সাহিত্যকথা পরিষদ এর আয়োজিত কবিতা সাপ্তাহ – ১৭ এর ফলাফল প্রকাশ

750

★ কবিতা সপ্তাহ -১৭★★
সাহিত্যকথা পরিষদ এর আয়োজিত কবিতা সাপ্তাহ – ১৭ এর ফলাফল প্রকাশ করা হলো।
তারিখঃ ১৩/০/২০১৯ইং,
রোজঃ শনিবার
সম্মানিত লেখক ও পাঠকগণের উদ্দেশ্যে ফলাফল প্রকাশের পূর্বে কিছু সংক্ষিপ্ত কথা বলার প্রয়োজন বলে মনে করছি। আমাদের সাহিত্যকথা পরিষদ এর প্রথম লক্ষ্য বাংলা সাহিত্য জগতে নবীন- প্রবীণ তরুণ – তরুণীদের নিয়ে সাহিত্য ধারার নতুনত্ব সৃষ্টি করা। লুকিয়ে থাকা প্রতিভাকে সবার দুয়ারে পৌঁছে দেওয়া এবং তাদের আলোয় আলোকিত করে পরবর্তী প্রজন্মের চলার পথ সহজ ও সুগম করা। আমরা ভাবি হয়তো আমাদের এই সাহিত্য প্রেমীদের মাঝ থেকেও একদিন এই বাংলায় জন্ম নিতে পারে কবি নজরুল, রবিঠাকুর, জসীম উদ্দীন কিংবা জীবনানন্দ দাসের মতো কোনো কিংবদন্তী। যাদের দ্বারা এই বাংলার আকাশ, বাতাস, মাটি, নদীনালা জল নতুন রূপ নিবে। পাবে ফিরে নতুন সতেজ সজীব প্রাণ। সেই লক্ষ্য নিয়েই সাহিত্যকথা পরিষদ – এর পথচলা আর কিছু প্রচেষ্টা।
সাপ্তাহিক সেরা কবিতা বাছাইয়ে যাদের শ্রম রয়েছে —
১/সভাপতি,,,শাহানাজ পারভীন শাহীন( কবিও গীতিকার)
২/ সাধারণ সম্পাদক- স্বাধীন বাবু,( কবি,গীতিকার,সুরকার ও কণ্ঠশিল্পী)
৩/সহ,সভাপতি,,মোঃ অালম(কবি)
৪/এম কে সম্রাট( কবিও গীতিকার)
৫/সহ,সম্পাদক,,এইচ টি এম মাসউদ( কবি)
৬/সহ,সম্পাদক,,বেলাল হোসেন(কবি)
৭/সাংগঠনিক সম্পাদক,,জামাল উদ্দীন মৃধা(কবি)
৮/সহ,সাংগঠনিক সম্পাদক,,,সোনিয়া খান,,(কবি)
৯/প্রচার সম্পাদক,,,এরশাদ আলী(কবি)
আগামী বই মেলায় সাহিত্যকথা পরিষদ হতে “কবিতা সাপ্তাহ” থেকে বাছাইকৃত সেরা যে সাত কবিতা বই আলোকিত করে সাহিত্যপ্রেমীদের মন জুড়াবে তা নিচে দেয়া হলো–
★★১ ।অসভ্য দানব
কামরুল বাহার মিঠু খান
আদিম যুগে ফিরেছি আজ আমরা সভ্য মানব,
মনুষ্যত্ব ভুলে হয়ে গেছি অসভ্য সব দানব।
বিবেক খানা বিকিয়ে দিয়ে থাকছি সবাই চুপ,
অত্যাচারীর নাট্যশালায় জ্বালছি আবার ধুপ।
খুনিরা তাই বাড় বেড়েছে মানছে না আর বাঁধা,
আঁধার চোখে ভুক্তভোগী অসহায় এক গাধা।
পদতলে আজ মানবতা লোপাট গেছে আইন,
কুলুপ মুখে ভাবছে সুধী বললে হবে ফাইন।
এমন সুধী ঘৃণ্য ওরাও বলতে তবুও মানা,
নীরবতায় খুনীরা তাই সদায় দিচ্ছে হানা।
রাঘব লোকে গড়ে ওদের পক্ষে নিয়ে আইন,
ওদের দিয়ে লুটছে তারা হচ্ছেনা তো ফাইন।
ধরা ছোঁয়ার বাইরে থাকে ওরাই মহানায়ক,
পড়লে বাঁকে দোসর বুকে ওরাই মারে শায়ক।
রাঘব থেকে আয় বেরিয়ে ছিড়ে শিকল খানা,
বাঁচতে হলে শিখতে হবে রুখতে ওদের হানা।
