অসহায় মোমেনের জমি জবর-দখলের চেষ্ঠা

177

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ নারায়ঙ্গঞ্জের দেওভোগ এলাকার অসহায় মোমেনের জমি জবর-দখলের চেষ্ঠা করছে আপন মামা আতাউর রহমান রিনা। জোড় ও জবর-দখল করে মোমেনের জমির উপর সাইনবোর্ড টানিয়েছে রিনা।

মোমেনের অভিযোগের ভিত্তিতে অনুসন্ধান প্রতিবেদন করেছে জাতীয় ভেজাল প্রতিরোধ ফাউন্ডেশন নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটি। সাংবাদিক ও সংগঠক সুলতান মাহমুদ্দ তার টিম নিয়ে ২৯ এপ্রিল রোজ সোমবার দুপুরে দেওভোগ মোমেন ও আতাউর রহমান রিনার জমিতে অনুসন্ধান করেন। মোমেন বাদী হয়ে ১৮ এপ্রিল সংগঠনের চেয়ারম্যান এস এম মোরশেদ বরাবর অভিযোগ করে। অভিযোগে উল্লেখ করে বিবাদী আতাউর রহমান রিনা পিতাঃ মৃত জিয়াউদ্দিন আহমেদ গ্রামঃ ১৭৫ পশ্চিম দেওভোগ, থানাঃ ফতুল্লা জেলাঃ নারায়ণগঞ্জ আমার সম্পত্তিতে জোড় পুর্বক সাইনবোর্ড টানিয় দখল করে নেওয়ার পায়তারা করতেছে, আমাকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করছে,  মিথ্যা মামলার হুমকি-ধমকি দিচ্ছে, অপহরন ও জানে মারার পায়তারা করছে। সন্ত্রাসী দিয়েও আমায় হুমকি ও হয়রানি করতেছে, লোক জনের নিকট আমার নামে বদনাম  ও রটনা রটাচ্ছে। এব্যাপারে আমি নিম্মস্বাক্ষরকারী ফতুল্লা মডেল থানায় অভিযোগ করে কোন সহযোগিতা পাইনি। আমি বিবাদীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ ও নিরাপত্তাহীনতায় ভোগতেছি।

এই অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে যে জোড় করে মোমেনের জমির উপর সাইনবোর্ড লাগিয়েছে। তবে আতাউর রহমান রিনা তা স্বীকার করেছে। ফতুল্লা থানার এস আই তদন্তে এসে সাইনবোর্ড লাগানো পেয়েছে তার কথা প্রতিবেদকের কাছে স্বীকার করেছে। অনুসন্ধানকারী টিমও সাইনবোর্ড লাগান আছে দেখেছে। এব্যাপারে মোমেনের খালাত ভাই ও আতাউর রহমানের ভাগিনা ফয়সাল বলে, মামা যদি জমি পায় নিবে তবে মোমেনের জমির উপর কেন সাইনবোর্ড লাগাবে, মোমেনের মা বেচে থাকতে এই মামা এই জমিতে মাটি ভরাট করে কিছু কাজ করে দিয়েছে যা আজ জীর্নশীর্ন, আতাউর মামা মোমেনের জমি দখল করে নেওয়ার জন্য জোড় করে সাইনবোর্ড লাগিয়ে  পায়তারা করছে। মোমেনের খালা লিপি, ইতি, লায়লা, নুসরাত মানিক চায় মোমেনের জমি বুজিয়ে দেওয়া হউক কিন্তু নুসরাত মানিক সামনে আসে নাই।

