আল আমিন নূরঃ ঢাকা-নারায়নগঞ্জ লিংকরোডে কুতুবপুর ইউ’পির ভুইগড় মাহমুদপুর মেইনরোডে আদালতের আদেশ অমান্য করে অবৈধভাবে জমি জবর-দখল করেছে ভূমি সন্ত্রাসী কাদিরগং, পুলিশ প্রশাসন নীরব ভুমিকা পালন করছে জানায় সংশ্লিষ্টরা। মাহমুদপুর এলাকার আবদুল কাদিরগং অবৈধভাবে গায়ের জোরে আদালতের আদেশ অমান্য করে সরকারি জমিসহ আমজাদ হোসেনের ব্যক্তি মালিকানা জমি জবর-দখল করেছে।
ভূক্তভোগী আমজাদ হোসেন উক্ত জমি নিয়ে ভয়-ভীতি, হুমকি-ধমকি নিয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি অভিযোগ করে। অভিযোগটি জিডি আকারে গ্রহন করে যার নং ৫৬২ তারিখ ৯/১০/২১ইং। এস আই শাহাদাত হোসেন বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের অনুমতি ক্রমে প্রসিকিউশন তদন্ত সাপেক্ষে প্রতিবেদন রিপোর্ট আদালতে দাখিল করেন, যা আদালতে চলমান রয়েছে।
ভূমি দস্যুদের কবল থেকে বাচার জন্য ভূক্তভোগী আমজাদ হোসেন বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে পিটিশন মামলা করে যার নং ১৫৪/২২, তারিখ ১২/০৬/২২ । বিজ্ঞ আদালত সহকারি কমিশনার ভূমি ফতুল্লা রাজস্ব সার্কেলকে দখলীয় প্রতিবেদন এবং ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে শান্তিশৃখলা বজায় রাখার জন্য নির্দেশ দেন। বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে সহকারি কমিশনার ভূমি কুতুবপুর ভূমি অফিসকে তদন্ত প্রতিবেদন করার জন্য প্রেরন করেন এবং ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উভয় পক্ষকে নোটিশ জারি করে ভুঅং মিতে স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য নির্দেশ দেন।
কুতুবপুর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী ১৫৪/২২ নং পিটশন মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ১৫/০৫/২২ ইং তারিখে ১০১৪নং স্নারক, কুতুবপুর ইউঃভূঃঅঃ ৩১/২০২২-২৯৯ নং স্মারকে ২৬/০৭/২২ ইং তারিখে এসিল্যান্ড অফিসে প্রেরন করেন। প্রতিবেদনে উল্লেখ্য করা হয়ঃ “সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ভূমি উপ- সহকারী কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেনসহ সরেজমিনে তদন্ত করা হয়। তদন্তের সময় বাদী আমজাদ হোসেন ও বিবাদী কাদিরগং সহ গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপিস্থিত ছিলেন। বাদী আমজাদ হোসেনের দাবী এস এ ৪৮৭ দাগের রুপান্তর আরএস ১১৫৩ দাগে ভবন নির্মান করে বসবাসরত আছে, তার বাড়ির সামনে বিবাদী পক্ষ জোড়পুর্বক টং দোকান উঠানোর চেষ্ঠা করে যাতে বাদীর চলাচল বিঘ্নিত হয়। অপরদিকে বিবাদীর দাবী ২৩৪ খতিয়ানে আর এস ১১৫২ দাগে ২ শতাংশ জমির মালিকানা রয়েছে। ১১৫২ দাগটি ম্যাপ পর্যালোচনা করে দেখা যায় বাদীর চিহ্নিত জায়গায় ১১৫২ দাগের জমি নেই, ১১৫২ দাগে বিবাদীর মালিকানা রয়েছে বটে কিন্তু তা বাদীর চিহ্নিত জায়গার অনেক উওরে। বিরোধীয় ভূমি ঢাকা নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের পুর্বপাশে। বাস্তবে নকশা অনুযায়ী বাদীর চিহ্নিত জায়গায় বিবাদীর দখল নেই এবং মালিকানা জমি নেই এবং বিবাদীর তৎপরতায় মহাসড়কের জমি অবৈধ দখল হবে বলে প্রতিয়মান হয়।”
