সময়ের চিন্তা ডট কমঃ কুমিল্লা গৌরিপুর বাজার থেকে তিনজন ভুয়া এমবিবিএস ডাক্তার গ্রেফতার করে র্যাব–১১।র্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইন শৃংখলার সামগ্রিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। র্যাব শুরু থেকে যে কোন ধরনের অপরাধ, প্রতারনা মূলক অপরাধ প্রতিরোধ এবং প্রতারক চক্রকে সনাক্ত ও গ্রেফতারের জন্য নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে থাকে। জনস্বাস্থ্যের সুরক্ষার জন্য অনুমোদনবিহীন হাসপাতাল ও ভুয়া ডাক্তারদের বিরুদ্ধে র্যাব নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব ১১, সিপিএসসি এর বিশেষ অভিযানে গত ৩১ আগস্ট ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে দিবাগত রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কুমিল্লা জেলার তিতাস থানাধীন জিয়ারকান্দি সাকিনস্থ “মোহন জেনারেল হাসপাতালে” নিজ চেম্বারে রোগীর দেখার সময় ভুয়া ডাক্তার ইশরাত জাহান (৩০), স্বামী–কাওসার আহম্মেদ’কে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে ডাঃ ইশরাত জাহান (সিপু), এমবিবিএস, সিএমইউ এন্ড ডিএমইউ (ঢাকা), পিজিটি (গাইনী এন্ড স্বাস্থ্য) নামীয় বিপুল পরিমাণ ভিজিটিং কার্ড ও রোগীর দেখার প্রেসক্রিপশন (যেখানে তার স্বা আছে), রোগী দেখার স্টেথিস্কোপ–০১টি, ভূয়া অটোসীল–০১টি, স্পেনোমিটার–০১টি জব্দ করা হয়। এছাড়া পৃথক আরেকটি অভিযানে দাঊদকান্দি থানাধীন গৌরীপুর বাজারের আমির খাঁ মার্কেটের ২য় তলায় “পূর্ণ কেয়ার সেন্টারে” নিজ চেম্বারে রোগীর দেখার সময় ভুয়া ডাক্তার মোঃ আবু সাঈদ (৩৮), পিতা– মৃত আব্দুল মালেক’কে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে ডাঃ মোঃ আবু সাঈদ, এমবিবিএস, সিএমইউ আল্ট্রা (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), ডিএমইউ, সিপিআর (বারডেম হাসপাতাল), সিটিএম (নাক, কান, গলা, মেডিসিন), মেডিসিন, মা ও শিশু (সনোলজিস্ট) নামীয় বিপুল পরিমাণ ভিজিটিং কার্ড, রোগীর দেখার প্রেসক্রিপশন (যেখানে তার স্বাক্ষর আছে), লিফলেট ও ভূয়া অটোসীল–০১টি জব্দ করা হয়। একই সময়ে আরোও একটি অভিযানে উক্ত এলাকার গৌরীপুর বাজারের সামিহা প্লাজার ২য় তলায় “পদ্মা ডায়াগনিস্টিক সেন্টারে” নিজ চেম্বারে রোগীর দেখার সময় ভুয়া ডাক্তার মহসিন মিয়া (৩৯), পিতা– মোস্তাক আহম্মেদ’কে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে ডাঃ মহসিন আহম্মেদ সরকার, ডিএমসি, সিএইচডবিউ, বিএইচই, স্বাস্থ্য, সিএ ইউ আল্ট্রা, মা ও শিশু গাইনী, চর্ম ও যৌন, নাক, কান, গলা অভিজ্ঞ এক্স পিটি ইন জেনারেল হাসপাতাল কুমিল্লা নামীয় রোগীর দেখার প্রেসক্রিপশন (যেখানে তার স্বাক্ষর আছে), বিপুল পরিমাণ ভিজিটিং কার্ড, রোগী দেখার স্টেথিস্কোপ–০১টি, ভূয়া অটোসীল–০১টি, স্পেনোমিটার–০১টি জব্দ করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায় তাদের বাড়ি কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন এলাকায়। তারা দীর্ঘদিন যাবৎ নিজেদের’কে বিশেষজ্ঞ এমবিবিএস ডাক্তার পরিচয় দিয়ে অনুমোদনবিহীন “মোহন জেনারেল হাসপাতাল, পূর্ণ কেয়ার সেন্টার ও পদ্মা ডায়াগনিস্টিক সেন্টার” নামীয় প্রাইভেট হাসাপাতালে নিয়মিত রোগী দেখা এবং রোগীদের বিভিন্ন ডাক্তারী পরীক্ষা–নিরীক্ষা ও আল্ট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট তৈরী করে আসছে। গ্রেফতারকৃত ভূয়া ডাক্তার ইশরাত জাহান তার নামের পাশে ডাক্তারী ডিগ্রী হিসেবে ডাঃ ইশরাত জাহান, এমবিবিএস, সিএমইউ এন্ড ডিএমইউ (ঢাকা), পিজিটি (গাইনী এন্ড স্বাস্থ্য) ও ভূয়া ডাক্তার মোঃ আবু সাঈদ তার নামের পাশে ডাক্তারী ডিগ্রী হিসেবে ডাঃ মোঃ আবু সাঈদ, এমবিবিএস, সিএমইউ আল্ট্রা (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), ডিএমইউ, সিপিআর (বারডেম হাসপাতাল), সিটিএম (নাক, কান, গলা, মেডিসিন), মেডিসিন, মা ও শিশু (সনোলজিস্ট) এবং ভূয়া ডাক্তার মহসিন মিয়া তার নামের পাশে ডাক্তারী ডিগ্রী হিসেবে ডাঃ মহসিন আহম্মেদ সরকার, ডিএমসি, সিএইচডবিউ, বিএইচই, স্বাস্থ্য, সিএ ইউ আল্ট্রা, মা ও শিশু গাইনী, চর্ম ও যৌন, নাক, কান, গলা অভিজ্ঞ এক্স পিটি ইন জেনারেল হাসপাতাল কুমিলা নামে প্রেসক্রিপশন ফরমে উলেখ করেছে। র্যাবের অভিযানিক দল নিবন্ধনকৃত চিকিৎসক হিসেবে তাদের এমবিবিএস ডাক্তারী সনদ ও বিএমডিসি কর্তৃক রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেখতে চাইলে তারা কোন এমবিবিএস ডাক্তারী সনদ ও বিএমডিসি কর্তৃক রেজিস্ট্রেশন নম্বর দেখাতে পারেনি। জিজ্ঞাসাবাদে তারা আরো জানায় যে, তারা দীর্ঘদিন যাবৎ প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে বিএমডিসির নিবন্ধনকৃত এমবিবিএস ডাক্তার ও বিভিন্ন রোগের অভিজ্ঞ চিকিৎসক হিসেবে পরিচয় দিয়ে অনুমোদনবিহীন প্রাইভেট হাসাপাতালে নিয়মিত রোগী দেখাসহ তাদের প্রেসক্রিপশন দিয়ে আসছে।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।