অচল ওরা তোদের ছাড়া তোরাই ওদের বল,
পড়লে ধরা করবে ওরা তোদের সাথেই ছল।
তাইতো বলি আয়রে ফিরে ওদের পিছু ছাড়েক,
আবার তোরা মানুষ হবি দেখ না ছেড়ে বারেক।
কপিরাইট সংরক্ষিত।
★★২। আমি ধরতাম শুধু রোদ্দুর
দেবাশিস বসু
ছোটবেলায়
অনেকেই অনেক কিছু ধরতে চাইতো ।
ঘুঘু ডাকা দুপুরে
স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে
কেউ প্রজাপতি ধরতো-তার সরু লেজে
সুতো বেঁধে উড়িয়ে দেবে বলে
ফড়িং ধরে অনেকে
কচুপাতার বুক চিরে রস খাওয়াতো
কেউ মাছ ধরে আবার জলে ছেড়ে দিতো–
কেমন মসৃণ গতিতে
জল কেটে এগিয়ে যায় দেখবে বলে ।
আমি কিন্তু ধরতাম শুধু রোদ্দুর
মুঠো করা আঙুলের ফাঁক দিয়ে
কেমন গড়িয়ে গড়িয়ে বেরিয়ে আসা রোদ্দুর-
সে সোনালী নরম রোদ্দুর
বড়লোকের আদুরে কুকুরের মতো
লেপ্টে থাকতো ত্বকের ছোঁয়ায়
অনেকটা মৌমাছির গায়ে লেপ্টে থাকা
হলুদ পরাগরেণুর আমেজে।
রোদ্দুর নাম এক ত্রিশোর্দ্ধ কুমারীর ।
একটা বৃদ্ধ হেঁপো রোগী আর
দু’ তিনটে মাছাড়া ছেলেমেয়ের
দুবেলা পেটের যোগান
যাকে ধীরে ধীরে রোদ্দুর করে তুলেছিলো ।
অনাঘ্রাত এক ঈষৎ রুগ্ন
নাতিশীতোষ্ণ অবয়ব নিয়ে
সে কেমন বারবার
আঙ্গুলের ফাঁক দিয়ে গলে বেরিয়ে আসতো ।
একদিন সন্ধ্যায়
কৃষ্ণচূড়ার আবছা ছায়ায়
অন্ধকারকে আরো নিবিড় করে
যা জিজ্ঞেস করেছিলাম
আজো কোনো উত্তর পাইনি তার ।
শেষ বিকেলের রোদ্দুর বুকে নিয়ে উড়ে যায়
ধূসর হাঁস
দু’একটা পালক খসে পড়ে-ধূসর পালক দু’একটা
একসময় সব গ্রহ
যার যার নিজস্ব কক্ষপথে ফিরে আসে ।
গ্রহদের গায়ে লেগে থাকে রোদ্দুরের ছোঁয়া
ছোটবেলায়
একমুঠো রোদ্দুর ধরতে চেয়েছিলাম
সারা শীতকাল ধরে
নিঃসঙ্গ বৃদ্ধ পৃথিবীর উত্তর ভাগ জুড়ে
এখনো লেগে আছে সেই রোদ্দুরের ঘ্রাণ ।
★★৩।বাংলার ঘাতক
বাবুল মুন্সী
এই সমাজে ঘটছে যা
লিখব আমি তাই,
চলবে কলম নিজ গতিতে
কোন ভয় যে নাই।
যে বলার যা বলুক মোরে
কিবা আসে যায়,
প্রতিবাদের কলম কভু
থমকে নাহি যায়।
সত্যি যাহা লিখব আমি
লিখবো দিনে রাতে,
মুক্ত কলম যুক্ত যে আজ
চলবে আমার হাতে।
গরীব দুঃখী মানুষ গুলে
পায়না অধিকার,
এসো সবে তাদের তরে
লিখি শতবার।
অপরাধী সমাজ পতি
বুক ফুলিয়ে চলে।
জানের ভয়ে তাদের কথা
কেহ নাহি বলে।
গরীব দুঃখীর রক্ত চুষে
ওরা সাজে বড় নেতা,
বড় বড় বক্তৃতা দেয়
শোনে অধম শ্রোতা।
মিথ্যে বুলির ছুরিকাঘাত
মন কেড়ে নেয় সবার,
সত্যি ওরা দেশের শত্রু
ক্ষতি করে সবার।
এসো সবে ওদের তাড়াই
ওরা বাংলার ঘাতক,
উৎ পেতে রয় ধ্বংস লিলায়
হয়ে ধূর্ত চাতক।
★★৪। কেমন খেলা?