ফতুল্লা সহকারী কমিশনার ভূমি মোঃ আবুবকর সরকার এডিএম(এন) ২২/১০০২ তারিখ ১২/০৬/২২ ইং এর তদন্ত প্রতিবেদন ০১/০৮/২২ ইং তারিখে স্মারক ০৫……..২২-৭৯৯ এ বিজ্ঞ আদালতে প্রেরন করেন। প্রতিবেদনে উল্লেখ্য করা হয়ঃ “বাদীর চিহ্নিত জায়গায় ১১৫২ দাগের জমি নেই, ১১৫২ দাগে বিবাদীর মালিকানা রয়েছে বটে কিন্তু তা বাদীর চিহ্নিত জায়গার অনেক উওরে। বিরোধীয় ভূমি ঢাকা নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের পুর্বপাশে। বাস্তবে নকশা অনুযায়ী বাদীর চিহ্নিত জায়গায় বিবাদীর দখল নাই এবং মালিকানা জমি নাই এবং বিবাদীর তৎপরতায় মহাসড়কের জমি অবৈধ দখল সম্ভাবনা রয়েছে। মহোদয়ের সদয় অবগতি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দাখিলকৃত প্রতিবেদনটির সহিত একমত পোষন করে প্রেরন করা হল”
বিজ্ঞ আদালত মামলার আরজি ও সংযুক্ত কাগজপত্র, বিবাদীর লিখিত জবাব ও দাখিলকৃত কাগজপত্র, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফতুল্লা মডেল থানা ও সহকারী কমিশনার( ভূমি) ফতুল্লা রাজস্ব সার্কেলের সরজমিনের তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে দেখা যায় চিহ্নিত জমি সরকার কতৃক অধিগ্রহণকৃত ভূমি এবং বিজ্ঞ আদালত রায় দেনঃ ” এ অবস্থায় নালিশা সম্পত্তিতে অর্থাৎ আর এস ১১৫৩ দাগে ১ম পক্ষ ভোগ দখলে থাকায় উপযুক্ত আদালতের অন্য কোন আদেশ না থাকলে ১ম পক্ষকে নালিশা আর এস ১১৫৩ নং দাগে ভোগ দখলদার সাব্যস্ত করা হল। ২য় পক্ষকে নালিশা ১১৫৩ দাগে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের বারিত করা করা হলো। বর্তমানে নালিশা ভুমিতে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় থাকায় অত্র মামলা নিস্পত্তিপুর্বক নথিজাত করা হলো। আদেশের কপি সংশ্লিষ্ট পক্ষসহ থানাকে দেওয়া হোক।”
স্মারক নং ২০২৫(৩)(স) তারিখ ৩০/১১/২২ ইং তে ফতুল্লা মডেল থানায় প্রেরন করা হলেও থানা পুলিশ নীরব ভুমিকা পালন করায় ভূমি দস্যু ও ভূমি সন্ত্রাসী কাদিরগং জোড়পুর্বক অবৈধভাবে সরকারি ও ব্যক্তি মালিকানা জমি জবর দখল করে পাকা নির্মান কাজ করে। ভূক্তভোগী আমজাদ হোসেন জানায়, আদালতের আদেশ বাস্তবায়নের কোন পদক্ষেপ নেয়নি ফতুল্লা থানা পুলিশ প্রশাসন ।
ভূক্তভোগী আরো জানান, “১৬ ডিসেম্বর ভূমি সন্ত্রাসী কাদিরগং ভুইগড় মৌজাস্থিত আমার বাড়ির সামনে সরকারি কিছু সম্পত্তিসহ আমার নিজ নামীয় সম্পত্তিতে বিবাদীগং জোড়পুর্বক স্থাপনা নির্মান কাজ আরম্ভ করলে আমি ৯৯৯ এ কয়েকবার কল করলে ফতুল্লা থানার এ এস আই আতিক ঘটনা স্থান পরিদর্শন করে কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। পুলিশ চলে যাওয়ার কিছুক্ষন পরেই আবার কাজ করতে থাকে। আমি অনেকবার ফতুল্লা থানায় যোগাযোগ করে কোন সহায়তা না পেয়ে ১৬ ডিসেম্বর ফতুল্লা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করি। অভিযোগের সাথে বিজ্ঞ আদালতের আদেশ, থানার নিষধাজ্ঞার নোটিশ, সহকারি কমিশনার( ভূমি) ও কুতুবপুর ইউনিয়ন ভুমি সহকারী কর্মকর্তা তদন্ত প্রতিবেদন সংযুক্ত করি। আমি অনেকবার থানায় এবং রোডস এন্ড হাইওয়েতে গিয়েও কোন সহায়তা পাইনি। আর এই সুযোগে সরকারি জমিসহ আমার মালিকানা ভূমিতে পাকা নির্মান কাজ করে কাদিরগং”
