স্টাফ রিপোর্টারঃ প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে অধিক ঝুঁকিতে থাকা লাল ও হলুদ জোনে ছুটি ঘোষণা করেছে সরকার। এছাড়া সবুজ জোনে অফিস ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান সীমিত পরিসরে খোলা থাকবে।
সোমবার (১৫ জুন) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মাঠ প্রশাসন সমন্বয় অধিশাখা থেকে আজ জারি করা প্রজ্ঞাপনে এসব নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়, করোনা মোকাবেলায় লাল ও হলুদ জোনে অবস্থিত সামরিক ও অসামরিক সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি দপ্তরসমূহ এবং লাল ও হলুদ অঞ্চলে বসবাসকারী বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা সাধারণ ছুটির আওতায় থাকবেন। আগামী ১৬ জুন থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকবে। সাপ্তাহিক ছুটিও এ নিষেধাজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত হবে।
সবুজ অঞ্চলের অফিসগুলো নিজ ব্যবস্থাপনায় সীমিত পরিসরে খোলা থাকলেও সেসব অফিসে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলেও আদেশটিতে জানানো হয়েছে। এতে আরও বলা হয়েছে, লাকডাউনের আওতায় রাত আটটা থেকে ভোর ছয়টা পর্যন্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে যাওয়া যাবে না। নির্দেশনা ভঙ্গকারীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে।
এছাড়া সবুজ জোন এবং অনুমোদিত অঞ্চলে সীমিত পরিসরে নির্দিষ্টসংখ্যক যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন, যাত্রীবাহী নৌযান, রেল ও বিমান চলাচল করতে পারবে। তবে সর্বাবস্থায় মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্য বিভাগ কর্তৃক জারি করা নির্দেশনা কঠোরভাবে নিশ্চিত করতে হবে।
শিল্প কারখানাগুলো যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করে কারখানা চালু রাখতে পারবে। অঞ্চলভিত্তিক ব্যাংকগুলো নিয়ন্ত্রিত ব্যাংকিং ব্যবস্থা চালু রাখতে পারবে। এ ব্যাপার নির্দেশনা দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই সময়কালে কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা যাবে না। তবে, অনলাইনে ক্লাস অব্যাহত থাকবে।
হাটবাজার, দোকানপাট এবং শপিংমলগুলো বিকেল ৪টার মধ্যে বন্ধ করে দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া শপিংমলের প্রবেশমুখে হাত ধোয়া বা স্যানিটাইজারের ব্যবস্থাসহ শপিং মলে আগত যানবাহনসমূহকে জীবাণুমুক্ত করারও নির্দেশ দেয়া হয়। এ সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে ধর্মীয় উপাসনালয়ে প্রার্থনা কার্যক্রম চালাতে কোন বাধা নেই বলেও আদেশে উল্লেখ করা হয়।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) ও করোনা সংক্রান্ত মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক মো. হাবিবুর রহমান খান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘রেডজোন কিংবা ইয়োলো জোন এখনো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বা অধিদপ্তর কতৃক ঘোষণা করা হয়নি। এটি প্রণয়নে কাজ চলছে, কাজ সম্পন্ন হলে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তা জানানো হবে।’
এর আগে, দুই মাসের বেশি সময় সারাদেশে লকডাউন জারি রাখার পর ৩১ মে থেকে বেশিরভাগ বিধিনিষেধ তুলে নেয় সরকার। তবে প্রতিদিেই সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে এলাকা ভিত্তিক সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার অনুযায়ী লাল, সবুজ ও হলুদ জোনে ভাগ করে প্রয়োজন অনুযায়ী বিধিনিষেধ আরোপের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।