ফেরারী কাউন্সিলর দিনার সহযোগিতায় ৬ষ্ঠ শিশুর জন্ম

610

নিজস্ব প্রতিবেদক : মিথ্যে মামলার কারণে পলাতক জীবন যাপন করার পরও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর আয়শা আক্তার দিনার সার্বিক সহযোগিতায় জন্ম নিল আরও এক শিশু। এই নিয়ে মহামারী করোনা চলাকালীন তার সহযোগিতায় ৬জন অসহায় গর্ভবতী নারী শিশুপুত্রের জন্ম দিলেন। নিঃস্বার্থ যে কাজের জন্য নারায়ণগঞ্জবাসী তাকে ‘মানবতার মা’ উপাধি দিয়েছেন।

মঙ্গলবার(২৩ জুন) সন্ধ্যা ৬টা ২০ মিনিটে শহরের ডনচেম্বারে অবস্থিত আল-মক্কা হাসপাতালে সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে জন্ম নেয় শিশুটি। এসময় উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী সোনিয়া দেওয়ান প্রীতি।

এ প্রসঙ্গে কাউন্সিলর আয়শা আক্তার দিনা এক ফেসবুক স্টেটাসে লিখেছেন- ‘‘আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ পাকের অশেষ মেহেরবানিতে ফেরারী জিবনে থেকেও আজ সন্ধ্যা ৬.২০ মিনিটে আমার সার্বিক সহযোগিতায় ষষ্ঠ বারের মতো জন্ম নিলো আরো এক পুত্র সন্তান।গোদনাইল ১০ নং ওয়ার্ড নিবাসী আমার এক পরিচিত বোন হঠাৎ করেই দুপুরে ফোন করে বললো সে গর্ভবতী এবং সকাল থেকেই তার ডেলিভারী ব্যাথা লকডাউন এবং করোনায় তার স্বামী তিন মাস যাবত বেকার।সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নানান ভাবে টাকা জোগার করার চেস্টা করে কোন উপায় না পেয়ে আমাকে ফোন দিলো।লোক মুখে করোনা কালীন সময়ে অসহায় গর্ভবতী মায়েদের জন্য আমার ডেলিভারী কার্যক্রম এর কথা শুনে তারা আমার সরনাপন্ন হয়েছে।প্রথমে তারা আমার বাসায় যায় এবং বাসায় গিয়ে জানতে পারে একটি মিথ্যা মামলায় আমরা পুরো পরিবার ফেরারী।কিন্তু এই অবস্হায় থেকেও গত পরশু আরো একটি অসহায় গর্ভবতী বোনকে ডেলিভারিতে সহোযোগিতা করেছি শুনে আমার নাম্বার জোগার করে আমাকে ফোন দেয় এবং এও বলে আমরা জানি আপনি নিজেই এখন বিপদে আছেন তাও আমরা উপায় না পেয়ে আপনার সহোযোগিতা চাচ্ছি।তখন আমি সাথে সাথে তাদের কে বলি ডনচেম্বার এলাকার আল মক্কা হাসপাতালে রোগীকে নিয়ে আসতে এবং আমিও ঐ খানে আসতাছি।তারপর দুপুর ৩ টায় তারা হাসপাতালে আসলে আমি তাদের রিসিভ করে আল মক্কা হাসপাতালে নিয়ে যাই এবং সাথে সাথে ডাক্তার নার্স সহ আল মক্কা হাসপাতালের সকলের সহোযোগিতায় সন্ধ্যা ৬.২০ মিনিটে সিজারের মাধ্যমে জন্ম নেয় এক ফুটফুটে পুত্র সন্তান। মজার বিষয় হলো এ পর্যন্ত আমি যতগুলি গর্ভবতী মায়ের দায়িত্ব নিয়েছি সবগুলিই পুত্র সন্তান হয়েছে।আল্লাহপাকের দরবারে কোটি কোটি শোকরিয়া মা ও সন্তান দুজনই সুস্হ আছেন।প্রতিবারের মত এবার ও এই নবাগত শিশু ও মায়ের একমাসের খাবার ও হাসপাতালের বিল সহ সকল দায়িত্ব আমি নিলাম।বিশেষ ধন্যবাদ সাংবাদিক ও মানবাধীকার কর্মি সোনিয়া দেওয়ান প্রীতি আপাকে সার্বক্ষনিক সার্পোট এর জন্য।আর যাকে ধন্যবাদ না দিলে অকৃতজ্ঞতা হয়ে যাবে সে হলো নারায়নগন্জ ৫ আসনের সাবেক এম পি আবুল কালাম ভাই এর একমাত্র সুযোগ্য পুত্র নারায়নগন্জ মহানগর বি এন পির সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কাউসার আশা বাবাটা।যে সার্বক্ষনিক ভাবে লোকজন দিয়ে এই ডেলিভারি পর্যন্ত সকল কাজে আমাকে সহোযোগীতা করছে এবং হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বারবার বলে দিয়েছে আমার ফুপু কাউন্সিলর দিনা রোগী নিয়ে আসছে তাকে সর্বাত্মক সহোযোগিতা করবেন এবং আমার ফুপুর রোগীর যেনো কোন সমস্যা না হয়। আবার বলবো আপনার আশে পাশের যারা অসহায় গর্ভবতী তাদের প্রতি একটু খেয়াল রাখবেন।এই মহামারি তে রাজনীতি বাদ দিয়ে আসুন আমরা সবাই মানব সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখি।বেচে থাকলে রাজনিতী করার অনেক সময় পাবেন কিন্তু মানব সেবার সুযোগ আল্লাহপাক সবসময় দেন না।হেরে যাক ওদের হিংসা জিতে যাক আমাদের মানবতা।।।সবাই ভালো থাকুন সুস্হ থাকুন।অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বের হবেননা।নিয়মিত মাক্স ব্যবহার করুন,সর্বদা পরিস্কার পরিচ্ছন্ন থাকুন এবং অবশ্যই আল্লাহপাকের দরবারে রহমত চান।একমাত্র তিনিই পারবেন আমাদের এই মহামারী থেকে রক্ষা করতে।আল্লাহপাক আমাদের সবাইকে বুঝার তৌফিক দান করুক,,,,,,,,, আমিন।আবারও বলবো হেরে যাক ওদের হিংসা জিতে যাক আমাদের মানবতা।’’

