অবৈধ স্ট্যান্ড বসিয়ে কোটি টাকার চাঁদাবাজি

179

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধিঃ নারায়ণগঞ্জ জেলার প্রাণকেন্দ্র নগরীর চাষাড়ায় সড়ক-মহাসড়ক দখল করে গড়ে উঠেছে অবৈধ লেগুনা, সিএনজি, বাস স্ট্যান্ড। এতে বছরে কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে একটি মহল। এক দিকে ফুটপাত দখল, অপরদিকে অবৈধ সড়ক দখলের কারণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে যাত্রী-পথচারীরা।

চাষাড়া থেকে সাইনবোর্ড, চাষাড়া থেকে পঞ্চবটি, চাষাড়া থেকে চিটাগাং রোড ও চাষাড়ার সমবায় মার্কেটের সামনে থেকে মুক্তারপুর পর্যন্ত চারটি রুটে যাতায়াত করে ৫ শতাধিক সিএনজি।

এছাড়াও এসব রুটে ৪ হাজার অটো রিক্সা ও শতাধিক লেগুনা চলাচল করছে নিয়মিত। এসব যানবাহন নিজেদের ইচ্ছে মত দখল করে রেখেছে সড়কের বেশির ভাগ জায়গা। এতে করে যাত্রীদের যানজটে পড়ে থাকতে হয় প্রতিনিয়ত।

অপরদিকে যানজট নিরসনে নাভিশ্বাস উঠেছে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের।

অনুসন্ধানে জানা যায়, এসব সিএনজি, লেগুনা এবং বাস চালকদের বেশির ভাগের-ই লাইসেন্স নেই। নাম মাত্র লার্নার পেপার ব্যবহার করে বেপোরোয়া গতিতে চালিয়ে যাচ্ছে এসব সিএনজি। সিএনজি-লেগুনার এমন বেপোরায়া গতি মারাত্মক ঝুকিতে ফেলেছে যাত্রী-পথচারীদের।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সাইনবোর্ড থেকে চাষাড়া গামী একটি সিএনজি (নারায়ণগঞ্জ-থ ১১-১৮৮৩) বেপোরোয়া গতিতে এসে একটি মটর বাইককে ধাক্কা দেয়। অল্পের জন্যে মটর বাইকটি দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পায়। পরবর্তীতে চাষাড়া এলাকায় আসলে কর্তব্যরত ট্রাফিক সার্জেন্ট শফিক ও টি আই কামরুলের সহযোগীতায় সিএনজি টি আটক করা হয়।

এরপর উঠে আসে নানা তথ্য। সূত্র জানায়, শুধুমাত্র সাইনবোর্ড থেকে চাষাড়া পর্যন্ত ৫ জন লাইন ম্যান রয়েছে। এদের প্রত্যেকের প্রতিদিনের বেতন ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত। এতে প্রতি জনের মাসিক বেতন ১৫ থেকে ১৮ হাজার টাকা। বছরে এর হিসেব দাড়ায় ১ লাখ ৮০ হাজার থেকে ২ লাখ ১৬ হাজার টাকা।

এসব লাইন ম্যান প্রতি সিএনজি থেকে প্রতিদিন ৮০ টাকা করে চাঁদা আদায় করে। শুধুমাত্র একটি রুটে শতাধিক সিএনজি থেকেই মাসে আদায় করা হয় ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা যা বছরে দাড়ায় ২৮ লাখ ৮০ হাজার টাকা।

এমনি ভাবে বাকি ৩টি রুট থেকে বছরে কোটি টাকারও বেশি চাঁদা আদায় করা হয়।

চাঁদা উত্তোলনের বিষয়টি স্বীকার করে চাষাড়া সিএনজি পরিচালনা কমিটির সভাপতি নূরু ওরফে ভাঙ্গারী নূরু বলেন, শ্রমিক কল্যাণ ফান্ড এর নামে আমরা সিএনজি প্রতি ৮০ টাকা করে চাঁদা উত্তোলন করি। তিনি বলেন, প্রতিটি রুটে ৫ থেকে ৭ জন লাইন ম্যান মাধ্যমে এসব টাকা উত্তোলন করা হয়।

এ বিষয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) সালেহ আহমেদ বলেন, এসব অবৈধ স্ট্যান্ড গুলোর বিরুদ্ধে আমরা অভিযান পরিচালনা করবো। পাশাপাশি যারা অদক্ষ চালক রয়েছে তাদের বিরুদ্ধেও আমাদের নজরদারি রয়েছে। তিনি বলেন, সড়কে সুশৃঙ্খল পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।