জাকির আহমেদ জয়
আল্লাহ্‌ তোমার লীলা খেলা
বুঝা বড় দায়,
কেউবা থাকে দশ তালাতে
কেউবা গাছ তলায়।
কেহ গুরছে দামি গাড়ি
পকেট ভর্তি টাকা,
কেউবা কত পরিশ্রম করে
পকেট তবুও ফাঁকা।
কেউবা খাবে পোলাও কুড়মা
কেউবা নুন ভাত,
কত জনের কত সম্মান
কারো নেইবা জাত।
রাস্তায় রাস্তায় গুরছে কত
পেটে ক্ষুদার জ্বালা,
কারো কাছে পায়না দয়া
পেয়েছে অবহেলা।
খাদ্য নেই বস্র নেই
কত জন অনাহারি,
কেউ দেখেনা কেউ শুনেনা
ওদের আহাজারি।
ও বিধী দয়াময়
করুণা করো ওদের,
দিনের পর দিন অনাহারে
রেখেছো তুমি যাদের।
★★৫। ধর্ষণের হাট
অভি দে শিবা
বসছে দেখো দেশটা জুড়ে
ধর্ষণের এক হাট,
বয়সটা আজ হোকনা যতো
পাঁচ কিংবা আট-!
ধর্ষণটা আজ সর্ব খানে
মাঠে কিংবা গাড়িতে,
নাহয় দেখো ভর দুপুরে
লোকালয়ে বাড়িতে-!
জ্যেষ্ঠ ভ্রাতার সমূখ প্রাণে
ভগ্নি কে করে ধর্ষণ,
বৃক্ষের সাথে ভ্রাতাকে
দিয়ে রাখে কষন-!
কনিষ্ঠ ভ্রাতা এগিয়ে এলে
তাকেও আঘাত আনে,
ধর্ষণ করে ও তৃপ্তি নহে
প্রাণটা ও যে হানে-!
ভ্রাতাদের ঐ আর্তনাদে
লোকালয় হয় ভারী,
মানব রুপি দানব গুলো
নেই যে জীবন কাড়ি-!!
★★৬।মনুষ্যত্ব
মোঃ শরীফ উদ্দিন
আমি বলি আছে মানুষ
মনুষ্যত্ব অসহায়।
দিবালোকে অস্ত্র হাতে
ত্রাস দেখা যায়।
দেশটাকে করল গ্রাস
নৈতিকতার বিলাস।
খুন ধর্ষণ অপহরণ
চোখটা বন্ধ করে,
ফিরাতে হয় চরন।
বল্লে কথা উপচে এসে
কাঁধে পড়ে বিষ্ফুরন।
আমি বলি আছে মানুষ
মনুষ্যত্ব অসহায়।
দিন দুপুরে করছে খুন
একের পর এক।
দেশটা হলো অস্ত্রোধারি
পোলা মায়ার,
চেইন টানা পকেট।
নীতির ঘাত কথায়
বিবেক আজ অসহায়।
আমি বলি আছে মানুষ
মনুষ্যত্ব নাই ।
লজ্জাবতী নারী জাতি
বাক বন্দিতায়।
ধর্ষিতা হয়ে ও অকালে
জীবন হারায়।
স্বাধীন বলে আছে কিছু
নেই তো জানা তার।
খুন আর ধর্ষন করছে
বারং বার।
বিবেক অন্ধ স্বার্থের তরে
মানবতা বন্দী রাগোবের ঘরে।
একাত্তরে ঝরলো
লাখো প্রান মুক্তির চেতনায়।
সেই স্বাধীনতা আজ
ক্ষত বিক্ষত অস্ত্রোধারি নরপশুদের
পশুত্বতায়।
অসহায়ের বাহুতে
যতই লাগুক দায়ের কুপ।
স্বার্থের লঙ্কায়
মানবতা এমনিতে থাকবে চুপ।
★★৭। সাধুবেশী শয়তান
এম এস ইসলাম আকাশ
জগৎ সংসারে আছে অনেক
সাধু বেশী শয়তান
ঘোরে সদা আশেপাশে
ফেলে বিপাকে নানা ছলে
প্রাণ ভরে হাসে।
ভালোর ভালো চায়না ওরা
ভালো চোখের বিষ
সে কেনো ভালো হবে ভাই
ভেবে পায়না দিশ।
সদায় তাই পিছে ধায়
ঝগড়া লাগায় পায়ে পায়
গায়ে মানেনা আপনি মোড়ল
সবকিছুতে যেন তাদের দায়।
ওরা জগৎ সংসারের জঞ্জাল
ওরা হায়েনা ওরা শয়তানের ভাই
ওরা বেইমান ওরা নিমকহারাম
ওদের বুকপিঠ নাই।
স্বার্থের জন্য ওরা সব পারে
স্বার্থ আদায়ে পীরভক্ত মুরিদ
আহ্ কি বিনয় যেন অবতার
স্বার্থ উদ্ধারিলে
পীরের ঘরে কাটে সিধ।
এমন মনুষ্যকীট
আছে সমাজ সংসারে
যার প্রমাণ ভুরিভুরি
বিশ্বাসী হয়ে এসে
বিশ্বাসের বুকে মারে ছুরি।
বিজয়ী কবিদের সাহিত্যকথা পরিষদের পক্ষ থেকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা।
যাদের বাছাইয়ে রাখা সম্ভব হয়নি আশা করি পরবর্তী বাছাইয়ে রাখতে পারবো।