সোনারগাঁ প্রতিনিধিঃ সোনারগাঁ উপজেলা বৈদ্যের বাজার ইউনিয়নের ঐতিহাসিক আনন্দ বাজারের গরুর ছাগল, হাস মুরগীর বিখ্যাত হাট তহসিলদারদের অত্যাচারে ধ্বংসের দার প্রান্তে।
আনন্দ বাজারের হাটটি প্রায় একশত বছরের পুরানো হাট আনন্দ পোদ্দারের নামে হাটটি নামকরন করা হয়। । এই হাটটি ছিল সোনারগাঁ , আড়াইহাজার, হোমনা গজারিয়া এলাকার মানুষের ক্রয় বিক্রয়ের জন্য বিখ্যাত হাট। এই হাট ধান, চাল, সরিষা, তিল, বাশ, মুলি, কাঠ, গরু, ছাগল, হাস-মুরগী, ভাংগী তরমুজ, মিষ্টি আলু ও মনোহারি মালামাল বিক্রির জন্য বিখ্যাত ছিল। তহসিলদারদের খারাপ আচরন ও অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের কারনে অনেক আগে থেকে ধান চাল সরিষা তিশির মোকাম বিলীন হয়ে গেছে। গরু-ছাগলের হাটটিও তহসিলদারদের অতিরিক্ত খাজনা আদায় করার কারনে বিলীন হওয়ার পথে। শতকার ১৫% অর্থাৎ ১০০টাকা র কিছু বিক্রি করলে ১৫ টাকা করে জোর পুর্বক খাজনা আদায় করে হাটের তহসিলদাররা।
একজন দরিদ্র কৃষক ৩০০ টাকার হাস-মুরগী, কবুতর, তরকারী বিক্রয় করলে বিক্রেতাকে ৪৫ টাকা খাজনা দিতে হয়, না দিলে তাদের সাথে খারাপ আচরন করে। অন্য দিকে গরু-ছাগল ক্রয় করলে ক্রেতাকে ১০০ টাকায় ১০ থেকে ১৫ টাকা করে খাজনা দিতে হয়, ১ লক্ষ টাকার একটি গরু ক্রয় করলে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা খাজনা দিতে হয় বিক্রেতাকে। তাই দিন দিন আনন্দ বাজারের গরু-ছাগল, হাস-মুরগি,কবুতর, তরকারী ইত্যাদি দ্রব্য দি ক্রয় করতে ক্রেতারা আগের মত আসে না বলে জানা যায়।
এদিকে স্হানীয় সরকারের কতিপয় অসাধু কর্মচারীদের কারনে কোটি টাকার হাটটি সিন্ডিকেট করে ৩০ লক্ষ টাকায় খাজ কালেকশন দেখিয়ে আওয়ামী নামধারী কতিপয় নেতা মিলে লিজ নিয়ে সাধারন ক্রেতাদের জুলুম করে খাজনা আদায় করে সরকারের কোটি কোটি টাকা রাজস্ব ফাকি দিচ্ছে বলে জানা যায়। আনন্দ বাজারের তহসিলদারদের খাজনা আদায়ের কৌশল দেখলে পুর্বের জমিদার প্রথা ও নীলকরদের কথা মনে পড়ে। তারা কৃষকদের অত্যচার করে খাজনা আদায় করতো। এখানে দরিদ্র কৃষকরা মাল ক্রয়-বিক্রয় করতে এলে তহসিলদারদের হাতে জুলুমের স্বীকার হয়।
সুশীল সমাজ মনে করে সরকারের উচিৎ এই ব্যপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা গ্রহন করে কৃষদের সহয়তা ও সরকারের রাজস্ব ঠিকমত আদায় করা। আনন্দ বাজারের হাটের ইজারাদার প্রতিবেদককে জানায়, আমরা বেশি টাকায় ১ বছরের জন্য লিজ নিয়েছি আর ক্রেতা তেমন আসে না তাই আমরা খাজনা বেশি রাখি।
সোনারগাঁ উপজেলা প্রশাসনের সাথে যেগাযোগ করলে কর্তৃপক্ষ জানায়, আমরা লিজের লোক না পাওয়ায় খাস কালেকশনের আওতায় এনে কম মুল্যে লিজ দেওয়া হয়েছে। যদি কেউ অভিযোগ করে শতকার ১৫% বা ১০% খাজনা আদায় করা হয় তা হলে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্হা নেওয়া হবে। এদিকে ১৯ মার্চ শনিবার সরেজমিনে গরুছাগলে হাটে গিয়ে দেখা যায় ভুক্তভোগি সনমানদী গ্রামের জাফর বলে, আমি ২৬০০০ হাজার টাকার একটি ছাগল কিনেছি, আমার কাছ থেকে ২৬০০ টাকা খাজনা রেখেছে। একজন কবুতর খামারি জামাল মিয়া বলে, আমি ৫টি কবুতর ১৫০০ টাক বিক্রয় করি, তারা আমার কাছ থেকে ১৭০ টাকা খাজনা নিয়েছে। দরিদ্র একজন কৃষক বলে ২০টি মিষ্টি কুমড়া ৫০০টাকা বিক্রি করি, তা্রা আমার থেকে ৮০ টাকা খাজনা জোর করে আদায় করে নেয় ।
হাটে আসা বিক্রেতারা জানায়, সরকার যদি গরীব কৃষকদের কথা বিবেচনা করে এই খাজনা প্রথাটি বিলুপ্ত করতো তাহলে সাধারন কৃষকের অনেক উপকার হত।মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট আমাদের দাবীগুলি পৌছানোর জন্য সাংবাদিক ভাইদের সহযোগিতা চাই।