মোক্তার হোসেনঃ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে চৈতী কম্পোজিট নামে একটি শিল্প কারখানার বিরুদ্ধে আবারও জমি দখলের অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে জমির মালিক প্রবাসী হাজী শাকিল রানার স্ত্রী নাসরিন বাদী সোনারগাঁ থানায় ২৯ মে অভিযোগ দায়ের করেছে বলে জানা যায়।
অভিযোগে চৈতী কম্পোজিটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম, পরিচালক ফাহমিদা শাবনাম চৈতীসহ কোম্পানির উর্ধতন ১৬ কর্মকর্তার নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ১৫/১৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে শাকিলের স্ত্রী নাসরিন। অভিযোগে বলা হয়, সোনারগাঁ পৌরসভার ছোট শিলমান্দী, শ্রী নিবাসদী ও টিপরদী মৌজার বিভিন্ন দাগে ক্রয় ও পারিবারিকসুত্রে প্রায় ১৩৪ শতাংশ জমির মালিক হয়ে বিগত ১০ বছরেরও বেশি সময় ভোগ দখল করে আসছে শাকিল। জমির সীমানা স্পস্ট করাসহ জমিতে হাজী শাকিল রানার মালিকানা সম্বলিত সাইনবোর্ডও ঝুলানো রয়েছে। জমির মালিক দেশে থাকাবস্থায় দখল স্বত্ব ঠিক থাকলেও কাজের প্রয়োজনে শাকিল রানা প্রবাসে গেলে স্থানীয় সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে ফের দখলের উৎসবে মেতে উঠে চৈতী কম্পোজিটের মালিক আবুল কালাম। অভিযোগে বলা হয়, বিগত ০৭ মে ২০২১ইং তারিখ বিকালে তাদের মালিকানা সম্পত্তিতে লাগানো ৮ টি মালিকানা সাইনবোর্ড থাকা সত্বেও সেসব উচ্ছেদ করে ভেকু দিয়ে জমির মাটি কেটে দখলে নেয়ার চেষ্টা করে চৈতী কম্পোজিটের ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা। পরে প্রবাসী শাকিল রানার স্বজনরা দখলদারদের বাধা দিতে গেলে তাদেরকে মারধর ও হুমকী ধামকী প্রদান করে। বর্তমানে তার স্ত্রী ও পরিবারের লোকজনের জীবন হুমকীতে রয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এছাড়াও চৈতী গ্রুপের চলমান উন্নয়ন কাজে ছোটশীলমান্দী ও শ্রীনিবাসদী মৌজায় আরো অনেক নিরীহ কৃষকের জমিও জোরপূর্বক দখল করে মাটি কেটে ভরাট কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। জমির প্রকৃতমালিকরা আপত্তি জানালে তাদেরকে অফিসে যোগাযোগ করতে বলে, পরবর্তীতে ভয়ভীতি দেখিয়ে নামমাত্র মুল্যে জমি বিক্রি করে দিতে বাধ্য করে।
এ বিষয়ে সোনারগাঁ থানার অফিসার ইনচার্জ হাফিজুর রহমান বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তদন্ত করে দেখা যায় বিষয়টা জমি সংক্রান্ত তাই বাদীকে বিজ্ঞ আদালতে মামলা করতে বলা হয়েছে। আদালত নির্দেশ দিলে আমরা আইনত ব্যবস্থা নিব।
জমির মালিক শাকিল বলে, সোনারগাঁও থানা পুলিশ অদৃশ্য কারনে মামলা আমলে নিচ্ছে না। প্রায় ১৫ দিন যাবত আমরা থানায় দৌড়াইতেছি, পুলিশ তদন্ত করেছে কিন্তু মামলা রুজু করছে না। আমি পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।
এব্যাপারে চৈতীর এমডি আবুল কালামকে তার মোবাইলে কল করে পাওয়া যায় নাই।
এ ব্যাপারে ডিজিএম রবিউল বলে, আমি ঈদের পর থেকে চৈতিতে চাকুরি করি না, ডিজিএম এডমিন মিজান সাহেবের সাথে কথা বলেন।
এ ব্যাপারে ডিজিএম মিজানকে অনেক বার কল করলেও কল ধরেনি মিজান। হোয়াটস অ্যাপে মেসেজ দিয়েও কোন জবাব পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য,সোনারগাঁয়ের চৈতি কম্পোজিট লিমিটেডের বিষাক্ত বর্জ্য ও দুষিত পানি দিয়ে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ ও স্বাস্থ্য ঝুকিতে এলাকার মানূষ। তার প্রতিবাদে মানব বন্ধন করেছে স্থানীয় এলাকা বাসী।
২২ জুন ২০২০ ইং সোমবার চৈতি কম্পোজিট লিমিটেডের সামনে এই মানব বন্ধন করা হয়। মানুষে জমি জবর দখল করে প্রকাশ্যেই অবৈধভাবে পানির লাইন করার জন্য মোটা পাইপ বসানো হচ্ছে। সাদিয়া নাসরিন বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় ও পরে ইউএনও অফিসে অভিযোগ করে।যার অনুলিপি অনেক জায়গায় দেয়া হয়েছে কিন্তু কোন প্রতিকার না পেয়ে মানব বন্ধন করে এলাকাবাসী।
ভুক্তভোগী সাদিয়া নাসরিন বলে,“এর আগের ঘটনাও সোনারগাঁবাসীসহ দেশবাসী জানে। এম পি লিয়াকত হোসেন খোকাও এসে দেখেছেন গভীর সুরঙ্গ দিয়ে বিষাক্ত বর্জ্য ও দুষিত পানি খালে ফেলেছে চৈতী কম্পোজিট। আমরা স্বচ্ছ বিচার চাই। স্বাস্থ্য বান্ধব পরিবেশ চাই, অত্যাচার থেকে মুক্তি চাই”।