আশিকুজ্জামানঃঢাবি শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার মজনু (৩০) একজন ‘সিরিয়াল রেপিস্ট’ বলে জানিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক সারোয়ার বিন কাশেম। তিনি জানায়, ধর্ষক মজনু মাদকাসক্ত। তার স্ত্রী মারা যাওয়ার পর পরিবারের সঙ্গে তার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ঢাকায় এসে সে প্রতিবন্ধী মেয়ে ও নারী ভিক্ষুকদের ধর্ষণ করতো বলে জিজ্ঞাসাবাদে আমাদের জানিয়েছে।
০৮.০১.২০ তারিখ বুধবার দুপুরে রাজধানীর কারওয়ানবাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানায়। র্যাব কর্মকর্তা সারোয়ার বিন কাশেম বলে, মজনু একজন সিরিয়াল রেপিস্ট।তার গ্রামের বাড়ি নোয়াখালী। ঢাকায় আসার পর বিভিন্ন রেল স্টেশনে কিংবা এর আশপাশে থাকতো। ১২ বছর আগে ট্রেন থেকে পড়ে তার দুটি দাঁত ভেঙে যায়। তার বাড়ি নোয়াখালীর হাতিয়ায়।
তার বাবার নাম মৃত মাহফুজুর রহমান। ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর দেয়া বক্তব্য ও আমাদের তদন্তে মজনুকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে গ্রেপ্তার করা হয় মঙ্গলবার দিনগত রাতে।
সারোয়ার বিন কাশেম বলে,ওই ছাত্রী ওইদিন ভুল করে কুর্মিটোলা বাসস্টপেজের কাছে নেমে যায়। এরপর মজনু তাকে ফলো করে এবং তার ওপর নির্যাতন চালায়। এরপর ওই ছাত্রীর রেখে যাওয়া মোবাইল-ব্যাগ নিয়ে যায় সে। এক পর্যায়ে পরিচিত এক নারীর কাছে ছাত্রীর মোবাইল ফোনটি বিক্রি করে দেয়।
এর আগে ঢাবি শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব)। র্যাব সূত্র জানায়, ধর্ষক পেশায় ফুটপাতের হকার। ওই এলাকায় হকারি শেষে রাতে আশেপাশে কোথাও থাকে।
সারওয়ার বিন কাশেম জানায়, ধর্ষণের শিকার ছাত্রীকে গ্রেপ্তার করা ব্যক্তির ছবি দেখানো হয়েছে। তিনি তাকে ধর্ষক বলে শনাক্ত করেছেন। একই ঘটনায় আরও তিন জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ধর্ষণের শিকার ওই শিক্ষার্থীর মোবাইল ফোন উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
০৭.০১.২০ তারিখ রাতে র্যাব-১-এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল শাফিউল্লাহ বুলবুল বলেছিলেন, আমরা তিনজনকে শনাক্ত করেছি। তারা আমাদের নজরদারিতে রয়েছে। প্রকৃত ধর্ষক নিশ্চিত হওয়ার পর যেকোনো সময় অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে।
প্রসঙ্গত, ০৫.০১.২০ তারিখ রোববার বিকাল ৫টা ৪০ মিনিটের দিকে ওই ঢাবি শিক্ষার্থী শেওড়া এলাকায় তার বান্ধবীর বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে করে রওনা দেয়। সন্ধ্যা ৭টার দিকে বাসটি ক্যান্টনমেন্ট থানার কুর্মিটোলা বাসস্ট্যান্ডে থামে। ওই শিক্ষার্থী বাস থেকে নেমে ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় আর্মি গলফ ক্লাব মাঠ সংলগ্ন স্থানে পৌঁছালে পেছন দিক থেকে অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি তার গলা চেপে ধরে মাটিতে ফেলে দেয়। এ সময় ওই শিক্ষার্থী অজ্ঞান হয়ে পড়লে ধর্ষণ করে। পরে তাকে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, তার শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। তবে তিনি ভীষণভাবে ট্রমাটাইজড। তার চিকিৎসায় সাত সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে।