হাজ্বী খাঁন রওশন আলী ক্লিনিকে ভূল চিকিৎসায় প্রসুতির মৃত্যু।
কালিয়া(নড়াইল)প্রতিনিধি:
নড়াইলের কালিয়ার বড়দিয়া হাজ্বী খাঁন রওশন আরী ক্লিনিকে অপারেশান থিয়েটারে শিউলী বেগম (২৬) নামে এক প্রসুতি ও তার গর্ভের সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার(৬ মে) দুপুরের বড়দিয়া ক্লিনিকে এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। রোগীর মৃত্যুর পর ডাক্তার ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ লাশ রেখে কৌসলে পালিয়ে যায়। ওই ঘটনা পুলিশি ঝামেলা এড়াতে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ রোগীর স্বজনদের সাথে সাড়ে তিন লাখ টাকায় রফাদফা করে ময়নাতদন্ত ছাড়াই রাতে লাশ দাফন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।শিউলী গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বড়ফা গ্রামের মোঃ জিন্নাত আলীর স্ত্রী ও কালিয়া উপজেলার নড়াগাতি থানার খাশিয়াল ইউনিয়নের মোঃ আকবর হোসেন ( চকিদার) এর মেয়ে। ঘটনাটিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. কাজল মল্লিকে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
মৃত প্রসূতি শিউলির স্বামী জিন্নাত আলী জানান, স্ত্রী শিউলী বেগমকে শুক্রবার সকাল ৮ টার দিকে বড়দিয়া খান রওশন আলী ক্লিনিকে নিয়ে ১৫ হাজার টাকার চুক্তিতে ক্লিনিকে ভর্তি করেন। সকাল ৯.৩০ মিনিটে শিউলীকে অপারেশান থিয়েটারে নিয়ে যায়। কিন্তু প্রায় ২ ঘন্টা পার হলেও অপারেশান শেষ না হওয়ায় তিনিসহ তার স্বজনরা উদ্বিন্ন হয়ে পড়েন। তারা রোগীর খোজ জানতে চাইলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বলেন রোগীর প্রেসার কমে গেছে তাকে খুলনায় পাঠাতে হবে। এরপর গড়িমসি করে ক্লিনিক কতৃপক্ষ একটি এ্যাম্বুলেন্স এনে অক্সিজেন লাগানো অবস্থায় শিউলীর লাশ এ্যাম্বুলেন্সে তুলে বাইরে পাঠানোর চেষ্টা করলে তাদের রোগীর স্বজনদের সন্দেহ হয়। শিউলীর মৃত্য হয়েছে বুঝতে পেরে স্বজনরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলে ক্লিনিকের প্রধান গেটে তালা লাগিয়ে দেয় কতৃপক্ষ। সেই ফাঁকে পেছন দরজা দিয়ে ক্লিনিক থেকে বেরিয়ে চলে যান সিজারিয়ান অপারেশন করতে গোপালগঞ্জ থেকে আশা ডাক্তার শরিফুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা। তখন নড়াগাতি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। দায়িত্ব হীনতা ও রোগীর প্রতি অবহেলার কারনে তার স্ত্রীসহ অনাগত সন্তানের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করলে ও গরীব হওয়ায় শিউলীর রেখে যাওয়া ৩ বছরের মেয়ে জামিলার ভবিষ্যৎ চিন্তা করে মিমাংশার পথ বেছে নেন স্বামী জিন্নাত আলী। এবং সাড়ে ৩ লাখ টাকায় নিঃস্পত্তির পর স্ত্রীকে দাফন করেছ। জিন্নাত আরো বলেন বলেছেন, ঘটনাটি নিয়ে তিনি এখন আর কোন অভিযোগ করতে চান না।
আকবর হোসেন মোল্য বলেন, সিজারিয়ান অপারেশন করতে আমার মেয়েকে ক্লিনিকে ভর্তি করি।অপারেশন থিয়েটারে মেয়ে শিউলীকে কোমরে ইনজেকশান পুশ করার পরে আমার মেয়ে ছটফট করতে করতে মেয়ে মারা যায়। পরে স্থানীয়দের সালিশের মাধ্যমে মেয়ের রেখে যাওয়া একমাত্র কন্যা সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে সাড়ে তিন লাখ টাকায় মিমাংসা করে মেয়ের লাশ দাফন করা হয়েছে।
ক্লিনিক মালিক খান শাহীন সাজ্জাদ পলাশের সাথে একাধিক যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে ও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় নড়াগাতি থানার ওসি সুকান্ত সাহা বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। এখনো কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।