সরকারী বিজ্ঞাপন ও ক্রোড়পত্রের মাধ্যমে লোপাটকৃত বিপুল পরিমাল অর্থ উদ্ধারের প্রধানমন্ত্রী ও তথ্যমন্ত্রী দপ্তরে আবেদন

722

 

ক্রাইম রিপোর্টারঃ সরকারী বিজ্ঞাপন ও ক্রোড়পত্রের মাধ্যমে লোপাটকৃত বিপুল পরিমাল অর্থ উদ্ধারের প্রধানমন্ত্রী ও তথ্যমন্ত্রী দপ্তরে আবেদন করেছে্ন জাতীয় ভেজাল প্রতিরোধ ফাউন্ডেশন নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি সাংবাদিক সুলতান মাহমুদ। ২৭ জুলাই এই পত্র মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় পুরাতন সংসদ ভবন তেজগাঁও, ঢাকা-১২১৫  ও তথ্য মন্ত্রণালয় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার বাংলাদেশ সচিবালয়, ঢাকাতে আবেদন পেরন করেন।

আবে্দনে উল্লেখ করা হয়, পাঠক সমাদৃত প্রথম শ্রেণীর জাতীয় দৈনিক পত্রিকাগুলোর পাশাপাশি ঢাকা ও বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে অগণিত নামসর্বস্ব দৈনিক পত্রিকা প্রকাশিত হচ্ছে।এ ধরনের বহুসংখ্যক দৈনিক পত্রিকা অসত্য ঘোষণা দিয়ে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল কতিপয় অসাধু কর্মকর্তাকে গোপনে অনৈতিক সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে মিডিয়াভুক্ত ও অষ্টম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন করেছে বলে তালিকাভুক্ত হয়ে সরকারি বিজ্ঞাপন ও বিভিন্ন দিবসের ক্রোড়পত্র ছাপিয়ে প্রতি বছর সরকারের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে চলেছে। প্রসঙ্গত যে, সরকারি বিজ্ঞাপন ও বিভিন্ন দিবসের ক্রোড়পত্র প্রাপ্তিক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে গোপন অনৈতিক চুক্তি থাকে।

আবেদনে আরও বলা হয়, হাতেগোনা প্রথম শ্রেণীর কয়েকটি দৈনিক পত্রিকা বাদে অধিকাংশের নিজস্ব কার্যালয়ও নেই। কিছু কিছু পত্রিকার কার্যালয় আছে নামেমাত্র। আবার একই কার্যালয়ের ঠিকানা ব্যবহৃত হয় একাধিক পত্রিকার। অভিযুক্ত দৈনিক পত্রিকাগুলোতে কাগজে-কলমে সংবাদকর্মী নিয়োগ দেখানো হলেও অধিকাংশ পত্রিকায় বেতনভুক্ত সংবাদকর্মীসহ অন্যান্য কর্মী নিয়োগ দেয়া হয় না। সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কর্মীদের ভুয়া তালিকা দেয়া হয়। তদন্ত করলে এর শতভাগ সত্যতা পাওয়া যাবে। দেখা যায়, ওইসব পত্রিকাগুলোর প্রকাশক ও সম্পাদক একই ব্যক্তি। প্রকাশক-সম্পাদকরা পত্রিকায় একই পদে একাধিক ব্যক্তিকে বিনা বেতনে কর্মী নিয়োগ দিয়ে থাকেন। নিয়োগকৃতদের নিকট থেকে অনৈতিক অর্থ গ্রহণ করে তাদের নিকট পত্রিকার পরিচয়পত্র ও তথ্য মন্ত্রণালয়ের অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বিক্রি করেন এবং অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডধারীরা আবার মাসিক চুক্তিবদ্ধ। এসব কার্ডধারীরা মূলতঃ চাঁদাবাজি ও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে তদ্বির বাণিজ্যরত থাকেন। ফলে মহৎ সাংবাদিক পেশা কলুষিত হচ্ছে।

আবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়নের ঘোষণাপত্রে উল্লেখিত প্রচার সংখ্যা প্রকৃত প্রচার সংখ্যা থেকে বহুগুণ বেশি দেখানো হয়েছে. যা ১০০-১৫০ গুণেরও বেশি। পত্রিকার প্রচার সংখ্যা ১শ’ থেকে ঊর্ধ ১ হাজার হলেও প্রচার সংখ্যা দেখানো হয়েছে ১ লাখ ৬১ হাজার ১৫০ পর্যন্ত (সংযুক্ত কপি দ্রষ্টব্য)। অনেকগুলো পত্রিকা নিয়মিত প্রকাশিত না-হলেও সরকারি বিজ্ঞাপন ও ক্রোড়পত্র পেলেই ছাপানো হয়। সরকারি বিজ্ঞাপন ও ক্রোড়পত্র প্রাপ্তিতে সংশ্লিষ্ট সরকারি  কর্মকর্তাদের সাথে গোপন চুক্তি থাকে। চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর কর্তৃক বার্ষিক অডিটে ঝামেলা এড়াতে কিছু কিছু দৈনিক পত্রিকা স্বল্পসংখ্যক নিয়মিত ছাপনো হলেও তা বাজারজাত করা হয় না। রাজধানীর পল্টন, আরামবাগ ও ফকিরাপুলের প্রিন্টিং প্রেসগুলোতে প্রতিরাতে শুধুমাত্র নাম পাল্টে বহুসংখ্যক পত্রিকা ছাপনো হয়। এক্ষেত্রে প্রিন্টিং প্রেসগুলোর সাথে দৈনিক অথবা মাসিক চুক্তি থাকে। ঘোষণায় চাররঙা বলা হলেও সপ্তাহের শুক্র ও শনিবারসহ সরকারি ছুটির দিন সাদাকালো ছাপানো হয়। চুক্তি মাফিক অর্থ প্রাপ্তি সাপেক্ষে কোনরকম তথ্য-উপাত্ত যাচাই না-করেই চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর অডিট কার্যক্রম সম্পাদন করে। এভাবেই প্রথম শ্রেণীর দৈনিক পত্রিকাগুলো বাদে অধিকাংশ নামসর্বস্ব পত্রিকার মালিকরা অনৈতিকতার আশ্রয় নিয়ে সরকারি বিজ্ঞাপন ও ক্রোড়পত্রের মাধ্যমে সরকারের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে চলেছেন। অভিযুক্ত পত্রিকাগুলো অনৈতিক অর্থ প্রাপ্তির মাধ্যমে যার তার নিকট পরিচয়পত্র ও অ্যাক্রিডিটেশন কার্ড বিক্রি করে ভুয়া সংবাদপত্রকর্মী সৃষ্টির মাধ্যমে টাউট শ্রেণি তৈরিতে ভূমিকা রেখে চলেছে। ফলে সংবাদপত্র ও প্রকৃত সাংবাদিকদের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।

সংবাদপত্রের ভাবমূর্তি ও মর্যাদা রক্ষার্থে এবং বিপুল পরিমাণ সরকারি টাকা লোপাট থেকে রক্ষা পেতে এবং লোপাটকৃত সরকারী অর্থ উদ্ধারের জন্য নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া আবশ্যক। সাথে সাথে উল্লেখিত ধরনের দৈনিক পত্রিকাগুলো চিহ্নিত হওয়া আবশ্যক এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেয়া অত্যন্ত জরিরী।

মানবতার জননী, বঙ্গবন্ধু কন্যা, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সমীপে জনস্বার্থে ও দেশের স্বার্থে সাংবাদিক সুলতান মাহমুদের আরজ, গভীর থেকে নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে অসত্য ঘোষণাকৃত দৈনিক পত্রিকাগুলো চিহ্নিতকরণসহ গণমাধ্যমের মর্যাদা রক্ষার্থে ও সৎ সাংবাদিকতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এবং সরকারি টাকা লুটপাটকারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে সরকারী বিজ্ঞাপন ও ক্রোড়পত্রের মাধ্যমে লোপাটকৃত বিপুল পরিমাল অর্থ উদ্ধার করে দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখবেন বলে আশা করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটি ও সংস্থার চেয়ারম্যান এস এম মোরশেদ।