আশিকুজ্জামানঃ দুই বোনকে ধর্ষণের চেষ্টা ও আপত্তিকর ছবি ফেইজবুকে পোস্টের অভিযোগে ভূয়া সেনাসদস্য গ্রেফতার। র্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধ এর উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতারসহ আইনশৃঙ্খলার সামগ্রিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিভিন্ন অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য র্যাব ফোর্সেস নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে থাকে। র্যাব-১১ এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় ধর্ষণ, হত্যা, চাঁদাবাজি, ডাকাতি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ড দমনের লক্ষ্যে র্যাব অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতার ও আইনের আওতায় আনার জন্য র্যাব ফোর্সেস নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে।
এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল গত ০৭ জানুয়ারি ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে বিকালে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন সাইনবোর্ড এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে দুই বোনকে ধর্ষণ ও হত্যার চেষ্টা এবং ফেইজবুকে আপত্তিকর ছবি পোষ্ট করার অভিযোগের প্রেক্ষিতে অভিযুক্ত আসামী মোঃ আলমগীর খাঁ(২৫), পিতাঃ এলাহি নেওয়াজ খাঁ’কে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায় মোঃ আলমগীর হোসেনের বাড়ী নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া থানাধীন কাটা কুশিয়া এলাকায়। সে ২০১২ সালে ঢাকা সেনানিবাসস্থ কচুক্ষেত আর্মি স্টোরে চাকুরী নেয়। সেখানে চাকুরীকালীন সময়ে সে সেনাবাহিনীর ভূয়া আইডি কার্ড ও ট্রাওজার সংগ্রহ করে। পরবর্তীতে সে বিভিন্ন সময়ে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাবের পরিচয় দিয়ে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করত। এরই ধারাবাহিকতায় সে সেনাবাহিনীর সদস্য হিসেবে মিথ্যা পরিচয়ে ফেইজবুক আইডি খুলে ভিকটিমদের সাথে ভাই-বোনের সম্পর্ক গড়ে তুলে। গ্রেফতারকৃত আসামী গত ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯ খ্রিস্টাব্দে ভিকটিমের বাড়িতে কৌশলে অবস্থান করে। ভিকটিমের বাড়ীতে অবস্থানকালীন সময়ে ভাই-বোনের সম্পর্কে সুবাদে ভিকটিমের বিভিন্ন আপত্তিকর ছবি তার মোবাইলে ধারণ করে। সে ঐদিন রাত ২৪০০ ঘটিকার সময় কৌশলে ভিকটিমকে তার কাম-প্রবৃত্তি চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে ভিকটিমের শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয় এবং ধর্ষণের চেষ্টা করে। একই সাথে এই বিষয়ে কাউকে কিছু না বলার জন্য ভিকটিমকে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে তাদের বাড়ী হতে চলে যায়। পরবর্তীতে আসামী আলমগীর বিভিন্ন সময়ে ভিকটিমদের ভয়ভীতি ও হুমকি দেয় এবং বলে তার কথামতো তার সাথে ঘুরতে না গেলে ভিকটিমের আপত্তিকর ছবি ফেইজবুকে ছেড়ে দিবে। আলমগীর গত ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯ তারিখে ভিকটিম দুই বোনকে বিভিন্ন কৌশলে ফুসলাইয়া ও অভিনব কায়দায় ভয়ভীতি প্রদর্শন করে অপহরণপূর্বক ব্লার্ক মেইল করে তাদেরকে ঢাকা হতে বরিশালগামী কীর্তনখোলা লঞ্চের কেবিনে উঠিয়ে বরিশালের উদ্দেশ্যে রওনা করে। রাত আনুমানিক ২৩০০ ঘটিকার দিকে আসামী আলমগীর লঞ্চের কেবিনের ভিতর পর্যায়ক্রমে ভিকটিম দুই বোনকে ধর্ষণের উদ্দেশ্যে তাদের পরণের জামা কাপড় ছিঁড়ে ফেলে ও জোড়পূর্বক ধর্ষনের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে ভিকটিমদের মারধর ও হত্যার চেষ্টা করে। এছাড়াও সে উভয় ভিকটিমের সাথে জোর পূর্বক আপত্তিকর ছবি তার মোবাইলে ধারণ করে। পরদিন ভোরে ভিকটিমদের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন, স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা ছিনতাই করে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় ভিকটিমদেরকে তাদের নিজ বাড়ীতে ফেরত পাঠানো হয়। উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের পরিবারের অভিযোগের প্রেক্ষিতে র্যাব-১১ কর্তৃক গোয়েন্দা নজরদারী ও গোপন অনুসন্ধানের মাধ্যমে ঘটনার সত্যতা পেয়ে র্যাব-১১ এর একটি বিশেষ আভিযানিক দল গত ০৭ জানুয়ারি ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে বিকালে নারায়ণগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন সাইনবোর্ড এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে অভিযুক্ত আসামী মোঃ আলমগীর’কে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী বর্ণিত ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে।
গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।