স্টাফ রিপোর্টারঃবহু বছরের পুরাতন লক্কর-ঝক্কর বাসকে রঙ-চং লাগিয়ে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে চলছে মৌমিতা ট্রান্সপোর্ট বাস কোম্পানী। বাসের উপর দিয়ে ফিটফাট হলেও ভিতরের অবস্থা খুবই খারাপ। আবার অন্যদিকে যানবাহনে শিশুশ্রম নিষিদ্ধ হলেও ১৮ বছরের কম বয়সী চালক দিয়ে চলছে এই কোম্পানির অধিকাংশ বাস।
মৌমিতা ট্রান্সপোর্ট বাস চলছে ৮০-১০০টি সেখানে এই বাসের অনুমোদন দেওয়া আছে মাত্র ৩০টি। বাসটি নারায়ণগঞ্জ থেকে সাইনবোর্ড হয়ে গাবতলী, চানখারপুল, বকশীবাজার, আজিমপুর, আসাদগেট, শ্যামলী, গাবতলী, হেমায়েতপুর, সাভার, নবীনগর, ইপিজেড, চন্দ্রা পর্যন্ত চলাচল করে। কিন্তু কোথাও বাসের কোন কাউন্টার নেই। সড়কের যত্রতত্র যাত্রী উঠানামা করে।
এদিকে এই বাস কোম্পানির অধিকাংশ চালকের নেই কোন লাইসেন্স। অন্যদিকে নগরের সড়কগুলোতে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এই কোম্পনির ফিটনেস বিহীনবাস। বাসে রঙ লাগালেও বাসের ভিতরে যন্ত্রপাতি জং ধরানো, বাসের গ্লাস ভাঙা, লুকিং গ্লাস ভাঙা, বডি দুমড়ানো-মুচড়ানো।
বাহিরের অবস্থা এমন ভিতরের অবস্থা আরো নাজেহাল। কোনটার সিট ভাঙা আবার কোনটার ইঞ্জিন ঠিক নাই। কোন রকম পুরাতন বাস ঠিক করে নতুন রঙে রাঙিয়ে বাস চলছে। তার উপর ১৮ বছরের কম বয়সী চালক দিয়ে চলছে ।
২২ ডিসেম্বর রাত ৮টায় মৌমিতা কোম্পানির ফিটনেসবিহীন এরূপ একটি বাস মেট্রোহল নবাব সলিমুল্লাহ সড়ক থেকে ছাড়ার দৃশ্য দেখা যায়। বাসটির নং ঢাকা মেট্রো-ব ১৯-৯৩৯২। বাসটি চাষাঢ়া শহীদ মিনারের সামনে থেকে যাত্রী নিয়ে বাস ভর্তি করে।
বাসটির বাহিরে রঙের প্রলেপ থাকলেও ভিতরে নেই রঙের আচর। পুরো বাসটি জং ধরানো। একই অবস্থা বাসের অন্যান্য যন্ত্রপাতির। আরো ভয়ানক বিষয় ছিলো বাসটির চালক। বাসের চালকের বয়স ১৪ কি ১৫। বাসটি শিবু মার্কেট পেরুতেই হটাৎ রাস্তার ডিভাইডারের সাথে জোরে ধাক্কা লেগে আবার চলতে শুরু করে। এই অবস্থায় বাসের যাত্রী চরম মাত্রায় ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে চালকের উপর।
লাখো যাত্রীদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলে চলছে বাস। যাত্রীদের মনেও রয়েছে মৃত্যু আশঙ্কা। বাসের যাত্রী ফতুল্লা স্টেডিয়াম এলাকার বাসিন্ধা শামীমা বেগম বলেন, এতো অল্প বয়সের একটা ছেলে বাস চালাইতাছে। এই বয়সে ঠিক মতো গাড়ি চালাইতে জানে নাকি যে ওদের হাতে গাড়ি দিয়ে দেয়। কত বড় একটা বিপদ থেকে বাঁচছি। আজকে একটা দূর্ঘটনা ঘটলে কি হইতো ? কত গুলো মানুষ বাসে উঠছে।
এ বিষয়ে বিআরটিএ নারায়ণগঞ্জ সার্কেলের সহকারি পরিচালক (ইঞ্জি.) সৈয়দ আইনুল হুদা চৌধুরী এই বিষয়ে বলেন, আমার জানা মতে অনুমোদনপ্রাপ্ত মৌমিতা বাসের সংখ্যা ৩০ টি। এই সংখ্যা কিছুটা বাড়তে পারে। তবে এতো বেশি নাহ।
আমাদের ঢাকার মেট্রো আর টি সির কাছে বর্তমানের অনুমোদন প্রাপ্ত বাসের তথ্য রয়েছে। কিন্তু অনুমোদনের চেয়েও বেশি বাস চলছে শুনেছি। ফিটনেনস বিহীন ও লাইসেন্স ছাড়া বাসের ও চালকের বিষয়ে আমরা মোবাইল কোর্ট করছি। আর এক্ষেত্রেও দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।