানির অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, দুই কর্মকর্তা আটক

519

স্টাফ রিপোর্টারঃ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের হাড়িয়া এলাকায় মেঘনা নদী ভরাট করে গড়ে তোলা আব্দুল আমান গ্রæপের নির্মাণাধীন ফুড এন্ড বেভারেজ কোম্পানির অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে বিআইডব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দর কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার সকালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে এবং নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরের যুগ্ম-পরিচালক গুলজার আলীর তত্ত¡াবধানে মেঘনা নদীতে চতুর্থ দিনের মতো উচ্ছেদ অভিযান চালায় সংস্থাটির ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এ সময় আমান গ্রæপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান আমান ইকোনোমিক জোনের নির্মাণাধীন ওই শিল্প কারখানার নামে নদী দখল করে ১শ’ ফুট প্রশস্ত ও ছয় হাজার বর্গফুট দৈর্ঘ্যরে জায়গা দখলমুক্ত করতে ভেকো দিয়ে খনন কাজ শুরু করা হয়। একই সাথে নদী ভরাটের কাজে ব্যবহৃত বিপুল পরিমাণ বালু নিলামে তুলে ৯৬ লক্ষ ২৬ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেয়া হয়। এর পাশাপাশি নদীর তীরে আমান গ্রæপের বাঁশের বেড়ার সীমানাও ভেঙ্গে ফেলে বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ। তবে নদী ভরাট ও দখলের অভিযোগে আমান গ্রুপের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার নাদিরুজ্জামান ও নির্বাহী পরিচালক (কর্পোরেট এ্যাফেয়ার্স) রবিউল হককে আটক করে বিআইডব্লিউটিএ’র ভ্রাম্যমাণ আদালত।
উচ্ছেদ অভিযানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিআইডব্লিউটিএ’র নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরের উপ-পরিচালক মো. শহীদুল্লাহসহ টেকনিক্যাল বিভাগের কর্মকর্তারা।
বিআইডব্লিউটিএ’র নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের যুগ্ম-পরিচালক জানান, নদী দপ্তরের অনুমোদন থাকলেও এই শিল্প প্রতিষ্ঠানটি সরকারি আদেশ ভঙ্গ করে নদীর নির্ধারিত জায়গা দখল করে পাকা স্থাপনা নির্মাণসহ নদীর বিরাট অংশ ভরাট করে ফেলেছে। তাই তাদের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, নদী দখল করে স্থাপনা নির্মাণকারী বসুন্ধরা গ্রুপ, মেঘনা, ফ্রেশ গ্রুপসহ আরও বেশ কয়েকটি শিল্প প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানো হবে। গত শুক্রবার নদী কমিশনের চেয়ারম্যান বিআইডব্লিউটিএ’র নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দরের কর্মকর্তাদের নিয়ে সরেজমিনে মেঘনা নদী পরিদর্শন করে মেঘনা গ্রুপ, বসুন্ধরা গ্রুপ, আমান ইকোনোমিক জোন, ইউনিক গ্রুপ, আল মোস্তফা গ্রুপের পলিমার ইন্ডাষ্ট্রিজসহ বেশ কিছু শিল্প প্রতিষ্ঠানে নদী দখলের প্রমাণ পেয়েছেন। তারই আলোকে এ অভিযান চালানো হচ্ছে।
বিআইডব্লিউটিএ’র নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোস্তাফিজুর রহমান জানান, নদীর নির্ধারিত সীমানার অভ্যন্তরে যেসব শিল্প প্রতিষ্ঠান অবৈধভাবে নদী দখল করেছে, উচ্চ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। মেঘনা নদীতে আরও দুই দিন অভিযান চালিয়ে ছয়দিন ব্যাপী এই উচ্ছেদ অভিযান সমাপ্ত করা হবে।

এর আগে বুধবার বৈদ্যেরবাজার এলাকায় নদী দখল করে জাহাজ নির্মাণ শিল্প সম্প্রসারণ করায় ইউনিক গ্রুপের প্রায় ৭ লক্ষ বর্গফুট ভরাট বালু জব্দ করে নিলামে তুলে ২৯ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছে সংস্থাটির ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এছাড়াও মেঘনা নদী দখল করে গড়ে তোলা আব্দুল মোনায়েম গ্রুপের সুগার রিফাইন মিলের ৫শ’ ফুট সীমানা প্রাচীর গুঁড়িয়ে দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ নারায়ণগঞ্জ নদী বন্দর কর্তৃপক্ষ।
এসময় একই সাথে বৈদ্যেরবাজার এলাকায় নদী দখল করে জাহাজ নির্মাণ শিল্প সম্প্রসারণ করায় ইউনিক গ্রুপের প্রায় ৭ লাখ বর্গফুট ভরাট বালু জব্দ করে নিলামে তুলে ২৯ লাখ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছে সংস্থাটির ভ্রাম্যমাণ আদালত। পরে ভরাটকৃত জায়গা ভেকু দিয়ে খনন করে নদী দখলমুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়।