রূপগঞ্জে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে এবার বিড়ি শ্রমিককে জবাই করে হত্যা

456

রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে দিনে-দুপুরে নুর বানু (৬০) নামে এক বিড়ি শ্রমিককে কড়াত দিয়ে জবাই করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। রোববার দুপুরে উপজেলার গর্ন্ধবপুর তালতলা এলাকায় ঘটে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা। নিহত নুর বানুর পরিবারের দাবি, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরেই প্রতিপক্ষের লোকজন এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে। এ ঘটনায় সন্দেহজনক ভাবে পাঁচ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত নুর বানু গন্ধর্বপুর এলাকার মৃত আব্দুল রাজ্জাকের স্ত্রী। নুর বানুর এক ছেলে চার মেয়ে রয়েছে।
আটকরা হলো, সিরাজগঞ্জ জেলার সাহাজাতপুর থানার বুরজুবালা এলাকার বাবু পরামানিকের ছেলে আব্দুল বারেক, নাবাবিলা এলাকার আব্দুল জলিলের ছেলে আল-মামুন, ফজর আলীর ছেলে হোসেন আলী, রূপগঞ্জ উপজেলার গন্ধর্বপুর তালতলা এলাকার নুরু মিয়ার ছেলে জাহাঙ্গীর ও আহসান উল্লাহর ছেলে আলামিন।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান জানান, গর্ন্ধবপুর এলাকার নিজ বাড়ির একটি পরিত্যক্ত ঘরে বিড়ি শ্রমিক নুর বানুর গলাকাটা লাশ পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হত্যাকান্ডের বিষয়টি নিশ্চিত হন। দুপুরের দিকে দুর্বৃত্তরা কড়াত দিয়ে নুর বানুর গলা কেটে হত্যা করেছে বলে প্রাথমিক ভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। সন্দেহজনক ভাবে পাঁচ জনকে আটক করা হয়েছে। হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করে হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে বলেও জানান ওসি।
প্রতিবেশী এলাছুন বিবি জানান, নুর বানুর বাড়িটি চারদিক পাঁকা দেয়াল দেয়া। একটি লোহার গেইট রয়েছে। বাসা ভাড়া দিয়ে ও বিড়ি বানিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন তিনি। এলাছুন বিবি ও নুর বানু দুই জনই পান খায়। দুপুর ১২টার দিকে নুর বানু এলাছুন বিবিকে পান আনতে দোকানে পাঠায়। এলাছুন বিবি দোকান থেকে পান নিয়ে এসে দেখতে পান বাড়ির লোহার গেইটটি ভেতর থেকে আটকানো। পরে পার্শবতী বাড়ির তৈয়বা নামের এক শিশুকে দেয়াল টপকিয়ে গেইটটি খুলে দিতে বললে গেইটটি খুলে দেয়। পরে ওই বাড়ির একটি পরিত্যক্ত ঘরে গিয়ে নুর বানুর জবাই করার লাশ পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার শুরু করে।
নিহত নুর বানুর ছেলে ইলিয়াছ মিয়া জানান, তিনি এক শিক্ষক। মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে বাড়িতে যান। হত্যাকান্ডের সময়ে বাড়িতে ছিলো আটকৃত ভাড়াটিয়া আব্দুল বারেক, আল-মামুন ও হোসেন আলী। তাদের সম্পৃক্ততা থাকতে পারে। এছাড়া আটকৃত জাহাঙ্গীরদের সাথে তার মা নুর বানুর এক শতাংশ জমি নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছিলো। ওই বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের লোকজন তার মা নুর বানুকে জবাই করে হত্যা করেছে বলে দাবি করেন। তিনি এ হত্যাকান্ডের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করেছে।
উল্লেখ্য, গত ২৬ জুন বুধবার সকালে চনপাড়া-ইছাখালী সড়কের পশ্চিমগাঁও এলাকায় কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৭,৮ ও ৯ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্যকে প্রকাশ্যে দিবালোকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনা তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।