স্টাফ রিপোর্টারঃমায়ের আশংকাই সত্য হলো। সিদ্ধিরগঞ্জে মেধাবী শিক্ষার্থী শিশু জিদানকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে মর্মে নিহতের ময়না তদন্ত রিপোর্ট পর্যালোচানয় দেখা গেছে।
০৭.০১.২০ তারিখ মঙ্গলবার নিহত শিশু জিদানের পক্ষের আইনজীবী এড. মো. শরীফ হোসেন ময়না তদন্তের রিপোর্ট পর্যালোচনা করে বলে, নিহত শিশুকে হত্যা করা হয়েছে এতো কোন সন্দেহ নাই। ময়না তদন্তে স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ রয়েছে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে এবং শিশু জিদানের মাথায় ভারী কিছু দিয়ে জোরে আঘাত করা হয়েছে যার ন্যায় তার মৃত্যু হয়েছে। অপরাধীরা হত্যার প্রকৃত রহস্য ধামা চাপা দেওয়ার জন্য মিথ্যা একটি নাটক সাজিয়েছিল।
এর আগে অপরাধীরা হত্যার প্রকৃত রহস্য ধামাচাপা দেওয়ার জন্য মেধাবী শিক্ষার্থী জিদানের মৃত্যু বিদুৎপৃষ্ট হয়ে হয়েছে বলে নিহতের পরিবারকে জানায়। এতে শিশু জিদানের মা শুরু থেকেই বলে এসেছেন রতন, রাহাত হোসেন, সাব্বির হোসেন, ইয়াছিন, মো. মাইনুদ্দিনরা মিলে তার ছেলে তন্ময়কে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। এই বিষয়ে তারা সেই সময় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের কতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ হত্যা মামলাটিকে একটি অপমৃত্যু মামলা হিসেবে রুজু করে। পরিবারের সদস্যরা থানা পুলিশের সিদ্ধান্তের সাথে এক মত হতে না পেরে বিজ্ঞ আদালতের ধারস্থ হলে বিজ্ঞ আদালতে অপমৃত্যুর মামলাটিকে হত্যা মামলা হিসেবে রুজু করত: মামলার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনের জন্য সিদ্ধিরগঞ্জ থানা’র ওসিকে নির্দেশ প্রদান করে।
অপর দিকে নিহতের আইনজীবী দাবী করে, বন্ধুরা পরিকল্পিত ভাবে মেধাবী শিক্ষার্থী জিদানকে হত্যা করেছে। এই হত্যাকান্ডের সাথে অনেকেই জড়িত রয়েছে। এদে আইনের আওতায় এনে দ্রুত বিচার করার আবশ্যক। তিনি আরো দাবী করেন নারায়ণগঞ্জে কিশোর গ্যাং দ্বরা অপরাধ দিনকে দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই হত্যা মামলার বিচারের মাধ্যমে একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করা গেলে কিশোর গ্যাং কর্তৃক অপরাধ রোধ করা সম্ভব হবে।
এর আগে নিহত শিশু জিদান হাসান তন্ময় এর মা নারায়ণগঞ্জের নব নিযুক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম এর নিকট একটি অভিযোগ দায়ে করে। অভিযোগে তিনি উল্লেখ করেন আসামী রতন, রাহাত হোসেন, সাব্বির হোসেন, ইয়াছিন, মো. মাইনুদ্দিনরা মিলে তার ছেলে তন্ময়কে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে এবং হত্যাকান্ডের ঘটনায় গত ২০.১২.১৯ তারিখ সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করতে গেলে থানার কর্মকর্তা আসামীদের অবৈধভাবে প্রভাতি হয়ে হত্যা মামলা না নিয়ে অপমৃত্যু মামলা করে।
নিহতের মা হোসনে আরা বেগম অভিযোগ করে বলে, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ আমার ছেলে হত্যা মামলা নিতে আগ্রহী ছিলো না বিধায় আদালতের সরনাপন্ন হলে আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে একটি হত্যা মামলা হিসেবে রুজু করে। আমার এক মাত্র ছেলে পরিকল্পিতি ভাবে হত্যা করেছে। আমি এর বিচার চাই। তিনি আরো দাবী করন, পুলিশ আমার ছেলের লাশের সরতহাল রিপোর্টটিতে কাটছাট করেছে। যখন হত্যাকারীরা আমার ছেলের লাশ আমার ফেলে রেখে দিয়ে যায় তখন আমি আমার ছেলের সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখেছি। তবে পুলিশের সুরতহাল রিপোর্টে সেই আঘাতের বিষয়টি উল্লেখ করে নি।
উল্লেখ্য গত ২৬.১২.১৯ তারিখ বৃহস্পতিবার সিদ্ধিরগঞ্জে জিদান হোসেন তন্ময় নামে এক কিশোরকে তারই বন্ধু রতন ডেকে নিয়ে যায়। এরপর পরে রাতে আর বাসায় ফিরেনি তম্ময়। পরদিন ২৭.১২.১৯ তারিখ শুক্রবার সকালে রতনসহ আরো দুইবন্ধু তম্ময়ের লাশ নিয়ে তার বাবার কাছে বুঝিয়ে দিয়ে বলে বিদুৎপৃষ্ট হয়ে মারা গেছে। তখন নিহতের পরিবারের দাবি তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। অপর দিকে পুলিশ এ মৃত্যুকে আত্মহত্যা বলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি ইউডি মামলা রুজু করে। হত্যা মামলা না নিলেও এ ঘটনায় সন্দেহভাজন হিসেবে রতনসহ সাব্বির ও ইয়াছিন নামে ৩ জনকে আটক করে পুলিশ।
নিহতর স্বজনরা জানায়, সিদ্ধিরগঞ্জের মিজমিজি বাতানপাড়া ক্লাব সংলগ্ন পাইনাদী শুক্কুর আলীর ছেলে রতনের সাউন্ড সিষ্টেম ও ছোট বাতির দোকান। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে রতন কাজ করার কথা বলে মিজমিজি মধ্যপাড়া এলাকার বাসিন্ধা ফারুক ঢালির ছেলে জিদান হাসান তন্ময়কে নিয়ে যায়।
২৭.১২.১৯ তারিখ শুক্রবার সকালে তন্ময়ের বাড়ির সামনে ইজিবাইক দিয়ে নিয়ে তন্ময়ের বাবা ফারুক ঢালীর কাছে লাশ বুঝিয়ে দেয়। এসময় তন্ময়ের বাবা লাশ বহনকারীদের তার ছেলের মৃত্যুর কারন জানতে চাইলে বিদুৎ পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে বলে চলে যায়। নিহতের পরিবার ধারনা করে তন্ময়কে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে।