সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার ৭৪ নং চৌধুরীগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটি গঠনে অনিয়ম ও দূনীতির অভিযোগ উঠেছে সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাড.সামসুল ইসলাম’র বিরুদ্ধে। এ নিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীর মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
স্থানীয় সেলিম মিয়া জানান, ২০২২ সালের ৩রা নভেম্বর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে বিএনপির নেতা রাষ্ট্রবিরোধীর মামলার প্রধান আসামী আক্তার হোসেন যাতে চৌধুরীগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সভাপতি হতে না পারেন। সে ওই স্কুলে ভূয়া দাতা সদস্য হয়েছেন জাল দলিলের মাধ্যমে।
তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিএনপির জালাও পোড়াও মামলার প্রধান আসামী অর্থের বিনিময়ে হয়ে গেলেন আওয়ামী লীগের সদস্য। বিষয়টি অত্যান্ত দুঃখজনক।
মামলা সূত্রে জানা যায়, উপজেলার হোসেনপুর এসপি উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে বিএনপি ও জামায়েত সহ অংঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা একত্রিত হয়ে রাষ্ট্রীয় সম্পদ পোড়ানো, বিস্ফোরক দ্রব্য বহন ও পুলিশের উপর হামলা চালিয়ে দুই পুলিশ সদস্যকে আহত ও পুলিশের সরকারি গাড়ি ভাঙচুর সহ রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকার অপরাধে ৩ অক্টোবর ২০১৮ সালে ১৪৩/১৮৬/৩৩২/৩৩৩/৩৫৩/৩০৭/৪২৭/৩৪ ধারার পুলিশ বাদি হয়ে সোনারগাঁ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার প্রধান আসামী আক্তার হোসেন। ৭৪ নং
চৌধুরীগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ মোখলেছুর রহমান বলেন, এই বিদ্যালয় পরিচালনার জন্য একটি কমিটি করে পাঠানো হয়েছিল পরে তা বাতিল করে অ্যাডহক কমিটি গঠন করা হয়। চলতি বছরের ২৩ মার্চ স্কুল পরিচালনা কমিটি গঠনের জন্য তফসিল ঘোষনা করে প্রতীকও বরাদ্ধ দেওয়া হয়। পরে ১৪ মে ওই তফসিল স্থগিত করা হয়েছে। পরে জুনের ১৪ তারিখে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের নিদের্শমতে স্বাক্ষর করে পূর্বের কমিটির তালিকা পাঠানো হয়। স্থগিতকৃত তফসিল বাতিল করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান জানেন।
চৌধুরীগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আক্তার হোসেন বলেন, আমি একজন সরকারি চাকুরিজীবী তাই সরকারের পক্ষে সবসময় থাকি। রাষ্ট্রবিরোধী মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, মামলাতো যে কারোর নামেই থাকতে পারে তাতে কি তিনি দোষী হয়ে যান। আমি দলিলের মাধ্যমে প্রকৃত দাতা সদস্য হয়েছি।
সোনারগাঁ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দৌলতর রহমান বলেন,আমরা উপজেলা পরিষদের অধীনে চাকুরী করি। এই পরিষদের চেয়ারম্যান একটি দাবি করলে আমরা ফেলতে পারিনা। তাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাড.সামসুল ইসলাম ভূঁইয়ার কথামতো এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। অ্যাডহক কমিটির মেয়াদ শেষে নির্বাচনের তফসিল ঘোষনা করা হলে প্রার্থীরা আবেদনপত্র তুলেন। তারপর ওই তফসিল স্থগিত করা হয়। স্থগিতকৃত তফসিল বাতিল না করে কিভাবে কমিটি গঠন করা হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই কমিটি নিয়ে যদি কোনো প্রশ্ন উঠে তাহলে কমিটি ভেঙ্গে দেওয়া হবে।
সোনারগাঁ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ্যাড.সামসুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, আমি নিজেই তাকে আওয়ামী লীগের কর্মীর প্রত্যায়নপত্র দিয়েছি। সে একজন আওয়ামী লীগের কর্মী। বিএনপির নেতা রাষ্ট্রবিরোধী মামলার প্রধান আসামী আওয়ামী লীগের কর্মী কিভাবে হলেন জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ডিএসবি, এনএসআইয়ের রির্পোটে তার সম্পৃক্ততা পাওয়া যায়নি। আপনার একক ক্ষমতা বলে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে কিনা এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, উপজেলা শিক্ষা অফিসার সহ সকলের স্বাক্ষরের পর আমি অনুমোদন দিয়েছি। স্থগিতকৃত তফসিল বাতিল না করে কিভাবে কমিটি গঠন করা হলো এব্যপারে তিনি উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার উপর দায় চাপান। এসময় তিনি পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য গণমাধ্যম কর্মীদের অনুরোধ করেন।