সোনারগাঁ প্রতিনিধিঃ বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যদির দাম বাড়াতে দেশের সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। প্রতিবছরই কয়েকবার করে গ্যাস ও তেলের দাম বাড়ানো হয়। এ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই পরিকল্পিত ভাবে মূল সংবিধান পাল্টে দিয়ে তারা স্বৈরতন্ত্রের দিকে যাচ্ছে।
২৯ এপ্রিল শুক্রবার নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নানের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, ঢাকা বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক মনিরুল ইসলাম রবি, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান, জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি মোশারফ হোসেন, জেলা ছাত্রদলের সাধারন সম্পাদক খায়রুল ইসলাম সজিব, সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেনসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
ফখরুল বলেন, ৭২ সালেও আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় এসে মানুষের ওপর অত্যাচার করেছিল। আমরা দেখেছিলাম ৭৪ সালে কী ভয়াবহ দুর্বিক্ষ হয়েছিল। এসব কাটাতে না পেরে ৭৫ সালে তারা বাকশাল করেছিল, তখন পত্র পত্রিকা বন্ধ করো দেয়া হয়েছিল। মানুষের মৌলিক অধিকার হরণ করা হয়েছিল। আজ আবার তারা গনতন্ত্রের লেবাস পড়ে এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা চালু করেছে।
তিনি বলেন, এ দেশের রাজনৈতিক কাঠামোতে যেটা সবচেয়ে বড় ক্ষতি করেছে সেটা হল তারা তত্বাবধায়ক সরকারের বিধান বাতিল করে দিয়েছে। আপনারা জানেন এ তত্বাবধায়ক সরকারের দাবী আওয়ামীলীগই নিয়ে এসেছিল। তারা এ দাবীতে লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষ হত্যা করেছিল।তবে ক্ষমতায় আসার পর তারা তা বাতিল করে। আজ মানুষ ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ২০১৮ সালে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। ২০১৪ সালে তারা বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় নির্বাচন করেছিল।
র্যাব এতো বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘন করে, অন্যায় করেছে যে আজ আমেরিকা র্যাবকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। সাতজন কর্মকর্তা যাদের মধ্যে আমাদের পুলিশ প্রধানও আছেন তাদের আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এদের বরখাস্ত করা উচিত ছিল। তবে তা না করে এই কয়েকদিন আগে আবারো দুই জনকে ক্রসফায়ারে হত্য করা হয়েছে। মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেছেন এ সমস্যাগুলো দূর না করলে নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেয়া হবে না। আর পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন তারা ভারতের কাছে সহায়তা চাইবেন। ধিক্কার জানাই তাদের। এ সমস্যা যারা তৈরি করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে তারা ভারতের কাছে সাহায্য চাইছে। প্রশাসনে বিচার বিভাগসহ সকল স্থানে তারা নিজেদের লোক নিয়োগ দিয়েছে। স্থানীয় নির্বাচনও এখন তারা বাদ দেয় না। গায়ের জোরে নিয়ে যায়। আজ তারা দলীয় প্রশাসনকে নিযুক্ত করেছে ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে গিয়ে। তারা নির্মম ভাবে আমাদের নেতাকর্মীদেরকে হত্যা করেছে। ইলিয়াস আলীসহ প্রায় ছয়শ নেতাকর্মীকে তারা গুম করেছে, যাদের কোন হদিস নেই।
মহাসচিব বলেন, এই কয়েকদিন আগে নারায়ণগঞ্জের সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদকে হত্যার উদ্দেশ্যে নির্মমভাবে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। আল্লাহর রহমতে তিনি বেঁচে গেছেন, তার বাঁচার কথা ছিল না৷ উদ্দেশ্য একটাই, আওয়ামী লীগের শাসনকে চিরস্থায়ী করা। এখানে কেউ ভিন্ন মতও প্রকাশ করতে পারবে না। এটাই আওয়ামীলীগের মূল উদ্দেশ্য। এ সরকার আমাদের মুক্তিযুদ্ধের আকাংখাকে ধুলিসাৎ করে আওয়ামীলীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করছে। এদের আরও সময় দেয়া হলে এ দেশের কোন অস্তিত্ব থাকবে না।
তিনি বলেন, আমাদের নেত্রী মিথ্যা মামলায় গৃহবন্দী আছেন। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মিথ্যা মামলায় বিদেশে আছেন। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং সকলের মাঝে জাতীয় ঐক্য করতে হবে। গনতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে এবং জননেতা তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনতে আমাদের ঐক্যবদ্ধের কোন বিকল্প নেই।