নিজস্ব প্রতিনিধিঃ মধুমাস জ্যৈষ্ঠে কাঁঠাল, আম, জাম, লিচু, কলা, আনারস, জামরুল, লটকন, গাব, বাঙ্গি, তরমুজসহ বিভিন্ন রসালো দেশি ফলে বাজার ভরপুর। দোকানগুলো ম ম করছে সুস্বাদু এসব ফলের ঘ্রাণে। জমে উঠেছে বেচাকেনাও।
রাজধানীর পাড়ামহল্লা, রাস্তাঘাট, ফুটপাত থেকে শুরু করে বড় বড় সুপারস্টোর সব জায়গায়ই এখন বৈচিত্র্যময় ফলে ভরা। রসালো ফলমূলে ভরে গেছে বিভিন্ন দোকান গুলো। অনেকে আবার ভ্যানে করেও ফল বিক্রি করছে। রাজধানীর পল্টন, সেগুনবাগিচা, যাত্রাবাড়ি, খিলগাঁও, মুগদাসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে নানারকম দেশি ফল বিক্রি করতে দেখা গেছে।
এদিকে দেশী লিচু নামতে শুরু হয়ে গেছে। এসব লিচু বাজারে আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ১০০ লিচু ২০০-৮০০ টাকা দরে। তবে এবার বৃষ্টি না হওয়ায় লিচুর আকারে খুব একটা বড় হয়নি। বৃষ্টি পেলেই এসব লিচু বড় ও সুন্দর রং আসবে এবং রসে ভরে যাবে। তারপরেও লিচু বলে কথা। এর কদর একটু বেশিই। শিশুদের কাছে লিচু খুবই পছন্দের। তাই দাম যতোই হোক সন্তানদের জন্য ২৫টা হলেও মানুষ কিনে নিয়ে যাচ্ছে। এভাবেই লিচু বিক্রেতা ক্রেতাদের আকর্ষণ করার জন্য লিচু তুলে ধরেন।
ব্যবসায়ীরা জানান, সরবরাহ বাড়ায় বাজার দেশি ফলে ভরপুর। রাজধানীতে দেশি ফলের মধ্যে এখন বেশি মিলছে আম ও লিচু।
মুগদা বাজারের ফল ব্যবসায়ী সেলিম মিয়া জানান, এখন জ্যৈষ্ঠ মাস, আম-লিচু বেশি পাওয়া যাচ্ছে।
রাজধানীর মধ্য বাড্ডায় ভ্যানে কাঁঠাল বিক্রি করছিলেন রফিকুল। দাম জানতে চাইলে তিনি বলেন, বড় কাঁঠাল ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, মাঝারি আকারের ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা। বড় কাঁঠালের ওজন ৫ থেকে ৬ কেজি। মাঝারি আকারের ওজন চার কেজির মত।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় আম বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৭০-১০০ টাকা কেজিতে। জাম প্রতি কেজি ২০০ টাকা, জামরুল ৫০ থেকে ৮০, সফেদা (কেজি) ১০০ থেকে ১৪০, লটকন ১৬০ টাকা কেজি।
বাজারভেদে আনারস আকারভেদে প্রতি পিস ২০ থেকে ৮০ টাকা, কলা ১০০ থেকে ১২০ টাকা ডজন, চায়না বাঙ্গি ৩০ থেকে ৮০ টাকা, বড় বাঙ্গি ১০০ থেকে ২০০ টাকা, বেল প্রতি পিস ৪০ থেকে ৮০ টাকা। কাঁচা তাল প্রতি পিস ২০ থেকে ৩০ টাকা। মতিঝিল এলাকায় লিচু কিনছিলেন কালাম হোসেন। তিনি বলেন, রোজায় দাম বেশি ছিল, এখন কিছুটা কমেছে। ছোট ছোট একশ লিচু কিনেছি ২০০ টাকা দিয়ে। তবে আমের দাম এখনও তেমন কমেনি দাবি করে এ ক্রেতা বলেন, এখন আমের মৌসুম, দাম এতো বেশি হবে কেন? ইচ্ছে মতো দাম রাখে। তবে দোকানের চেয়ে ভ্যানে ফলের দাম কম। ভ্যানে যে আম ৬০-৭০ টাকা একই আম দোকানে ৯০-১০০ টাকা।
অর্থাৎ কেজিতে ২০-৩০ টাকা বেশি।ফলে বাজার ভরপুর হলেও দাম নিয়ে অস্বস্তিতে ক্রেতারা। দাম নাগালের বাইরে বলে অভিযোগ ফলপ্রেমীদের। এদিকে নতুন ফলের চাহিদা বেশি হওয়ায় দাম চড়া, বলছেন বিক্রেতারা। এছাড়া আড়তদারদের কাছ থেকে বেশি দামে কিনতে হচ্ছে বলে খুচরা বাজারেও দাম বেশি বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
খুচরা ব্যবসায়ী মনির বলেন, পাইকারি বেশি দামে কিনতে হচ্ছে যার কারণে বেশি রাখতে বাধ্য হচ্ছি। আমাদেরও তো কিছুটা লাভ করতে হবে। তারা যদি কম রাখে আমরাও ক্রেতাদের কাছে কিছুটা কম দামে বিক্রি করতে পারবো।
আম বিক্রেতা বাচ্চু মিয়া বলেন, ভালো জিনিসের দাম তো একটু বেশি হবেই। একটু বেশি দাম না দিলে কি ভালো জিনিস পাওয়া যায়?
এদিকে বাড়তি দামের কারণে দেশি ফল কিনতে নিরুৎসাহিত হচ্ছেন ফল প্রেমীরা। বাজারে নতুন ওঠা দেশি ফলের দাম বেশ চড়া বলছেন তারা। বাড়তি দাম দিয়ে মধু মাসে ফল কিনে খাওয়া মধ্যবিত্তদের জন্য অনেকটা দুঃসাধ্য। দাম বিবেচনায় কিনতে এসেও খালি হাতেই ফিরছেন অনেক ক্রেতা।