স্টাফ রিপোর্টারঃসোনারগাঁয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন চত্বরে ১৪.০১.২০ তারিখ মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে মাসব্যাপী লোক কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব। মেলা উপলক্ষে ইতিমধ্যে ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ সকল প্রকার প্রস্তুতি শেষ করেছে। মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেসংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি।
ফাউন্ডেশনের পরিচালক ড. আহমেদ উল্লাহর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবে, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আবু হেনা মোস্তফা কামালসহ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
১৩.০১.২০ তারিখ সোমবার দুপুরে ফাউন্ডেশনের লাইব্রেরী মিলনায়তনে সাংবাদিক সম্মেলনে ফাউন্ডেশনের পরিচালক ড. আহমেদ উল্লাহ এসব কথা সাংবাদিকদের জানান। এবারের মেলার শতবর্ষে বঙ্গবন্ধু লোকজ উৎসব পালন করা হবে।
তিনি আরো জানায়, বিকেল ৩টায় ফাউন্ডেশন চত্বরে সোনারতরী লোকজ মঞ্চে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবে প্রধান অতিথি সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি। মেলা চত্বর প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। ১৪.০১.২০ তারিখ মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া মেলা চলবে আগামী ১৪.০২.২০ তারিখ পর্যন্ত।
ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের পল্লী অঞ্চল থেকে ৬৪ জন কারুশিল্পী মেলায় প্রদর্শনীতে অংশ নিচ্ছে। তাদের জন্য ৩২টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ।
এর মধ্যে নওগাঁও ও মাণ্ডরার শোলা শিল্প, রাজশাহীর শখের হাড়ি, চট্টগ্রামের তালপাখা ও নক্শি পাখা, রংপুরের শত রঞ্জি, সোনারগাঁয়ের হাতি ঘোড়া পুতুল ও কাঠের কারু শিল্প, নক্শিকাঁথা, বেত ও বাঁশের কারুশিল্প, নক্শি হাতপাখা, সিলেট ও মুন্সিগঞ্জের শীতল পাটি, কুমিল্লার তামা-কাঁসা পিতলের কারুশিল্প, রাঙামাটি ও বান্দরবান জেলার ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীর কারু পণ্য, কিশোরগঞ্জের টেরা কোটা শিল্প, সোনারগাঁয়ের পাটের কারু শিল্প, নাটোরের শোলার মুখোস শিল্প, মুন্সিগঞ্জের পট চিত্র, ঢাকার কাগজের হস্ত শিল্পসহ মোট ১৫৪টি স্টল থাকছে।
এছাড়াও লোক কারু শিল্প মেলা ও লোকজউৎসবে বাউলগান, পালাগান, কবিগান, ভাওয়াইয়া ও ভাটিয়ালী গান, জারি-সারি ও হাছন রাজার গান,লালন সংগীত, মাইজভান্ডারী গান, মুর্শিদী গান, আলকাপ গান, গাঁয়ে হলুদের গান, বান্দরবান, বিরিশিরি, কমলগঞ্জের-মণিপুরী ক্ষুদ্র নৃ- গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, শরিয়তী-মারফতি গান, ছড়া পাঠের আসর, পুঁথি পাঠ, গ্রামীণ খেলা, লাঠি খেলা, দোক খেলা, ঘুড়ি ওড়ানো, লোকজ জীবন প্রদর্শনী, লোকজ গল্প বলা, পিঠা প্রদর্শনী ইত্যাদি থাকবে।
সরেজমিনে দুপুরে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের মেলার মাঠে গিয়ে দেখা যায়, ইতোমধ্যে মেলার বিভিন্ন স্টলের দোকানীরা তাদের পন্য সাজাতে শুরু করেছে। এছাড়া মেলার মুড়ি, মুরকির দোকান সাজিয়ে বসেছেন। যারা এখনও স্টল সাজাতে পারেননি তারা দোকান সাজানোর জন্য ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে।
বাংলাদেশ লোক ও কারু শিল্প ফাউন্ডেশনের উপ-পরিচালক রবিউল ইসলাম জানায়, ইতিমধ্যে মেলার প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। বাংলাদেশের লোক ও কারুশিল্পের ঐতিহ্য, দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিলুপ্তপ্রায় লোকজ ঐতিহ্যকে পুনরুদ্ধার, সংগ্রহ, সংরক্ষণ, গবেষণা, প্রদর্শন এবং পুনরুজ্জীবন এ মেলার মূল উদ্দেশ্য।