এলাকাভিত্তিক রেড জোনে পূর্ণাঙ্গ লকডাউনের বিকল্প ভাবছে সরকার

266

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ এবার রাজধানী ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন এলাকার বসবাসকারী নিম্নআয়ের বিভিন্ন পেশার মানুষের জীবিকা অব্যাহত রাখার সুযোগ করে দিতে এলাকাভিত্তিক রেড জোনে পূর্ণাঙ্গ লকডাউনের বিকল্প ভাবছে সরকার। প্রাথমিকভাবে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের করো’না সং’ক্রম’ণের উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় রেড জোন ঘোষণা করে গোটা এলাকা পূর্ণাঙ্গ লকডাউনের চিন্তাভাবনা করা হলেও এখন সে সিদ্ধান্ত থেকে সরকার সরে আসতে চায়।এজন্য আংশিক কিংবা নির্দিষ্ট বাড়িঘর লকডাউন করে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা কীভাবে অব্যাহত রাখা যায় সে বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে বিশেষজ্ঞরা দফায় দফায় আলোচনায় বসছেন। এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, আপাতত রাজধানীর অন্যান্য এলাকাসহ সারাদেশের বিভিন্ন জেলায় পূর্ণাঙ্গ লকডনের চিন্তা করছেন না তারা।

এর পরিবর্তে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে বিকল্প উপায়ে করোনা সংক্রমিত রোগীর জন্য স্বস্তিদায়ক পরিবেশে আইসোলেশন থাকার ব্যবস্থা করা, সং’ক্রমি’ত ব্যক্তির সংস্পর্শে যারা এসেছেন তাদের নমুনা পরীক্ষার সুযোগ করে দেয়ার পাশাপাশি কোয়ারেন্টাইনে রাখা এবং নিয়মিত মনিটরিংয়ের মাধ্যমে তাদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার সহজ উপায় খোঁজা হচ্ছে।তারা বলেন, রেড জোনে আ’ক্রা’ন্ত ব্যক্তির কারণে লকডাউন ঘোষণা করা হলে ওই এলাকায় বসবাসকারী নিম্নআয়ের ব্যবসায়ী, বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে কর্মরত চাকরিজীবীসহ অন্যান্য পেশার মানুষজন যেন আর্থিক ক্ষ’তির কবলে না পড়ে, ওই বিষয়টি প্রাধান্য দিয়ে সংক্রমণ প্রতিরোধ কার্যক্রম বাস্তবায়নের কৌশল নির্ধারণ করা হচ্ছে।তাহলে কেন আগে থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা রেড জোনে তালিকাভুক্ত হলো-এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, প্রাথমিকভাবে ওই তালিকা নিজেদের কাজের সুবিধার জন্য তৈরি করা হলেও কোনো না কোনোভাবে তা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। ওই তালিকা আনুষ্ঠানিকভাবে গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়নি।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও অধিদফতরের কর্মকর্তাদের ভাষ্য, ‘গত দুই মাসের বেশি সময় ধরে দেশের অর্থনীতি কর্মকাণ্ড স্থবির হয়ে আছে। এতে লাখ লাখ মানুষ আর্থিক সংকটে পড়েছে। জীবন ও জীবিকার তাগিদে এখন মানুষ স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ধীরে ধীরে ফিরতে শুরু করেছে। প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে রাস্তাঘাটে লোকজন চলাফেরা করছে, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, ছোট-বড় শপিংমল ও মার্কেট খুলেছে।এখন আবার কোনো এলাকা পূর্ণাঙ্গ লকডাউন করা হলে তার প্রভাবে অনেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।’এদিকে দুই সিটি করপোরেশনের মেয়র ফজলে নূর তাপস ও আতিকুল ইসলাম বলেছেন, স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে রেড জোনভুক্ত এলাকার সুনির্দিষ্ট তালিকা পেলে এবং কী কী উপায়ে লকডাউন করা হবে তা জানানো হলে তারা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি শেষ করে লকডাউন কার্যকরের ব্যবস্থা নেবেন।

জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছেন, জীবন ও জীবিকার ভারসাম্য রক্ষা করে করো’নাভাই’রাস সং’ক্রম’ণ রোধে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা লকডাউন করা হবে। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, যেকোনো এলাকা লকডাউন করার আগে ওই এলাকা সম্পূর্ণরূপে লকডাউন করার আ-দৌ প্রয়োজন আছে কি-না,লকডাউন করা হলে ওই এলাকায় অবস্থিত অফিস-আদালতে উপস্থিতিজনিত সমস্যা হবে কি-না বা বা নিম্নআয়ের মানুষের আয়-রোজগারের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে কি-না তা বিবেচনা করতে হচ্ছে।তিনি বলেন, অধিক সংক্রমিত এলাকায় কী উপায়ে সংক্রমণ প্রতিরোধ করা যায় সে বিষয়টি বিশেষজ্ঞরা রিভিউ করছেন।