সোনারগাঁও প্রতিনিধিঃ-আওয়ামীলীগে নব্য যোগদানকারী নোয়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের বিতর্কিত চেয়ারম্যান সামসুর শেল্টারে চাঙ্গা নোয়াগাঁও ইউনিয়ন বিএনপি।
গত বছরের ২৮শে নভেম্বর নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিএনপিতে ভর দিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন সামসুল আলম সামসু। অথচ জাতীয়পার্টির শীর্ষ পদে থেকে তিনি বিএনপিকে ম্যানেজ করে সরকার বিরোধী ও সরকার পতনের ষড়যন্ত্রের আন্দোলনে নাশকতার ডজন ডজন মামলার আসামিদের নিয়ে নির্বাচনে নেমে জয়ী হোন। নির্বাচনকালে বিএনপি জামাত হেফাজতের সঙ্গে গোপন সম্পর্ক থাকলেও নির্বাচনের পর তিনি বিএনপি জামাত ও হেফাজতের উপর সম্পূর্ণ ভর করে চেয়ারম্যানশীপ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে স্থানীয়দের দাবি। স্থানীয়রা জানান- এমন চিত্রও পাওয়া গেলো এবার।
যদিও নির্বাচনের পরপরই উপজেলা আওয়ামীলীগের আহবায়ক ও উপজেলা চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভুঁইয়ার হাত ধরে আওয়ামীলীগে যোগদান করেন চেয়ারম্যান সামসু। আর আওয়ামীলীগে যোগদান করেই আড়াইহাজার উপজেলার একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে গিয়ে আওয়ামীলীগ ও জাতীয়পার্টি এবং আওয়ামীলীগ ও জাতীয়পার্টির শীর্ষ নেতাদের নিয়ে কটাক্ষ করে বেফাঁস কথাবার্তা বলেন তিনি। এক পর্যায়ে নোয়াগাঁও ইউনিয়নে তিনি নির্বাচিত হলেও নিজেকে তিনি আড়াইহাজারের সন্তান বলেও দাবি করেছেন এবং নোয়াগাঁও ইউনিয়ন এখন আড়াইহাজার মানুষেরই হয়ে গেছে বলেও দাবি করেন। ওই ঘটনার তীব্র সমালোচনার পরে বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আল আমিন সরকারের বিরোধীতা করে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মাহবুব সরকারের পক্ষে প্রকাশে ভোট প্রার্থনায় যান সামসুল আলম।
এদিকে স্থানীয়রা জানিয়েছেন- চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পরে আওয়ামীলীগে যোগদান করলেও সামসুল আলমের সাথে সার্বক্ষনিক সখ্যতায় দেখা যাচ্ছে বিএনপির লোকজনকে। এক সময় বিএনপির রাজনীতি করতেন সামসুল আলম। পরবর্তীতে তিনি জাতীয়পার্টিতে যোগদান করেন। উপজেলা জাতীয়পার্টির সহ-সভাপতির পদেও ছিলেন নির্বাচনকালে। জাতীয়পার্টির পদে থেকেই তিনি আওয়ামীলীগে যোগদান করেন। এসব কারনে স্থানীয়রা বলছেন- বিএনপি জামাত ক্ষমতায় আসলে আবারো যাতে বিএনপিতে প্রবেশ করতে পারে সেই রাস্তাও পরিস্কার করে রাখছেন সামসুল আলম। যে কারনে বিএনপি জামাতের নেতাকর্মীদের সঙ্গে তার উঠাবসাও দেখা যাচ্ছে।
ইউনিয়ন বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে সামসুল আলম চেয়ারম্যানি করছেন। বিএনপির লোকজনের সঙ্গে তার সখ্যতার ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। যার মধ্যে একটি ছবিতে ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক ড. মিজানুর রহমান, যুগ্ম আহবায়ক গোলজার হোসেন, যুবদল নেতা সিরাজ সহ অনেকের সঙ্গে সামসুল আলমের সখ্যতা। কেউ কেউ জানিয়েছেন- সম্প্রতি নোয়াগাঁও ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক কমিটি গঠন করেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আজহারুল ইসলাম মান্নান। সে কারনেই বিএনপির নতুন কমিটির নেতাদের সঙ্গে সখ্যতা তৈরি করেছেন তিনি। কেউ কেউ বলছেন- হয়তো নিজের শিকর পুরোনো দলে ফিরে যাচ্ছেন সামসু। যে কারনে বিএনপির কমিটিকে স্বাগত জানিয়েছেন তিনি।
২৮ নভেম্বর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর সামসুল আলম জাতীয়পার্টির পদে বহাল থেকেই ৪ ডিসেম্বর শনিবার দুপুরে সোনারগাঁ উপজেলা অডিটোরিয়ামে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম ভুইয়ার হাত ধরে আওয়ামীলীগে যোগদান করেন। ফুলের তোড়া দিয়ে আওয়ামীলীগে যোগদান করানো হয়।
এর দুদিনের মাথায় আড়াইহাজারে গিয়ে একটি অনুষ্ঠানে সামসু আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত, জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক আবু জাফর চৌধুরী ও কেন্দ্রীয় দিপক কুমার বনিক সহ বেশকজনের নাম উল্লেখ্য করে আওয়ামীলীগকে নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেন। ‘আওয়ামীলীগ একটা দল, ৭টা ৮টা খন্ড, কায়সার গ্রুপ, বিরু গ্রুপ, বনিক গ্রুপ, এই গ্রুপ, সেই গ্রুপ’ এ ধরণের মন্তব্যও করেন সামসুল আলম।