নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানার ভোলাইলে মাদক সম্রাট ইসলামের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে এলাকাবাসী। তাদের b- বিএনপির সাবেক কুখ্যাত সন্ত্রাসী মনিরের ভাতিজা ও মৃত আব্দুস সাত্তারের ছেলে ইসলাম মাদক ব্যবসা করে খবু অল্প সময়ের মধ্যেই আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছে। মাত্র ৩ বছর আগেও স্থানীয় একটি অটো পার্টস এর দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করলেও অন্তরালে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী আপন ছোট ভাই মুসলিম ও মামাতো ভাই ভোলাইলের অপর মাদক সম্রাট হীরার সহযোগিতায় মাদক ব্যবসা চালিয়ে খুব অল্প সময়ের মধ্যে টিনশীট বাড়ি থেকে ১টি চারতলা ও ১টি পাঁচতলা বাড়ির মালিক এখন ইসলাম। এছাড়াও বিভিন্ন স্থানে রয়েছে তার নামে-বেনামে অসংখ্য জমি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক সূত্র জানিয়েছে- হীরা ও তার সহযোগি ভাইয়েরা বিগত সময়ে বিএনপি ক্ষমতা থাকাকালিন তার মামা মনিরের ক্ষমতার দাপটে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। আওয়ামীলীগ ক্ষমতার আসার পর এক আওয়ামীলীগ নেতার ছত্রছায়ায় তারা এলাকায় মাদক ব্যবসা শুরু করে। এছাড়াও এলাকায় প্রভাব বিস্তার করতে হীরা, মুসলিম ও ইসলামের নেতৃত্বে বিশাল বাহিনী গড়ে তোলে। এই বাহিনী মাদক ব্যবসা ও ছিনতাই সহ এমন কোনো কাজ নেই যা সাধারন মানুষকে হয়রানী করতে তারা করেনা। হীরা নিজের মাদক ব্যবসাকে আড়াল করতে এলাকায় সিমেন্টের ব্যবসার দোকান দেয়। একইভাবে ইসলামও একটি অটো পার্টস এর দোকানে চাকরি নেয়। তারা এই ব্যবসা ও চাকরির অন্তরালে থেকেই এলাকায় মাদক ব্যবসা পরিচালনা করতে থাকে। এক পর্যায়ে চাকরি চলে গেলে ইসলাম পুরোপুরি মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে সাধারন মানুষ সহ যে কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বললে তাকেই নাজেহাল করা থেকে শুরু করে মারধর করে মাদক সম্রাট ইসলাম ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী।
এ ব্যাপারে স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি অনেকটা ভীত সন্ত্রস্ত্র হয়ে বলেন- ইসলাম ও তার ছোট ভাই মুসলিম এবং অন্যান্য ভাইয়েরা সবাই এলাকার শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী এটা এলাকার সবাই জানে, কিন্তু ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারেনা। কেননা ওদের বংশের প্রায় সবাই এই ব্যবসার সাথে জড়িত এবং কেউ ওদের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুললেই তাদেরকে সরাসরি হামলা-মারধর সহ প্রাণে মেরে ফেলার ভয় দেখায়। সব মিলিয়ে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব ওদেরই। আমাদের চেয়ারম্যান সাহেবকে সাথে নিয়ে আমরা এলাকায় মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হলেও ওদের বিরুদ্ধে কিছুই করতে পারিনা।
এদিকে খোঁজ নিয়ে আরো জানা গেছে, ২০১৬ সালের অক্টোবরে ওসি কামাল উদ্দিন ফতুল্লা থানার দায়িত্বে থাকাকালীন ইসলামের ছোট ভাই এলাকার সবচেয়ে বড় মাদকের ডিলার মুসলিম এবং মাদকের একটি বড় চালান সহ তার আরো ২ সহযোগিকে গ্রেফতার করে ফতুল্লা থানা পুলিশ। এভাবে প্রায় এক ডজন মামলার আসামী মুসলিম। একইভাবে ইসলামকেও প্রায় ৭ থেকে ৮টি মাদক মামলায় একাধিকবার গ্রেফতার করে ফতুল্লা থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরো একটি সূত্র জানিয়েছে- ২ বছর আগে এক মাদক ব্যবসায়ীর ইয়াবার বিশাল এক চালানের ২৬ লক্ষ্য টাকা হাতিয়ে নিয়ে ওই মাদক ব্যবসায়ীকে ধোকা দেয় ইসলাম। ওটাই ছিল ইসলামের মাদক ব্যবসার ক্যারিয়ারে বড় ধরনের উত্থান। সেই টাকা হাতিয়ে নেয়ার পর ইসলাম তখন নিজের সবক’টি মোবাইল নাম্বার বদলে নিয়ে ওই ব্যবসায়ীর সাথে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।
এছাড়া একাধিক নারী কেলেঙ্কারীর সাথে জড়িত ইসলাম তার দুই সহযোগি মামুন ও মাসুমকে সাথে নিয়ে দ্বিতীয় স্ত্রী(বর্তমান)কে মুন্সিগঞ্জ থেকে জোড়পূর্বক তুলে এনে বিয়ে করে বলেও জানা গেছে। কিন্তু এদের বিরুদ্ধে মুখ খুললেই ছিনতাই, মারধর সহ নানাভাবে মানুষকে নাজেহাল করে এরা, ফলে চাইলেই কেউ এদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে পারছেনা। অথচ এদের কারণে এলাকার যুব সমাজ ধ্বংস হচ্ছে।
ফলে ভুক্তভোগি এলাকাবাসী মাদক ব্যবসায়ী ইসলাম ও তার অন্যান্য সহযোগিদের বিরুদ্ধে ফতুল্লা মডেল থানা ও ডিবি পুলিশ সহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিশেষ নজরদারী ও গ্রেফতার দাবি করেছে।
বার্তা প্রেরক : সোনিয়া দেওয়ান প্রীতি
০১৭৬৮৩৬০৫০৭