স্টাফ রিপোর্টারঃনারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের বৈদ্যেরবাজার সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে জমি রেজিষ্ট্রেশনে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে জমির দলিল করার অভিযোগ উঠেছে।
২০১৬ সালে তৎকালীন সাব রেজিষ্টার ও অফিস সহকারীর যোগসাজসে এ
রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠে।এঘটনায় দূর্নীতি দমন কমিশন, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও নারায়ণগঞ্জ জেলা রেজিষ্ট্রারের কাছে শিবলী মতিন নামের এক ব্যবসায়ী লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগের পর নারায়ণগঞ্জ জেলা রেজিষ্ট্রারের কার্যালয় থেকে একটি তদন্ত প্রতিবেদন সাত কর্মদিবসে দাখিল করার জন্য বৈদ্যেরবাজার সাব রেজিষ্ট্রারের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে।চিঠি দেওয়ার সাত কর্মদিবস অতিবাহিত হওয়ার পরও কোন প্রতিবেদন না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বৈদ্যেরবাজার সাব রেজিষ্টারের বিরুদ্ধে।
জানা যায়, উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের চর লাউয়াদী মৌজায় প্রতি শতাংশ নাল জমির মূল্য ৩ লাখ ৩৩ হাজার তিন শত ৩৩ টাকা বাজার মূল্য নির্ধারণ করে সরকার। গত ২৪ এপ্রিল ২০১৬ সালে ৫৪৭২ নং দলিল মূলে দলিল গ্রহিতা সাহাপুর গ্রামের সহিদুল ইসলামের স্ত্রী তাছলিমা আক্তার ও দাতা হিসেবে নানাখি গ্রামের সুরুজ মিয়া, মো.জায়েদ আলী ও রত্না বিবি সাব কাবলায় ওই মৌজায় ৪৮ শতাংশ নাল জমি ৬ লাখ টাকা মূল্যের ভিটি দেখিয়ে দলিল লিখক ১০৮ নং সনদধারী মো.সেলিম তৎকালীন বৈদ্যোরবাজার সাব রেজিষ্ট্রার আবু তাহের মো. মোস্তফা ও অফিস সহকারী নাসিমা আক্তারের যোগসাজসে দলিল সৃজন করে। যাহার সরকারী নির্ধারিত নাল জমির বাজার মূল্য এক কোটি উনষাট লক্ষ নিরানব্বই হাজার নয়শত চুরাশি টাকা। এ দলিলে ১৫ লক্ষ টাকার অধিক মূল্যের রাজস্ব ও স্ট্যাম্প ফাঁকি দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগকারী ব্যবসায়ী শিবলী মতিন জানান, আমি ওই এলাকায় জমি ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিলে সরকারী রাজস্ব ফাঁকির বিষয়টি আমার নজরে আসে। সচেতন নাগরিক হিসেবে গুরুত্ব মনে করে অভিযোগ দায়ের করেছি। তবে রাজস্ব ফাঁকির বিষয়টি ধামাচাপা দিতে এ দলিলের বিপরীতে আরো একটি হেবা দলিল তৈরি করা হয়। ওই দলিলে নাল জমিকে ভিটি দেখানো হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বৈদ্যেরবাজার সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের একাধিক দলিল লিখক জানান, অনেকজন ভেন্ডার এখনও রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে দলিল করে থাকে।এসব বন্ধ না হলে প্রকৃত দলিল লিখকদের বদনাম হবে। এগুলো বন্ধ হওয়া উচিত।
বৈদ্যোরবাজার সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের দলিল লিখক এইচ এম সেলিম জানান, আমি দলিল ও পর্চা অনুযায়ী দলিল তৈরি করেছি। তরে রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগ সত্য নয়।
সাব রেজিষ্ট্রার আব্দুর রশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ২০১৬ সালের একটি দলিলে রাজস্ব ফাঁকির বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদনের চিঠি আজ বুধবার পেয়েছি। তদন্ত করে শীঘ্রই প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। তদন্তে দলিল লিখক দোষী প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে সনদ বাতিলসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা রেজিষ্ট্রার মো.জিয়াউল হক জানান, বৈদ্যোরবাজার সাব রেজিষ্ট্রি অফিসের রাজস্ব ফাঁকির বিষয়ে আমার দপ্তরে একটি অভিযোগ এসেছে।বৈদ্যোরবাজার সাব রেজিষ্ট্রারকে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া রাজস্ব ফাঁকি দেওয়া হলে অবশ্যই এ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে।