আশিকুজ্জামানঃ র্যাব-১১ এর অভিযানে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানাধীন কতুবপুর এলাকায় ০২টি কারখানায় অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়ে অননুমোদিত যৌন উত্তেজক শরবত ও কয়েল উৎপাদনের দায়ে ১২ জন গ্রেফতার। প্রায় ৭,৩০০ বোতল যৌন উত্তেজক শরবত ও বিপুল পরিমাণ ভেজাল কয়েল জব্দ।
র্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধের উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতার আইন শৃংখলার সামগ্রিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিভিন্ন অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য র্যাব ফোর্সেস নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে থাকে। নকল ও ভেজাল খাদ্য, ঔষধ, প্রসাধনী এবং অন্যান্য সামগ্রীর বিরুদ্ধে র্যাব সব সময় সোচ্চার। অননুমোদিত ভেজাল ঔষধ ও অন্যান্য ভেজাল পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করণের সাথে সম্পৃক্তদের প্রায়শই র্যাবের নিয়মিত অভিযানের মাধ্যমে আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল অদ্য ১০ ফেব্র“য়ারি ২০২০ খ্রিস্টাব্দে সকাল ১০০০ ঘটিকায় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানাধীন কুতুবপুর এলাকায় অবস্থিত এম. কে ফুডস্ ও এম.এম কনজুমার নামক ০২টি কারখানায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়ে অননুমোদিত যৌন উত্তেজক লায়ন ফুড শরবত এবং ভেজাল কয়েল তৈরীর অপরাধে ১২ জনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা হলো ১। মোঃ সুমন মোলা(১৯), ২। মোঃ রকিবুল ইসলাম(২২), ৩। মোঃ ফয়সাল আহম্মেদ(১৯), ৪। মোঃ রাজু বেপারী(২৪), ৫। মোঃ খায়রুল আলম(৪৭), ৬। মোঃ হাবু বেপারী(৫০), ৭। মোঃ রাকিব হোসাইন(২৪), ৮। মোঃ আব্দুর রহমান(২৭), ৯। মোঃ আশরাফুল ইসলাম(২৫), ১০। মোঃ তাহমীদ ইসলাম(২৩), ১১। মোঃ আনোয়ার হোসেন(২২) এবং ১২। মোঃ রাশেদ গাজী(২৩)। এ সময় কারখানা ০২টি হতে আনুমানিক ৭,৩০০ বোতল অননুমোদিত যৌন উত্তেজক শরবত ও বিপুল পরিমাণ বিভিন্ন ব্রান্ডের কয়েল এবং পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত ০১টি কাভার্ড ভ্যানও জব্দ করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায় যে, উক্ত কারখানা ০২টি দীর্ঘদিন যাবৎ অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়ে অননুমোদিত যৌন উত্তেজক শরবত এবং ভেজাল কয়েল উৎপাদন ও বাজারজাত করে আসছে। এম.এম কনজুমার দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে জা¤¦ু, গাংচিল, ইগলু, ম্যাক্স, নাইট মাস্টার ইত্যাদি বিভিন্ন খ্যাতিসম্পন্ন ব্রান্ডের নামে কয়েল তৈরী ও পাকেটজাত করে বাজারে বিক্রি করে আসছে। এম.কে ফুডস্ এর উৎপাদনকৃত যৌন উত্তেজক লায়ন ফুডস শরবতগুলো প্যারাসিটামল পাউডার, টেস্টি সল্ট, স্যাগারিন, এমপিএস, ব্যাফেন, এসএস পাউডার, সোডিয়াম পাউডার, সাইট্রিক এসিড, ঘাম, ঘন চিনি, সাধারণ চিনি, ফ্লেভার ও রং সহ মোট ১৬টি ক্ষতিকারক রাসায়নিক উপাদান দিয়ে তৈরী করা হয়। যা জনস্বাস্থ্যের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। এই অননুমোদিত ভেজাল কয়েল ও যৌন উত্তেজক শরবত উৎপাদন করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করে আসছে বলে গ্রেফতারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করে। এভাবে কারখানা ০২টি অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়ে যৌন উত্তেজক শরবত এবং ভেজাল কয়েল উৎপাদন করে জনস্বাস্থ্যের ও রাষ্ট্রায়ত্ত¡ সম্পত্তির ব্যাপক ক্ষতি সাধন করে আসছে। তিতাস গ্যাস কোম্পানীর টেকনিশিয়ানের প্রাক্কলনে দেখা যায় কারখানা ০২টি দীর্ঘদিন ধরে প্রতি মাসে ৩০ লক্ষ ২৪ হাজার টাকার গ্যাস চুরি করে আসছে। পরবর্তীতে তিতাস গ্যাস কোম্পানী কর্তৃপক্ষ উক্ত কারখানাগুলোর অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে সোনারগাঁ থানায় আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধী।