সময়ের চিন্তাঃনারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানায় টানবাজারের ১৮ জন চোরাই সুতা কারবারির বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছে ঢাকার বন্ড কমিশনারেট অফিস। কাস্টমস এন্ড বন্ড কমিশনারেট কার্যালয়ের সহকারি রাজস্ব কর্মকর্তা মো. আতিকুর রহমান ও মো. নাহিদুল হাসান পৃথক বাদী হয়ে গত মঙ্গলবার দুপুরে বন্ড সুবিধায় আনা সুতা ও কাপড় অবৈধভাবে মজুদ করা ও বিক্রির অভিযোগে মামলা দুটি দায়ের করেন। দুই মামলায় ১০ জন করে মোট ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এরমধ্যে জ্যামি এন্টারপ্রাইজের হাজী ইসমাইল ও টানবাজারের ব্যবসায়ী ফরহাদকে উভয় মামলায় আসামি করা হয়েছে। মো. আতিকুর রহমানের মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে তোতা ইয়ার্ন ট্রেডিং এর তোতা মিয়ার ছেলে গোলাম কিবরিয়া মামুনকে।
মো. আতিকুর রহমানের মামলায় আসামিরা হলেন- বিসমি ইয়ার্ণ ট্রেডিংয়ের হাজী বিল্লাহ, জ্যামি এন্টারপ্রাইজের হাজী ইসমাইল, টানবাজারের ব্যবসায়ী ফরহাদ, এস এস থ্রেড এন্ড এক্সেসরিজের সুব্রত রায়, শুভা এন্টারপ্রাইজের বিপুল মন্ডল, মেসার্স পুলক চৌধুরীর মালিক পুলক চৌধুরী, এইচ এস ট্রেডিং এর মো. সেলিম রেজা, তোতা ইয়ার্ণ ট্রেডিং এর মো. গোলাম কিবরিয়া মামুন, জামাল ইয়ার্ণ ট্রেডিং এর আলহাজ আব্দুল মান্নান মিয়া, শিমুলিয়া ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের খান নজরুল ইসলাম।
মো. নাহিদুল হাসানের মামলায় আসামিরা হলেন- মেসার্স সাদ ট্রেডার্সের মো. জহির হোসেন, আজাদ ট্রেডার্সের মো. আওলাদ হোসেন, জ্যামি এন্টারপ্রাইজের হাজী ইসমাইল, টানবাজারের ব্যবসায়ী ফরহাদ, সুতাঘরের আমিন উদ্দিন, রিতা ট্রেডার্সের গোবিন্দ চন্দ সাহা, টানবাজারের ব্যবসায়ী আইয়ুব আলী, লাকী এন্টারপ্রাইজের মো. সেলিম, এনবি ট্রেডিংয়ের সমির সাহা, আমিন ব্রাদার্সের রুহুল আমিন।
এর আগে গত ৮ ও ১৪ ডিসেম্বর পৃথক দু’টি অভিযানে নারায়ণগঞ্জ শহরের টানবাজার ও নিতাইগঞ্জ এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ বন্ডেড সুতা উদ্ধার করে শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের কাস্টমস বন্ড কমিশন।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, অতীতে বন্ডের চোরাই মালামাল ধরা পড়ার ঘটনায় শুল্ক আইনে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হলেও এবারই ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হলো। এর ফলে চোরাকারবারিদের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে।
সূত্র জানায়, চলতি মাসে নারায়ণগঞ্জে দুটি অভিযানে প্রায় আড়াই কোটি টাকা মূল্যের ৩৫ টন অবৈধ বন্ডেড সুতা উদ্ধার করা হয়। এনবিআর গঠিত টাস্কফোর্সের আওতায় স্থানীয় ভ্যাট অফিস ও পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় এসব অভিযান পরিচালনা করা হয়।
গত ৮ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ শহরের টানবাজার এলাকার বিসমি ইয়ার্ন ট্রেডিং এবং নিকটস্থ মাঠে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে ৯ হাজার ৪৫০ কেজি অবৈধ বন্ডেড সুতা আটকের ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ সদর থানায় একটি ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়। এছাড়া ১৪ ডিসেম্বর নারায়ণগঞ্জ শহরের সুতারপাড়া, বংশাল রোড এলাকার সাদ ট্রেডার্স এবং আজাদ ট্রেডার্সের গুদামে অভিযানেও ২৫ হাজার ৮৩৬ কেজি অবৈধ বন্ডেড সুতা আটক করা হয়। এ ঘটনায়ও আলাদা একটি মামলা দায়ের করা হয়।
কাস্টম বন্ড কমিশনারেটের কমিশনার এবং টাস্কফোর্স সভাপতি এসএম হুমায়ুন কবীর বন্ড সুবিধার অপব্যবহারের মাধ্যমে অবৈধ সুতা ও কাপড় খোলাবাজারে বিক্রির সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, অবৈধ বন্ড ব্যবসার উৎস এবং গন্তব্য চিহ্নিত করে এর সঙ্গে জড়িত সকল অপরাধীকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান। তিনি বলেন, গত মঙ্গলবার দুপুরে অবৈধ সুতা ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছে বন্ড কমিশনারেট। আসামিদের অতি দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।