জান্নাতুল নাঈম: নারায়ণগঞ্জ বন্দরে ৩৫ হাজার পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ দল নেতাসহ ৮ জন তৃতীয় লিঙ্গের সক্রিয় মাদক ব্যবসায়ী’কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১।
রবিবার (২১ মে) রাত ৯টায় বন্দর থানাধীন মদনপুর রাফি ফিলিং স্টেশন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
সোমবার (২২ মে) দুপুরে র্যাব-১১, সিপিসি-১, নারায়ণগঞ্জ ক্যাম্প এর কোম্পানী কমান্ডার, উপ-পরিচালক, স্কোয়াড্রন লীডার এ কে এম মনিরুল আলম এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, র্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সমাজের বিভিন্ন অপরাধের উৎস উদ্ঘাটন, অপরাধীদের গ্রেফতার, অপরাধ দমন ও আইন শৃঙ্খলার সামগ্রিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিভিন্ন অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার জন্য র্যাব ফোর্সেস নিয়মিতভাবে অভিযান পরিচালনা করে থাকে। এছাড়াও সমাজকে মাদকমুক্ত করার জন্য র্যাব নিয়মিত মাকদ বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে আসছে। গোয়েন্দা নজরদারী ও আভিযানিক কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় অপরাধীদের দ্রুততম সময়ে গ্রেফতারের মাধ্যমে র্যাব ইতোমধ্যেই জনগণের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। মাদকদ্রব্য নির্মূলে ও মাদকের ভয়াল থাবা থেকে যুব সম্প্রদায়কে রক্ষা করতে র্যাব-১১ বদ্ধপরিকর এবং এ লক্ষ্যে র্যাব-১১ নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। মাদক নির্মূলের লক্ষ্যে র্যাব-১১ নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করে আসছে এবং বিভিন্ন সময়ে র্যাব-১১ বিপুল পরিমান মাদক উদ্ধার সহ মাদক ব্যবসার সাথে জড়িতদেরকে গ্রেফতার পূর্বক আইনের আওতায় নিয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় মাদক বিরোধী অভিযানের অংশ স্বরূপ র্যাব-১১, সিপিসি-১ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল ২১মে ২০২৩ ইং তারিখ রাত ২১.০৫ ঘটিকায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানাধীন মদনপুর রাফি ফিলিং স্টেশন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তৃতীয় লিঙ্গের ০৮ জন মাদক চোরাচালান চক্রের সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় এবং ৩৫,০০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করে।
গ্রেফতারকৃত তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যরা হলেন১। রফিক @ ললিতা (৪০), পিতা-মৃত ফোজাম্মত, মাতা-আজম বাহার, সাং-নাইটাম পাড়া, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার, ২। রবি আলম (@ বিউটি (৪০), পিতা-মৃত আব্দুল হাকিম, মাতা-পাতেলা বেগম, সাং-লিংরোড, মহুরীপাড়া, থানা-কক্সবাজার সদর, জেলা-কক্সবাজার, ৩। একরাম (Q) পরীমনি (২২), পিতা-মৃত আবুল হোসেন, মাতা-তৈয়বা বেগম, সাং- লেদা লামারপাড়া, থানা-উখিয়া, জেলা-কক্সবাজার, ৪। রবি আলম (২) প্রিয়া (২৪), পিতা-মৃত আব্দুল জলিল, মাতা- রমিদা বেগম, সাং- বাজারঘাটা, থানা-কক্সবাজার সদর, জেলা-কক্সবাজার, ৫। মোঃ আল-আমিন (২) নিশি (৩৫), পিতা- মৃত আব্দুল আজিজ, মাতা-মৃত সুফিয়া বেগম, সাং-ফতেহপুর, থানা- সোনারগাঁ, জেলা-নারায়ণগঞ্জ এ/পি সাং-মরিচা, হলিদাপালং, থানা-উখিয়া, জেলা-কক্সবাজার, ৬। রায়হান (2) আঁখি (২০), পিতা-নুরুল আলম, মাতা-আরজুমান বেগম, সাং-মহেষখালী পাড়া, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার, ৭। সাবের @ বিজলী (২২), পিতা-মৃত আব্দুস সালাম, মাতা-নুর বেগম, সাং-লেদা লামারপাড়া, থানা-উখিয়া, জেলা-কক্সবাজার, এ/পি- জালিয়া পাড়া, থানা- টেকনাফ, জেলা- কক্সবাজার এবং ৮। ফারুক @ রিয়ামনি (২৫), পিতা-মৃত জহির আহমেদ, মাতা-মাহাতা খাতুন, সাং-বাজারঘাটা, থানা- কক্সবাজার সদর, জেলা-কক্সবাজার।
র্যাব আরো জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানায় যে, তারা একটি সংঘবদ্ধ মাদক চোরাচালান চক্রের সক্রিয় সদস্য। এই চক্রের দল নেতাসহ সকলেই তৃতীয় লিঙ্গের সদস্য। তারা আর্থিক ভাবে লাভবান হওয়ার জন্য অত্যন্ত কৌশলীভাবে তৃতীয় লিঙ্গের আড়ালে বিভিন্ন স্থানে। ভ্রমনের বাহানায় নিষিদ্ধ মাদক দ্রব্য ইয়াবা ক্রয় বিক্রয় ও সরবরাহ করে আসছিল। এই সক্রিয় চক্রটি পারস্পারিক যোগসাজসে সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে নিষিদ্ধ মাদকদ্রব্য ইয়াবা সহ অন্যান্য মাদকদ্রব্যের বড় আকারের চালান দীর্ঘদিন যাবৎ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে নারায়ণগঞ্জে নিয়ে আসে। পরবর্তীতে তারা এসকল মাদকদ্রব্য নারায়ণগঞ্জ ও ঢাকা সহ পার্শ্ববর্তী জেলা সমূহে সরবারহ করে থাকে। আটককৃত ৩৫,০০০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট এর আনুমানিক মূল্য ১ কোটি ৫ লাখ টাকা।
গ্রেফতারকৃত মাদক ব্যাবসায়ীদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে মাদক চোরাচালানের সাথে সম্পৃক্তদের বিষয়ে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গিয়েছে। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এসংক্রান্তে জড়িত অন্যান্য মাদক ব্যবসায়ীদেরকে আইনের আওতায় আনার জন্য র্যাব-১১ এর গোয়েন্দা নজরদারী ও আভিযানিক কার্যক্রম অব্যহত রয়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে নিয়মিত মামলা রুজুর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।#