সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে চৌধরীগাও উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের চাকরির মেয়াদ শেষ হলেও সরকারি বিধি বিধান অমান্য করে সভাপতির দাপুটে সিদান্তে অবৈধভাবে চেয়ার আকরে রেখে কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এ ব্যপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত আবেদন করেছেন এলাকাবাসীর পক্ষে স্থানীয় নাসির উদ্দিন,আবুসিদ্দিক মাস্টার,গাজী সুমন ।
আবেদন সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালে প্রধান শিক্ষকের পদটি শূণ্য হলে এবং সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদটি শূন্য থাকায় বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক (শিক্ষা জীবনে সকল স্থরে তৃতীয় বিভাগ প্রাপ্ত) জনাব বশির আহাম্মদ ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পেয়ে যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের চেয়ারটি দখল করার চেষ্টা চালিয়ে যান। নিয়োগ কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্যে পূর্বের সভাপতিকে সরিয়ে দিয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হিসেবে তার অত্যন্ত বিশ্বস্ত জনাব রেজাউল করিমকে মনোনয়ন দেন। আর এ রেজাউল করিমকে হাতে নিয়েই তিনি প্রধান শিক্ষকের লোভনীয় চেয়ারটি দখল করেন। যার প্রতিদান হিসেবে এ পর্যন্ত চার বার রেজাউল করিমকে সভাপতি নির্বাচিত করেন বশির আহাম্মদ।
গত ২৯ নভেম্বর ২০২১ তারিখে বশির আহাম্মদের চাকরির মেয়াদ ৬০ বছর পূর্ণ হওয়ায় বিধি মোতাবেক চাকুরি হতে অবসর গ্রহণ করার কথা। বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক ও এলাকাবাসী যখন ৩০ নভেম্বর ২০২১ তারিখে নতুন ভোর ও নতুন সূর্য দেখবে আবার একজন যোগ্যতা সম্পন্ন প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে নিয়োগ হবে বিদ্যালয়টি আবার তার হারানো ঐতিহ্য ফিরে পাবে এ আশায় বুক বেধে সুন্দর স্বপ্ন দেখছে, সে আশায় গুড়েবালি। বশির আহাম্মদ প্রধান শিক্ষকের মধুময় চেয়ারের মায়া ত্যাগ করতে না পারায় কোন বিধি বিধানের তোয়াক্কা না করে, সরকারের কোন অনুমোদন না নিয়েই নিয়মিত বিদ্যালয়ে অফিস করছেন, বিদ্যালয়ে রক্ষিত হাজিরা খাতায় হাজিরা দেওয়াসহ সকল কার্যক্রমে অংশ গ্রহণ করছেন। এসএসসি পরীক্ষায় পাসকৃত ছাত্র-ছাত্রীদের প্রশংসা পত্রে স্বাক্ষর করছেন। কোন নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা না করে একমাত্র সভাপতির অবৈধ ক্ষমতার জোরে একজন অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রধান শিক্ষকের চেয়ার দখল করে নিয়মিত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এ বিষয়ে এলাকার ভুক্তভোগী অভিভাবক সভাপতি ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে অবহিত করা হলেও এ বিষয়ে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
আরও জানা যায়, বিদ্যালয়ের নিয়মিত ম্যানেজিং কমিটির তফলিস সম্প্রতি ঘোষণা করা হবে। বর্তমান রেজাউল করিম আবারও সভাপতি হওয়ার নিমিত্ত চাকুরি শেষ হয়ে গেলেও বশির আহাম্মদকে এখনও প্রধান শিক্ষক হিসেবে বহাল রেখেছেন। একজন অবৈধ প্রধান শিক্ষকের স্বাক্ষরও অবৈধ, তার স্বাক্ষরে প্রণিত ভোটার তালিকাসহ সকল কার্যক্রম অবৈধ। তাই বর্তমান এডহক কমিটির অভিভাবক সদস্য গাজী সুমন ও কমিটির সাবেক সদস্য নাসির উদ্দিন ও আবু সিদ্দিক মাষ্টার বশির আহাম্মদ এর দায়িত্ব হস্তান্তরের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং দায়িত্ব হস্তান্তর না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচনের তফসিল স্থগিত রাখার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সোনারগাঁ এবং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছেন এবং চেয়ারম্যান, দুর্নীতি দমন কমিশন, সচিব, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, চেয়ারম্যান, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা, জেলা প্রশাসক, নারায়ণগঞ্জ এবং জেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর অনুলিপি প্রেরণ করেছেন।
এ ব্যপারে অভিযুক্ত শিক্ষক বশির আহম্মদ বলেন,আমি সভাপতির নির্দেশে কাজ করছি।
এ ব্যাপারে সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ এলাহী জানান, আবেদন পেয়েছি এবং বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষাকর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।