স্বর্ণের দাম বেড়েছে প্রতিভরি ২ হাজার ৪১ টাকা

325

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস সংক্রমণের শুরু থেকে দাম বাড়তে থাকে আন্তর্জাতিক বাজারে। আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) দেশের বাজারেও স্বর্ণের বাড়িয়ে চলছে।

বর্তমানে ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) স্বর্ণের দাম ৭১ হাজার ৪৪৩ টাকা। ১২ দিনের ব্যবধানে নতুন দাম অনুযায়ী এ ভালোমানের স্বর্ণ ভরিতে বাড়ানো হয়েছে ২ হাজার ৪১ টাকা। যা রোববার থেকে কার্যকর শুরু হয়েছে। শনিবার বাজুস এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়। এর আগে চলতি বছরের ১০ মে বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে স্বর্ণের দাম পুনঃনির্ধানের খবর গণমাধ্যমকে জানিয়েছিল। বাজুস সাধারণ সম্পাদক দিলীপ কুমার আগরওয়ালার জানান, বিশ্বব্যাপী স্বর্ণের দাম বাড়ছে। আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ থাকায় ব্যাগেজ রুলে স্বর্ণ আসছে না। আমাদের স্বর্ণের বাজারেও দাম সমন্নয় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বাজুস নির্ধারিত নতুন মূল্য তালিকায় দেখা গেছে, ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরির দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৩ হাজার ৪৮৩ দশমিক ২০ টাকা। শনিবার পর্যন্ত এ মানের স্বর্ণের দাম ছিল ৭১ হাজার ৪৪২ টাকা। ভরিতে দাম বেড়েছে ২ হাজার ৪১ দশমিক ২০ টাকা।

২১ ক্যারেটের প্রতি ভরির দাম ধরা হয়েছে ৭০ হাজার ৩৩৩ দশমিক ৯২ টাকা। শনিবার পর্যন্ত দাম ছিল ৬৮ হাজার ২৯২ দশমিক ৭২ টাকা। দাম বেড়ছে ২ হাজার ৪১ দশমিক ২০ টাকা।
একইভাবে ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরির দাম পড়বে ৬১ হাজার ৫৮৫ দশমিক ৯২ টাকা। বর্তমান দাম ৫৯ হাজার ৫৪৪ দশমিক ৭২ টাকা। ভরিতে বেড়েছে ২ হাজার ৪১ দশমিক ২০ টাকা।
সনাতন পদ্ধতিতে স্বর্ণ প্রতি ভরির দাম ধরা হয়েছে ৫১ হাজার ২৬৩ দশমিক ২৮ টাকা। শনিবার পর্যন্ত দাম ছিল ৪৯ হাজার ২২২ দশমিক শূন্য ৮ টাকা। প্রতি ভরিতে দাম বেড়েছে ২ হাজার ৪১ দশমিক ২০ টাকা। নির্ধারিত নতুন মূল্য তালিকায় ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি রুপার দাম ১ হাজার ৫১৬ টাকা, ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ হাজার ৪৩৫ টাকা, ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি ১ হাজার ২২৫ টাকা ও সনাতন পদ্ধতিতে প্রতি ভরির দাম ৯৩৩ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
দেশের বাজারে এতদিন সনাতন পদ্ধতিতে রুপার ভরি বিক্রি হতো ৯৩৩ টাকায়। নতুন করে রূপার ক্যারেট শ্রেণি বিন্যাস করে দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে বাজুস। এদিকে বিশ্ববাজারে দাম বাড়ায় ঈদের আগে দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়। গত ১০ মে ভরিতে স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৩৩৩ টাকা বাড়ায় বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি। এখন নতুন করে দাম বাড়ানো হলে চলতি মাসে স্বর্ণের দাম দুই দফায় বাড়বে প্রায় সাড়ে চার হাজার টাকা।
এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারি ও মার্চ মাসে তিন দফায় দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম ভরিতে সাড়ে ৫ হাজার টাকার ওপরে কমানো হয়। বাজুস যখন স্বর্ণের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়, সে সময় বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ছিল ১ হাজার ৮৩৪ ডলার। গত দুই সপ্তাহ তা দফায় দফায় বেড়ে এখন ১ হাজার ৮৮১ ডলারে উঠেছে। অর্থাৎ বাংলাদেশে স্বর্ণের দাম বাড়ার পর বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম প্রায় ৫০ ডলার বেড়ে গেছে।
স্বর্ণের দাম ভরিতে কী পরিমাণ বাড়তে পারে? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমরা আলোচনা করে এটা ঠিক করবো। তবে আপনি ধরে নিতে পারেন, ভরিতে আনুমানিক দুই হাজার টাকার মতো বাড়তে পারে। বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দামে বড় পতন হয়। ফেব্রুয়ারিতে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম ৫ দশমিক ৯৪ শতাংশ কমে যায়। ফেব্রুয়ারির পতনের ধারা মার্চ মাসের শুরুতেও দেখা যায়। মার্চের প্রথম সপ্তাহে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম কমে ১ দশমিক ৮৮ শতাংশ।

বিশ্ববাজারে বড় পতন হওয়ায় মার্চ মাসে দু’দফায় দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম কমায় বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি। এর মধ্যে ১০ মার্চ ভরিতে স্বর্ণের দাম কমানো হয় ২ হাজার ৪১ টাকা। তার আগে ৩ মার্চ ভরিতে স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৫১৬ টাকা কমানো হয়। এছাড়া ১৩ জানুয়ারি ভরিতে স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৯৮৩ টাকা কমানো হয়। সে হিসেবে চলতি বছরে তিন ধাপে দেশের বাজারে ভরিতে স্বর্ণের দাম ৫ হাজার ৫৪০ টাকা কমানোর পর গত ১০ মে ২ হাজার ৩৩৩ টাকা বাড়ানো হয়।
গত এক সপ্তাহে বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম ২ দশমিক ১১ শতাংশ বেড়েছে। এতে মাসের ব্যবধানে স্বর্ণের দাম বেড়েছে ৫ দশমিক ৪৫ শতাংশ। এর মাধ্যমে সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম বেড়েছে ৩৯ ডলার। আর মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ৯৮ ডলার। গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে বিশ্বাবাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৮৮১ দশমিক ১০ ডলারে।