নিজস্ব প্রতিনিধিঃ করোনার হটস্পট জেলা নারায়ণগঞ্জ। এরইমধ্যে গতকাল বুধবার পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জে ৬১৮৬ জন আক্রান্ত, ১৩০জনের মৃত্যু। তবে টেস্টের সংখ্যা বাড়ানো হলে আক্রান্তের সংখ্যা আরো বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে নারায়ণগঞ্জে করোনা হাসপাতালে (খানপুর ৩শ শয্যা হাসপাতাল) কোভিড-১৯ টেস্টের ল্যাব রয়েছে। কিন্তুনারায়ণগঞ্জে লকডাউন স্থিতিশীল হয়ে যাওয়ায়। সড়কে যান চলাচল, গার্মেন্টস, বাজার স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে। আর ধীরে ধীরে চির চেনা রূপে ফিরে আসে নারায়ণগঞ্জ। যার ফলে আক্রান্তের সংখ্যা বহুগুণ বেড়ে যায়। শহরের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা গেছে, ২নং রেল গেইট থেকে দেওভোগ সড়কে ও জিম খানায় ইজি বাইকের স্ট্যান্ডের কারণে যানজট সৃষ্টি হয়েছে। কালীর বাজার বিভিন্ন দোকান পাটে পচন্ড ভীড়। ফতুল্লার বিসিকে দুপুর ২টায় শ্রমিকদের কারণে যানজটের সৃষ্টি হয়। জানাগেছে, প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে ২৬ মার্চ থেকে দেশব্যাপী সাধারণ ছুটি ঘোষনা করা হয় যা এখনো চলমান। ৮ এপ্রিল থেকে নারায়ণগঞ্জকে করোনার রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত করে লকডাউন ঘোষনা করে। সেই থেকে নারায়ণগঞ্জ কার্যত অচল হয়ে ছিল। মানুষের বিনা প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হওয়া প্রতিরোধে কাজ করতে থাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। কিন্তু গত ২৬ এপ্রিল থেকে সীমিত আকারে খুলতে থাকে তৈরী পোষাক কারখানাগুলো। রমজানে রোজাদারদের ইফতারের জন্য খুলে দেয়া হয় হোটেল রেস্তোরা। তারপর ঘোষনা আসে ঈদ উপলক্ষে দোকানপাট ও বিপনীবিতান খুলে দেয়ার। এসব কিছুর ফলে বানিজ্য নগরী নারায়ণগঞ্জেও এর প্রভাব পড়ে। নারায়ণগঞ্জের ব্যস্ততম বঙ্গবন্ধু সড়কের আশেপাশে ডিআইটি থেকে চাষাঢ়া পর্যন্ত ঘুরে দেখা গেছে রাস্তায় যানবাহন চলাচল আগের চেয়ে অনেকগুণ বেড়ে গেছে। তাছাড়া সড়কের ফুটপাতে অনেক স্থানে নানা পণ্যের পসরা নিয়ে বসতে দেখা গেছে হকারদের। শহরের চাষাঢ়া হকার মার্কেটের সবকটি দোকানই খোলা। তাছাড়া গার্মেন্টস কারখানা খুলে দেয়ার এ সংশ্লিষ্ট কর্মব্যস্ততাও বেড়ে গেছে নগরজুড়ে। এদিকে, গত কয়েকদিন আগেও শহরে পুলিশ সদস্যদের কঠোর অবস্থান দেখা গেলেও তা ভিন্ন রূপ। বিভিন্ন সড়কে পুলিশ চেক পোস্টগুলোও সরিয়ে নেয়া হয়েছে। এদিকে, ক্রমেই খারাপের দিকে যাচ্ছে নারায়ণগঞ্জ জেলার করোনা পরিস্থিতি। একদিকে যেমন সংক্রমণ এলাকা বাড়ছে; তেমনি মৃদু লক্ষণ নিয়ে এখনো শনাক্তের বাইরে অধিকাংশ রোগী ধীরে ধীরে জটিল হয়ে উঠছে। ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ প্রবণতায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলছে। তার ওপর সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে নেওয়া বিভিন্ন উদ্যোগ ঠিকমতো বাস্তবায়ন না হওয়ায় ও এসব উদ্যোগের বৈজ্ঞানিক দিক নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, করোনা পরিস্থিতির আরও অবনতির আশঙ্কা করছেন নারায়ণগঞ্জের বোদ্ধামহল। এই মুহূর্তে নারায়ণগঞ্জে করোনা সংক্রমণের সব পথই খোলা। লকডাউন শিথিলতায় মানুষকে ঘরে রাখার পরিবর্তে রাস্তায় নামার সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। যা নিয়ে নারায়ণগঞ্জের অবস্থা আরো ভয়াবহতায় দিকে দিয়ে যাচ্ছে বলে সচেতন মহল মনে করছেন।