ভুক্তভোগী ১৯/১২/২২ ইং তারিখে নির্বাহী প্রকৌশলী, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর, শিমরাইল, নারায়ণগঞ্জ বরাবর একটি আবেদন করেন, যার বিষয়ঃ সরকার কর্তৃক অধিগ্রহণকৃত ভুমিতে অবৈধভাবে পাকা স্থাপনা নির্মান এবং আমার বাড়ির দোকানে ও জনগনের চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা প্রসংগে। আবেদন রিসিভ করে কোন পদক্ষেপ নেয়নি সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী।
১৬/১২/২২ ইং তারিখে অভিযোগের ব্যাপারে এস আই আমিনুল ইসলামকে জানুয়ারি ১০ তারিখে তার ব্যবহৃত মোবাইলের হোয়াটস আপে অভিযোগের কপি ও বিজ্ঞ আদালতের আদেশের কপি সংযুক্ত করে ক্ষুদে মেসেজ পাঠানো হয়, এস আই আমিনুল মেসেজ পড়ে কোন জবাব বা তথ্য না দিলে তাকে কল করে জানা যায় যে, অভিযোগ পাওয়ার পর তিনি তার পরীক্ষার জন্য ছুটিতে ছিলেন। তিনি প্রতিবেদককে আরো বলেন,” এসপি স্যার বরাবর দরখাস্ত করে ডিবিতে নিয়ে কাজ করালে ভাল হবে।”
এব্যাপারে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে জানুয়ারি ১০ তারিখে কল করলে তিনি কল ধরে নাই, তাই তার ব্যবহৃত সরকারি মোবাইলে হোয়াটসঅ্যাপ এ থানার অভিযোগের কপি ও বিজ্ঞ আদালতের আদেশের কপি প্রেরন করে জবর- দখল ভূমি ও বিজ্ঞ আদালতের আদেশ রক্ষার কি ব্যবস্থা নিয়েছে তার তথ্য দিতে বলা হয়। টেক্স মেসেজ সিন করে কোন তথ্য বা জবাব দেয়নি ফতুল্লা থানা পুলিশ।
“অবৈধভাবে সরকারি ও ব্যাক্তি মালিকানা জমি জবর-দখল” শিরোনামে স্থানীয় পত্রিকা ও অনলাইন মিডিয়া নিউজ করা লিংক ফতুল্লা মডেল থানার ওসি, এস আই আমিনুল, ক সার্কেল এসপিকে তাদের ব্যবহৃত মোবাইলের হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো হয়। দেখা যায়, প্রত্যেকে নিউজ সিন করেছে কিন্তু অদ্যবধি বিজ্ঞ আদালতের আদেশ পালনে বা সরকারি জমি উদ্ধারে বা ভুমিদস্যুর নির্মান কাজ বন্ধে কোন পদক্ষেপ নেয়নি। আইন প্রয়োগকারি সংস্থার নীরব ভূমিকায় থাকাতে ভূমি দস্যুগং অবাধে সরকারি জায়গাসহ অন্যের জায়গায় জোরপূর্বক দোকানপাট স্থপনা তৈরীর কাজ চালিয়ে যাচ্ছে কোর্টের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে। সরজমিনে দেখা যায়, অবৈধ স্থাপনার জায়গা মূলত রোডস্ এন্ড হাইওয়ের এবং পিছনের ভবনের মালিকের ভুমি।
পুলিশ প্রশাসনের নীরব ভুমিকায় হতাশায় ভূক্তভোগী ও এলাকার জনগন।
ভূক্তভোগি আমজাদ হোসেন সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্টজনসহ নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপার ও নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।