নিজস্ব প্রতিনিধিঃ র্যাব-১১ এর অভিযানে ঢাকার তাঁতীবাজার হতে আন্তজার্তিক স্বর্ণ চোরাচালানের অন্যতম হোতা শ্যাম ঘোষ গ্রেফতার। তার কাছ থেকে ০৬টি স্বর্ণের বার ও নগদ ৩০ লক্ষ টাকা উদ্ধার। র্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধের উৎস উদঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতার আইন শৃংখলার সামগ্রিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিভিন্ন অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য র্যাব ফোর্সেস নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে থাকে। র্যাব-১১ এর দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় প্রতারণা, অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়, চাঁদাবাজি, ডাকাতি, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ও সংঘবদ্ধ অপরাধ দমনের লক্ষ্যে র্যাব অত্যন্ত পেশাদারিত্বের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতার ও আইনের আওতায় আনার জন্য র্যাব ফোর্সেস নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে।
এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-১১ এর একটি আভিযানিক দল গত ১০ জুন ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে বিকাল ১৭৩০ ঘটিকায় ডিএমপি ঢাকার তাঁতীবাজার এলাকায় এক বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে আন্তজার্তিক স্বর্ণ চোরাচালানের একজন অন্যতম হোতা ও স্বর্ণ পাচার মামলার পলাতক আসামী শ্যাম ঘোষ (৪৬)কে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে শ্যাম ঘোষ এর স্বীকারোক্তি মোতাবেক তাঁতীবাজারে তার দোকানে অভিযান পরিচালনা করে ৬টি স্বর্ণের বার যার ওজন ৭০০.৫০ গ্রাম ও চোরাচালানকৃত স্বর্ণ বিক্রয়ের নগদ ত্রিশ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়।
উল্লেখ্য গত ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ তারিখ র্যাব-১১ এর বিশেষ অভিযানে ঢাকা জেলার দোহার থানাধীন মৈনট ঘাট এলাকায় হতে অবৈধ স্বর্ণ পাচারকালে ২০০টি স্বর্ণের বারসহ আন্তর্জাতিক স্বর্ণ চোরাচালান চক্রের ০৫ জন সদস্যকে হাতে নাতে গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধারকৃত ২০০টি স্বর্ণের বারের ওজন সর্বমোট ২৩ কেজি ৩২৮ গ্রাম, যার বাজার মূল্য আনুমানিক নয় কোটি টাকা। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে চোরাচালান আইনে একটি নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়। মামলাটি বর্তমানে র্যাব তদন্তকরছে। আদালতে ফৌঃকাঃবিঃ ১৬৪ ধারায় গ্রেফতারকৃত আসামীদের প্রত্যেকের দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে একটি বিষয় উঠে আসে যে এই স্বর্ণের চোরাচালানের অন্যতম হোতা শ্যাম ঘোষ নামের তাঁতীবাজার এলাকার এক ব্যবসায়ী এবং সে এই পাচারকৃত স্বর্ণের মূল মালিক। এছাড়াও গত ৩১ মে ২০১৯ তারিখে দৈনিক সমকাল পত্রিকায় ‘‘দিনে কোটি টাকার স্বর্ণ পাচার’’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদে অবৈধ স্বর্ণ পাচারকারী হিসেবে শ্যামের নামটিও উঠে আসে। উক্ত সংবাদে বলা হয় গত ২৭ মে ২০১৯ তারিখে ১০৩ টি স্বর্ণের বারসহ আব্দুস সালাম নামে এক স্বর্ণ পাচারকারীকে ঢাকা বিমান বন্দরের গ্রিন চ্যানেল এলাকা হতে পুলিশ কর্তৃক গ্রেফতার করতঃ বিমান বন্দর থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়। রিমান্ডে আব্দুস সালাম জানায় যে ঢাকার তাঁতীবাজারের জনৈক শ্যাম ও কৃষ্ণা নামে দুই ব্যবসায়ী তার কাছ থেকে চোরাই স্বর্ণ কিনত।
র্যাবের তদন্তাধীন এই মামলায় দীর্ঘদিন শ্যাম ঘোষ পলাতক ছিল। অভিযুক্ত শ্যামকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাব-১১ বেশ কয়েকটি স্থানে অভিযান পরিচালনা করে সর্বশেষ গত ১০ জুন ২০২০ তারিখে ডিএমপি ঢাকার তাঁতীবাজার এলাকা হতে শ্যাম ঘোষ’কে গ্রেফতার করা হয় এবং এই মামলায় তাকে দুই দফায় মোট ০৬ দিনের রিমান্ডে আনা হয়। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে বেশকিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া যায়। সে আর্ন্তজাতিক স্বর্ণ চোরাচালানের একটি সেন্ডিকেট এর মূলহোতা। এছাড়াও স্বর্ণ চোরাচালান সম্পর্কে শ্যাম ঘোষ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেয়। তার তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৪ জুন ২০২০ তারিখে ডিএমপি ঢাকার তাঁতীবাজার এলাকায় তার দোকানে অভিযান পরিচালনা করে চোরাচালানকৃত ০৬টি স্বর্ণের বার ও নগদ ৩০ লক্ষ টাকা উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীকে ০৬ দিনে রিমান্ড শেষে আজ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়াও জিজ্ঞাসাবাদে যে সকল তথ্য পাওয়া গেছে সেগুলো যাচাই-বাচাই করা হচ্ছে। স্বর্ণ চোরাচালানে জড়িত ব্যক্তিদের সনাক্ত ও তাদের গ্রেফতার করার লক্ষ্যে র্যাবের অভিযান অব্যাহত থাকবে।