মোঃ মোক্তার হোসাইন: সোনারগাঁ
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার আশে পাশের গ্রাম, নদীর পাড়, বটতলা, পতিত বাড়ি যেন অপরাধী ও অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছে। সাধারণ মানুষ তাদের কোমলমতি শিশু সন্তানদের নিয়ে আতঙ্কে আছেন।
না জানি তাদের সন্তানদের এ ভয়াবহ পরিস্থিতে পড়ে যায়। অভিভাবকরা উপজেলা প্রশাসন ও থানা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।
সূত্র জানায়, সোনারগাঁ উপজেলা গেট বরাবর নদীর পাড়ে সন্ধ্যা হলেই মাদকসেবীদের আড্ডা বসে।
এ আড্ডা গভীর রাত পর্যন্ত চলতে থাকে।
নদী থেকে মহিলা ও মেয়েরা পানি নেওয়া বা গোলস করতে আসলে মাদকসেবী বখাটেদের ট্রলের শিকার হতে হয়। অভিভবাকরা ভয়ে কিছু বলেন না অজানা ভয় কাজ করে তাদের ভিতর।
নদীর পারের মাঝিরা জানান, এখানে সকাল, সন্ধ্যা ও রাতে সিএনজি, মোটর সাইকেল দিয়ে হঠাৎ হঠাৎ কিছু লোক মাদক দিয়ে যায়। উপস্থিত কিছু ছেলেরা এগুলো নিয়ে মাঝে মাঝে বসে নেশা করে। দুপুরে মহিলারা গোসল করতে আসলে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি করে টিটকারি ইভটিজিং এর মত কটুক্তি করে। আমরা খুবই ভয়ে ও আতংকে থাকি সব সময়।
উপজেলার উত্তর পাশে ভট্টপুর বটতলায় বসে একদল যুবক সারা রাত মাদকসেবন ও অনৈতিক কাজে ব্যস্ত থাকে বলে ওই নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসী অভিযোগ করেন। দিনে দুপুরে পাশের সচিবের বাড়ির খোলা জায়গায় বসে পাকা রাস্তা খাল পাড় দিয়ে গিয়ে অনেক যুবক মাসকসেবন করেন। এলাকাবাসী কিছু বলতে গেলে বিভিন্ন ভাবে হামলার শিকার হন।
এলাকাবাসীর আরও অভিযোগ, ভট্টপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি যে স্থানে এর উত্তর পাশের গ্রামের নাম জয়রামপুর। এই গ্রামের ইবুর বাড়ি, মোনতাজ মোল্লার ছেলে হাশেম মোল্লার বাড়ি, বাচ্চু মোল্লার বাড়িতে বিভিন্ন অপরাধীদের আশ্রয় স্থান। এসব বাড়িতে পতিতা, খুনি, বিভিন্ন মামলার আসামী, মাদবকারবারীরা বাসা ভাড়া নিয়ে বাস করে। এসব বাড়ির মালিক বাড়িতে থাকে না। অপরাধীরা বাসা ভাড়া নিয়ে পতিতা ব্যবসা ও মাদক ব্যবসা করে যাচ্ছে।
খবর নিয়ে জানা গেছে, এসব বাসা বাড়িতে শুধু সিঙ্গেল মহিলা ভাড়া থাকে। জানতে চাইলে বলে গার্মেন্টস কাজ করি। অথচ তারা দিন রাত পতিতা ও মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত। এলাকার সাধারণ মানুষ এসব দেখে মুখে কাপড় দিয়ে চলে আসে। অপরাধীদের ভয়ে কিছু বলতে চায় না।
এলাকার একাধিক ব্যক্তি জানান, রাতে যখন রাস্তা দিয়ে যাই, দেখি বিভিন্ন বাসা বাড়িতে বিভিন্ন এলাকার মানুষ যাদের দিনে কখনো দেখিনি। মাদক ও অনৈতিক কারবারিদের এলাকা থেকে বিতাড়িত না করলে আমাদের এ সমাজে টিকে থাকা দায় হয়ে যাবে। সন্তানদের নিয়ে শান্তিতে থাকতে পারব না। আমরা সাধারণ জনগন প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
সোনারগাঁয়ের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা যায়, বর্তমানে মাদক ব্যবসায়ীরা আধুনিক, কিশোর গ্যাং ও শক্তিশালী কিছু রাজনৈতিক নেতাদের ছত্র-ছায়ায় খুবই গোপনে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। অল্প সময়ে যুব সমাজ ধ্বংস করে মাদক ব্যবসার টাকা দিয়ে কিশোর গ্যাং পরিচালনা করছে, সাধারণ মানুষ কিছু বলতে গেলে কিশোর গ্যাং দিয়ে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালায়।
সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক (ওসি তদন্ত) আহসান উল্লাহ বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান চলমান আছে, তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করুন আমরা ব্যবস্থা নিবো।