নবাগত পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম বলেন, পেশাদারিত্বের সাথে শতভাগ সততা নিয়ে কাজ করব, মিথ্যা মামলার জন্য পুলিশ না। ২৯ই ডিসেম্বর রবিবার বিকেল ৩টার দিকে পুলিশ সুপারের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এস পি জায়েদুল এসব কথা বলেছেন।
তিনি বলেন, সততা মানেই সততা, শতভাগ সততা। একভাগও কম হলে সেখানে কাজ করা যায়না। পেশাদারিত্বের সাথে শতভাগ সততা নিয়ে কাজ করাই হবে আমার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। একটি মিথ্যা মামলাও সহ্য করব না। মিথ্যা মামলা করার জন্য পুলিশের জন্ম না। পুলিশ মামলাবাজ না। মামলা করার জন্য পুলিশ না। পুলিশ মানুষের সেবা করার জন্য। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করার জন্য। মানুষ যাতে শান্তিতে থাকতে পারে সেটাই হচ্ছে পুলিশের কাজ। কাউকে ফাঁসানোর জন্য, কাউকে ধরে আনার জন্য, কারো বাড়ি দখল ছুটিয়ে দেওয়ার জন্য পুলিশ না। পুলিশের জন্য আইন আছে। ১৮৬১ সালের আইনে যা বলা আছে আমি সেভাবেই চলব।
এসপি জায়েদুল আলম আরও বলেন, স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে যারা আমরা মুক্তিযুদ্ধ দেখিনি কিংবা মুক্তিযুদ্ধ পাইনি তারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ কিংবা শহীদ হতে পারব না। তবে আমাদের জন্য একটাই সুযোগ জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও মানুষকে সেবা দিতে পারব। মানুষকে সত্য ও ন্যায় বিচার দিতে পারব। মানুষের ন্যায় বিচারের জন্য যাতে কখনই পিছপা হব না। সততার নিরানব্বই ভাগ কিংবা আশিভাগ সততা বলে কোন শব্দ নেই। সততা মানে হচ্ছে শতভাগ সততা।
পুলিশ সুপার বলেন, এখানে যত সাংবাদিক এসেছেন তারা যদি আমার পাশে থাকেন তাহলে আমি মনে করব আমরা পুলিশের সংখ্যা অনেক। আপনারা যে তথ্য দিতে পারবেন, যে তথ্য উদঘাটন করতে পারবেন, তা অন্য কারো কাছ থেকে পাওয়া যাবে না। তাই সাংবাদিক ও মুক্তিযোদ্ধাদের প্লাটফর্ম যদি ভাগ হয়ে যায় তাহলে আর উপায় থাকবে না। আমরা চাই সাংবাদিকরা সব এক হয়ে কাজ করবেন, তাহলে গন্তব্যে পৌছতে সহজ হবে। আমি দীর্ঘদিন ধরেই সাংবাদিকদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছি। আপনাদের সহযোগিতায় ঢাকা মেট্রোপলিটনে ৯ বছর এবং মুন্সিগঞ্জে তিন বছর প্রায় পাঁচ মাস কাজ করে বর্তমানে এখানে এসেছি। এখানেও আপনাদের সহযোগিতা নিয়েই কাজ করতে চাই।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে এসপি বলেন, একসময় নাটক সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার হিসেবে গণ্য হলেও আমি বলব বর্তমানে সাংবাদিক হচ্ছে সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার। সমাজের অসঙ্গতি, ভালো-খারাপ দিক এগুলো একমাত্র সাংবাদিকরা তুলে ধরতে পারেন। সমাজের সংস্কার ও বিনির্মাণে সাংবাদিকদের ভূমিকা অনেক গুরুত্বপুর্ন। সাংবাদিকতাকে চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে বিবেচনা করলেও কখনও কখনও এটিই প্রথম কিংবা দ্বিতীয় হিসাবে পরিগণিত হয়। সাংবাদিকদের সহযোগিতা থাকলে দায়িত্ব পালনে পথচলা সহজ হবে বলে জানান এসপি। দায়িত্ব গ্রহণের পর মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে প্রথম সভা করার পরপরই আমার দ্বিতীয় সভা সাংবাদিক ভাইদের নিয়ে।
শহীদ পরিবারের সন্তান হওয়ায় স্বাধীনতার বিপক্ষে যারা রয়েছে অর্থাৎ জামাত-শিবির কিংবা যুদ্ধাপরাধী তাদের সংগঠন নিয়ে আমার আপত্তি রয়েছে তাছাড়া অন্য যে কোন দল নিয়ে আমার কোন আপত্তি নাই। নারায়ণগঞ্জে কাজ করাকে আমি চ্যালেঞ্জ হিসেবে না দেখে আমি আমার উপর দায়িত্ব বেড়ে গেছে বলে মনে করি।
সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) (পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি প্রাপ্ত) মো. আব্দুল্লাহ আল-মামুন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) সুবাস চন্দ্র সাহা সহ জেলার উর্দ্বতন কর্মকর্তাগন। তাছাড়া জেলার ও বিভিন্ন থানার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।