তাপ স্টোক থেকে বাচার উপায়

80


তীব্র তাপদাহ চৈত্রের শেষে গ্রীষ্মের আগমনী জানান দিচ্ছে। গত এক সপ্তাহ ধরে বাংলাদেশ জুড়ে বইছে লু হাওয়া। ভোর রাত থেকে সকাল পর্যন্ত তাপমাত্র কিছুটা কম থাকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে বাড়ছে গরমের তীব্রতা। বলা হয় একটা ভ্যাপসা গরম বইছে। যদিও সারাদিনই সূর্যের সঙ্গে মেঘের লুকোচুরি খেলা চলে। এই সময়ে ঘরের বাইরে বের হয়ে অনেকেই হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছে। জানুন হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি এড়িয়ে সুস্থ থাকার উপায়।

মনে রাখবেন, তীব্র দাবদাহে অনেকেই হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। আর এই অসুখ কিন্তু মেডিক্যাল ইর্মার্জেন্সি। তাই সচেতন হওয়া ছাড়়া আমাদের হাতে আর কোনও গতি নেই।

হিট স্ট্রোক কী?:

গ্রীষ্মের দিনে অত্যধিক তাপমাত্রাজনিত কারণে শরীর অতিরিক্ত গরম হয়ে যায়। এই সমস্যাকে বলা হয় হিট স্ট্রোক। অনেকক্ষণ তীব্র রোদে থাকার কারণে এই সমস্যা হয়। হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে শরীরের তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে যেতে পেরে।

এই অসুখে আক্রান্ত হলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে হয়। নইলে প্রাণ নিয়ে টানাটানি পড়তে পারে। তাই দেরি না করে এই অসুখের লক্ষণ ও প্রতিরোধের কৌশল জেনে নেওয়া দরকার।

হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ:

১. শরীরের তাপমাত্রা খুবই বেড়ে যায়। এই সময় তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে যেতে পারে
২. আক্রান্ত অদ্ভুত ব্যবহার শুরু করতে পারেন, তাঁর খিঁচুনি হতে পারে
৩. খুব ঘাম হয়
৪. বমি বমি ভাব বা বমি হতে পারে
৫. দ্রুত শ্বাসপ্রশ্বাস
৬. হার্টরেট বেড়ে যায়
৭. মাথা ব্যথা হয়
8. আক্রান্ত সংজ্ঞাহীন হয়ে যেতে পারেন

এই লক্ষণগুলো দেখা দিলে অবশ্যই সচেতন হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

হিট স্ট্রোক কেন হয়?:

এই অসুখ মূলত খুব গরমে থাকার জন্য হয়। তাই যারা গরমের সময় একান্তই বাইরে বের হতে বাধ্য হচ্ছেন, তারা সতর্ক হন। আসলে আবহাওয়া উতপ্ত হলে শরীর নিজের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা আর নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে না। তখন এই জটিলতা তৈরি হয়।

এছাড়া যারা এই গরমে খুব পরিশ্রম করছেন, এক্সারসাইজ করছেন, তাদেরও এই সমস্যা হতে পারে। তাই দুপুরের দিকে অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম এড়িয়ে যেতে হবে।

হিট স্ট্রোক প্রতিরোধের উপায়:

১. হালকা জামাকাপড় পরতে হবে
২. সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন
৩. পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে
৩. বাইরে বেশি সময় না কাটানোই ভালো
৪. খুব সকালে বা রাতের দিকে বাইরের কাজ সেরে ফেলুন,
৫. ছাতা, টুপি ব্যবহার করুন
৬. ইউরিনের রঙের দিকে নজর রাখুন, তা হলুদ বা গাঢ় রঙের হলে অবশ্যই পানি পানের পরিমাণ বাড়ান
৭. কফি, মদ্যপান ইত্যাদি থেকে দূরে কাটাতে হবে।

হিট স্ট্রোক এড়াতে ঘরোয়া টোটকা:

১. প্রচুর পানি পান করুন
২.প্রয়োজন দেশি ফলের শরবত খান
৩.খুব বেশি প্রয়োজন না হলে ঘরেই থাকুন
৪.ক্ষেত-খামারে, মাঠে কাজ করতে হলে ছাতা ব্যবহার করুন
৫. পানিশূন্যতা পূরণে স্যালাইন খেতে পারেন
৬. রোদ থেকে এলে মুখে পানির ঝাপটা দিন
৭. গরমে প্রশান্তি পেতে ডাবের পানি, অ্যালেভেরার রস, তেঁতুলের শরবত, পুদিনা পাতার শরবত পান করুন
৮. ভাজাপোড়া খাবার, অতিরিক্ত চর্বি বা বেশি মিষ্টিজাতীয় পরিহার করুন