সোনারগাঁও প্রতিনিধিঃ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে পারিবারিক বিরোধের জের ধরে গৃহবধূ রওশন আরা জাহান (৩৩) কে বছরের পর বছর নির্যাতন করে আসছে তার স্বামী। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গৃহবধূ রওশন আরা অবশেষে সোনারগাঁ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছে পাষন্ড স্বামী ও তার ভাইদের বিরুদ্ধে।
(১লা ফেব্রুয়ারি) শনিবার দুপুরে তার স্বামী মাসুদুর রহমান সরকার ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে সোনারগাঁ থানায় এ লিখিত অভিযোগ দায়ের করে ভুক্তভোগী গৃহবধূ রওশন আরা জাহান।
উল্লেখ্য, রওশন আরা জাহান সোনারগাঁ উপজেলার ১১২নং দামোদরদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন সু-পরিচিত শিক্ষিকা, তিনি হামছাদী পূর্বপাড়া গ্রামের মৃত মোহাম্মদ সুবেদ আলী প্রধানের মেয়ে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ বছর পূর্বে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ উপজেলার বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের হামছাদী গ্রামের মৃত সুবেধ আলীর প্রধানের মেয়ে রওশন আরা জাহানের একই এলাকার মৃত আজগর আলী সরকারের ছেলে মাসুদুর রহমান (৪৮) এর সাথে ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক পারিবারিকভাবে বিবাহ হয়। বিয়ের কয়েক বছর পর থেকেই স্ত্রীর সাথে প্রায় সময়ই তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে শারীরিক ও অমানুষিক নির্যাতন চালায় তার স্বামী। তাদের সংসারে একটি পুত্র ও একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।গত ২৬ জানুয়ারি রবিবার তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে, গৃহবধূ রওশনকে তার স্বামী অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে এবং ঘরের দরজা বন্ধ করে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। একপর্যায়ে রওশন আরা চিৎকার করলে তার ভাসুর মাহবুবুর রহমান সরকার (৫৫) এর সামনে মিজানুর রহমান সকার (৫০), মশিউর রহমান সরকার (৪৬) সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যগন মুখমন্ডল চেপে ধরে মারাত্মক আঘাত করে আহত করে। আহত গৃহবধূকে দরজা বন্ধ করে বাইরে তালা দিয়ে রাখে এবং তার ভাইদেরকে ফোন দিয়ে বাড়িতে এনে ভয়-ভীতি দেখাইয়া জোরপূর্বক তিনটি ১০০ টাকা মূল্যের নন– জুডিশিয়াল অলিখিত স্ট্যাম্পে ভুক্তভোগী রওশন আরা জাহান ও ভাইদের স্বাক্ষর রেখে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ও ন্যাশনাল আইডি কার্ড ছিনিয়ে নিয়ে ঘরে বন্দী করে রাখে। বিগত পাঁচদিন পর কৌশলে বাড়ি থেকে বের হয়ে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেয় আহত গৃহবধূ।
এ বিষয়ে অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা সোনারগাঁ থানার এসআই আজিজুল হক অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করেছে। জানতে চাইলে সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান বলে, গৃহবধূকে নির্যাতনের একটি অভিযোগ পেয়েছি, অবশ্যই তদন্তের মাধ্যমে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।