সোনারগাঁয়ে মেঘনা গ্রুপের খোঁড়াখুঁড়ি,দুর্ভোগ ও ভোগান্তিতে এলাকাবাসী

619

সোনারগাঁ প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে মোগড়াপাড়া চৌরাস্তা গ্রোন্ড ট্রাংক রোডের সোনারগাঁয়ে মেঘনা গ্রুপের খোঁড়াখুঁড়ি ও ভাঙ্গাগড়ার খেলা, দুর্ভোগ ও ভোগান্তিতে এলাকাবাসী বলে জানা যায়। দিন কিংবা সপ্তাহ নয়-মাসের পর মাস ধরে চলে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ। অপরিকল্পিতভাবে রাস্তা খুঁড়ে গ্যাস সংযোগ নিচ্ছে মেঘনা গ্রুপ। দেখা যায়, গোটা রাস্তা সংস্কার ও পুনঃনির্মাণনের পর আবার একই রাস্তায় গভীর খনন চলছে। এতে করে একই রাস্তা বার বার খনন করার কারণে রাস্তার অস্তিত্ব থাকে না। তখন গাড়ি চলা তো দূরের কথা পায়ে হাঁটাও কষ্টকর হয়ে ঐ রাস্তাকে ঘিরে সৃষ্টি হয় ভয়াবহ তীব্রযানজট ও ভোগান্তি পড়ে সোনারগাঁবাসী। এর ফলে মোগড়াপাড়া চৌরাস্তা গ্রোন্ড ট্রাংক রোড থকে উপজেলার সামনে পর্যন্ত চলাচল বন্ধ রয়েছে। সেই সাথে জনসাধারণের চলাচল চরম দুর্ভোগে পৌচেছে। এরই মধ্যে সড়কের কোথাও কোথাও ধ্বসে গেছে। এতে করে সড়কগুলো পরিণত হয়েছে মরণফাঁদে। প্রতিদিনই এসব সড়কে ঘটছে দুর্ঘটনা। ওয়াসা, তিতাস গ্যাস বিভাগসহ নানা উন্নয়ন সংস্থার দফায় দফায় খোঁড়াখুঁড়ির কারণেই সোনারগাঁয়ের-বেশিরভাগ রাস্তাঘাটের এই বেহাল দশা।

অপরিকল্পিত খোঁড়াখুঁড়ি ছাড়াও এসব সড়কের অনেক জায়াগায় কার্পেটিং, পাথরকুচি ও ইট উঠে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। জানত চাইলে তিতাস গ্যাসের (পাইপ লাইন বিভাগের) সুপারভাইজার একজন কর্মকর্তা বলেন, নির্দেশ আছে বৃস্টির আগেই সব ধরনের খোঁড়াখুঁড়ির কাজ শেষ করতে হবে। এজন্যই দ্রুত খোঁড়াখুঁড়ির কাজ চলছে।

জানা যায়, সোনারগাঁয়ের ঐতিহাসিক গ্র্যান্ড ট্রাংক রোড ১৬ শতকে সুলতান শেরশাহ কর্তৃক নির্মিত হয়েছিল। প্রাচীনকালে সড়কপথে সোনারগাঁও থেকে সুদূর সিন্ধু নদ পর্যন্ত যাতায়াত ছিল। কিন্তু মেঘনা গ্রুপের খামখেয়ালিপনায় সড়কটির এখন বেহাল দশা। এই সড়ক দিয়ে উপজেলার ১০ টি ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করে। এইসব মানুষের কাছে সড়কটি এখন বিষফোড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জানা যায়, সরকার উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল রাখতে সড়কটি নির্মাণ করে দেয়। এরপর দীর্ঘ বছর পার হলেও সড়কটি মেরামত করা হয়নি। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত যানবাহন চলাচল করে। অফিস পাড়া থাকে মুখরিত। ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানগুলো হয় জমজমাট। মেঘনা গ্রুপের অপরিকল্পিতভাবে গ্যাস নেওয়ায় মাত্রতিরিক্ত দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এই সড়কে চলাচলকারী যাত্রীদের গুনতে জচ্ছে বাড়তি টাকা। এছাড়া জানজটের কবলে পড়ে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। রোগী নিয়ে হাসপাতালে আসতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।এর দু’পাশে ১৫ ফুটের মতো রাস্তা খালি ছিল যানবাহন চলাচলের জন্য। এতে করে ওই রাস্তায় রাত-দিন ভয়াবহ যানজট লেগেই আছে।

অটোচালক লিটন মিয়া বলেন, অপরিকল্পিতভাবে সড়ক দিয়ে গ্যাস লাইন নেওয়ায় চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে। সেই সাথে আছে দীর্ঘ যানজট। কিন্তু কিছুই করার নেই, পেটের তাগিদে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ সড়ক দিয়েই গাড়ি চালাতে হচ্ছে। আরেক অটোরিকশাচালক (সিএনজি) বাবুল মিয়া বলেন, অচিরেই গ্যাস সংযোগ নেওয়া বন্ধ না করা হলে আমাদের আয়ের পথ রুদ্ধ হয়ে যাবে।

স্থানীয় কবির হোসেন বলেন, দীর্ঘ বছর আগে সরকার উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল রাখার জন্য সড়কটি নির্মাণ করে দিলেও মেঘনা গ্রুপের খামখেয়ালিপনার কারনে সড়কটির এমন দশা হয়েছে। অনতি বিলম্বে এই গ্যাস নেওয়া কার্যক্রম বন্ধ না হলে উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা একেবারে ভেঙে পড়বে। তাই সংশ্লিষ্টদের উচিত জনসাধারণের কথা ভেবে সড়কটি দ্রুত উন্মুক্ত করে দেওয়া।

তিতাস গ্যাসের (পাইপ লাইন বিভাগের) সুপারভাইজার মো. গোলা রব্বানী বলেন, মেঘনা গ্রুপ অপরিকল্পিভাতেভাবে গ্যাস সংযোগ নিলে তার দ্বায়ভার আমাদের নয়। তা মেঘনা গ্রুপকেই নিতে হবে।

এব্যাপারে তিতাস গ্যাস কোম্পানীর ম্যানাজার জাফর উল আলমকে কল করলে তিনি কল ধরেননি।

এ বিষয় মেঘনা গ্রুপের জেনারেল ম্যানেজার কার্ত্তিক বাবু সাথে একধিকবার মুঠোফোনে ফোন করলে সে মুঠোফোন রিসিভ করে নাই।

সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আতিকুল ইসলাম জাতীয় ভেজাল প্রতিরোধ ফাউন্ডেশন নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি সাংবাদিক সুলতান মাহমুদকে বলেন, “ পরিকল্পিভাবে কাজ করলে জনসাধারণের এতো ভোগান্তি হতো না। আপনার কথা ঠিক যে,দিনে কাজ বন্ধ রেখে রাতে কাজ করলে জনগনের চলাচলে ভোগান্তি হত না। আমি তিতাস ও মেঘনা গ্রুপের সাথে কথা বলব। আপনিও তাদের সাথে কথা বলেন।”