এদিকে, কাউন্সিলর আয়শা আক্তার দিনা মামলার কারণে পলাতক জীবন যাপন করায় ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ডের ৪৫৫টি ওএমএস কার্ড বিতরণ, ৪০টি বয়স্ক ভাতা, ৩৩০টি অসহায়-দরিদ্র পরিবারে ত্রান বিতরণ সহ এলাকার উন্নয়নমূলক কাজে ব্যাপক ব্যাঘাত সৃষ্টি হচ্ছে বলে জানা গেছে। এছাড়া ইতিমধ্যেই ১৩ দফায় আরও ৬০৬টি অসহায় পরিবারের জন্য ত্রাণ আসার পথে রয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

এ নারী জনপ্রতিনিধি জানান, ‘‘১২তম দফার ত্রাণ এর অনেক অংশই এখনও গোডাউনে পরে আছে, মামলার কারণে এরেস্ট হবার ভয়ে পলাতক থাকায় ওই ত্রাণ সামগ্রীগুলোই অসহায় পরিবারের মাঝে বিতরণ করতে পারছি না, তার উপরে ইতিমধ্যেই ১৩তম দফায় আরও ৬০৬টি অসহায় পরিবারের জন্য ত্রাণ এর প্যাকেট আসার পথে রয়েছে। এছাড়া বয়স্ক ভাতা, ওএমএস কার্ড পৌছানো বাকি। সব মিলিয়ে অনেক কাজ জমে গেছে, যা মামলার কারণে করা সম্ভব হচ্ছেনা। আমি চাইনা আমার এলাকার সাধারন মানুষ ত্রাণ থাকতেও খাবারের কষ্ট করুক। কিন্তু বাস্তবতাতো আপনারাই দেখতে পাচ্ছেন।’’