সময়ের চিন্তা ডট কমঃ নারায়ণগঞ্জে ব্যাংক ডাকাতির প্রস্তুতিকালে হাতেনাতে দূর্ধর্ষ ৬ ডাকাতকে আটক করেছে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন টিম-১১। র্যাব-১১ এর অভিযানে নারায়ণগঞ্জের চাষাড়া হতে সশস্ত্র ব্যাংক ডাকাত চক্রের ০৬ সদস্য ডাকাতির প্রস্তুতিকালে গ্রেফতার, বিদেশী পিস্তল, দেশীয় ধারালো অস্ত্র ও মাইক্রোবাস জব্দ। র্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধের উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতার আইন শৃংখলার সামগ্রিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিভিন্ন অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য র্যাব ফোর্সেস নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে থাকে। র্যাব-১১ এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় প্রতারণা, অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়, চাঁদাবাজি, ডাকাতি, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও সংঘবদ্ধ অপরাধ দমনের লক্ষ্যে র্যাব অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতার ও আইনের আওতায় আনার জন্য র্যাব ফোর্সেস নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে।
এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল অদ্য ০৭ জুন ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে দুপুর ১ টায় নারায়ণগঞ্জ জেলার ফতুল্লা মডেল থানাধীন উত্তর চাষাড়াস্থ আর্মি মার্কেট সংলগ্ন এলাকায় এক বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে সশস্ত্র ব্যাংক ডাকাত চক্রের সদস্য ১। মোঃ ওমর ফারুক (২৫), সাং- ব্রাহ্মণদী, থানা- আড়াইহাজার, জেলা- নারায়ণগঞ্জ, ২। মোঃ ইমরান ভূইয়া @ ইমু (৩১), সাং- গোবিন্দপুর, থানা- সোনারগাঁ, জেলা- নারায়ণগঞ্জ, ৩। মোঃ ফয়সাল (২০), সাং- ঠেগুরিয়াপাড়া, থানা- আড়াইহাজার, জেলা- নারায়ণগঞ্জ, ৪। মোঃ সিব্বির আহম্মেদ (২৪), সাং- নোয়াবদা, থানা- আড়াইহাজার, জেলা- নারায়ণগঞ্জ, ৫। মোঃ সালাউদ্দিন (২৩), সাং- নোয়াবদা, থানা- আড়াইহাজার, জেলা- নারায়ণগঞ্জ ও ৬। মোঃ সবুজ (১৯), সাং- দস্তরদী, থানা- মধবদী, জেলা- নরসিংদী’কে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে আগ্নেয়াস্ত্র ও দেশীয় ধারালো অস্ত্রসহ হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় তাদের দখল হতে ০২ রাউন্ড গুলিসহ ০১টি বিদেশী পিস্তল, ০১টি ম্যাগাজিন, ০২টি চাপাতি, ০৩টি রামদা, ০১টি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়। ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত ০১টি মাইক্রোবাসও জব্দ করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায় যে, তারা সশস্ত্র ব্যাংক ডাকাত চক্রের সক্রিয় সদস্য। নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন বাণিজ্যিক ব্যাংক হতে ব্যবসায়ীগণ নগদ টাকা উত্তোলন করে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড দিয়ে যাওয়ার সময় এই সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্র দীর্ঘদিন ধরে মাইক্রোবাসযোগে সশস্ত্র অসস্থায় নির্জন স্থানে ব্যারিকেড দিয়ে ডাকাতি করে আসছে। এই ডাকাত দলের সদস্যরা প্রধানত নারায়ণগঞ্জের বড় বড় ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে থাকে। যে ব্যবসায়ীরা ব্যাংক থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা উত্তোলন করে তারাই মূলত এই ডাকাত চক্রের প্রধান টার্গেট। ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করার পর থেকেই এই ডাকাত দল মাইক্রোবাসযোগে টাকাসহ ব্যবসায়ীকে অনুসরণ করতে থাকে। নির্জন স্থানে পৌঁছানো মাত্র মাইক্রোবাস দিয়ে ব্যারিকেড দিয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ব্যাংক থেকে উত্তোলিত টাকা ডাকাতি করে। সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ঘটে যাওয়া বেশ কয়েকটি চাঞ্চল্যকর ডাকাতির সঙ্গে এই সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের সদস্যরা জড়িত ছিল মর্মে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়। দুষ্কৃতিকারী ডাকাতরা ডাকাতি করতে গিয়ে জনসাধারণকে গুলি করা থেকে শুরু করে মারধর, ছুরিকাঘাত ও গাড়ি ভাংচুরসহ গুরুতর জখম করে থাকে। দীর্ঘদিন দিন ধরে তারা ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ মহাসড়কসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় তাদের অপরাপর সহযোগীদের নিয়ে ডাকাতি করে আসছে। ডাকাতি সংক্রান্ত এই সকল তথ্যের ভিত্তিতে প্রায় ০২ মাস যাবৎ গোয়েন্দা নজরদারীর মাধ্যমে এই ডাকাত দলকে সনাক্ত করে র্যাব। অতঃপর অত্র ব্যাটালিয়নের একটি চৌকস আভিযানিক দল কর্তৃক অদ্য ০৭ জুন ২০২০ খ্রিস্টাব্দে ১৪০০ ঘটিকার সময় ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের উত্তর চাষাড়াস্থ আর্মি মার্কেটের সামনে হতে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে সশস্ত্র অবস্থায় সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের ০৬ সক্রিয় সদস্যকে হাতে-নাতে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।