দুই পক্ষ কাগজাদি দিয়েছে যা পর্যবেক্ষন করে পাওয়া যায় তা নিম্মরুপঃ তফসিল বর্নিত সম্পত্তিতে দেওভোগ নিবাসী মৃত আক্কাস ওস্তাগারের ছেলে সমসের আলী বিগত ৫ ডিসেম্বর ১৯৪১ সনে নারায়নগঞ্জ সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে ৬৭৭৩ নং দলিলে মোহাম্মদ আলী থেকে খরিদ করে। আবার ২৬ ডিসেম্বর ১৯৫০ সনে নারায়নগঞ্জ সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে ৬৪৬৯ নং দলিলে রেয়াজদ্দিন আহম্মদ থেকে ক্রয় করে স্বত্ববান মালিক দখলকার নিয়ত হয়ে ভোগ দখল থাকাবস্থায় এস এ ৩০ নং খতিয়ানে তার নিজ নাম শুদ্ধভাবে লিপিবদ্ধ করায়।সমসের আলী ইন্তেকাল করলে  তৎত্যাজ্যভিত্তে জামিনা খাতুন স্বামীর ওয়ারিস সুত্রে ও বসির উদ্দিন, জিয়া উদ্দিন, গিয়াস উদ্দিন পৈত্রিক ওয়ারিস সুত্রে স্বত্ববান ও স্বত্ববর্তী মালিক দখলকার ও দখলকারীনী নিয়ত হয়ে ও থাকিয়া বিগত আরএস ৪৮৮ নং খতিয়ানে তাদের নাম শুদ্ধভাবে রেকর্ডভুক্ত হয়। সিএস দাগ …… এসএ দাগ……আরএস দাগ    জমির পরিমান…… শতাংশ। জামিনা খাতুন ইন্তেকাল করলে তৎত্যাজ্যভিত্তিতে বসির উদ্দিন, জিয়া উদ্দিন,গিয়াস উদ্দিন ওয়ারিস সুত্রে স্বত্ববান ও স্বত্ববর্তী মালিক দখলকার নিয়ত হয়ে ও থাকিয়া ভোগ দখল থাকাবস্থায় জিয়া উদ্দিন ১ স্ত্রী আয়েশা বেগম, ৫ পুত্র যথাক্রমে ১) আহসান উল্লাহ ঝুনু ২) আতাউর রহমান রিনা ৩) হাবিবুল্লাহ ৪) জুয়েল আহমেদ ৫) বাদশা/রানা এবং  ৫ কনা  যথাক্রমে ১) লায়লা নাসরিন ২) মমতাজ মুন্নি ৩) লিপি চৌধুরী ৪)নুসরাত জাহান মানিক ৫) ইতি আক্তার কে ওয়ারিশ জীবমান রাখিয়া জিয়া উদ্দিন ইন্তেকাল করলে তৎত্যাজ্যভিত্তিতে ১ স্ত্রী, ৫ পুত্র, ৫ কন্যা  ২২ শতাংশের ৩ ভাগের ১ ভাগ ৭.৩৩ শতাংশ জমি মালিক দখলকার নিয়ত হয়। ২৮/১২/৮৬ সনে ৯১০৩ নং দলিলে ১) আহসান উল্লাহ ঝুনু ২) আতাউর রহমান রিনা ৩) হাবিবুল্লাহ ৪) জুয়েল আহমেদ ৫) লায়লা নাসরিন ৬) মমতাজ মুন্নি ৭) লিপি চৌধুরী তাদের মাতা আয়েশা বেগমের নিকট বিল এওয়াজ হেবা দলিলে ৪ শতাংশ জমি দান করে। এমতাবস্থায় ৭.৩৩ শতাংশ জমি থেকে জিয়া উদ্দিনের স্ত্রী আয়েশা বেগম ৪.০০+ .৯১৬= ৪.৯১৬ শতাংশ। এই সম্পত্তি থেকে নুসরাত জাহান মানিকের নিকট বিল এওয়াজ হেবা দলিলে ১  শতাংশ এবং আক্তার হোসেনের নিকট সাফ-কাবলা দলিলে ৩.২৫ শতাংশ বিক্রি করে নিঃস্বত্তবান হয়। আয়েশা বেগম মালিকানা (৪.৯১৬-৪.২৫=.৬৬৬ অযুতাংশের মাতার ওয়ারিশ হিসাবে পুত্র পাবে .০৮৮৮ অযুতাংশ এবং কন্যা পাবে .০৪৪৪ অযুতাংশ। পিতার ওয়াশির সুত্রে পুত্র পাবে .৮৫৫ অযুতাংশ এবং কন্যা পাবে .৪২৭ অযুতাংশ।এমতাবস্থায় বাদশা/রানা পায় (.৮৫৫+.০৮৮৮=.৯৪৩) অযুতাংশ, আতাউর রহমান রিনা পায় (.৮৫৫-.৭২৭=.১২৮+.০৮৮৮=.২১৬) অযুতাংশ, নুসরাত জাহান মানিক ও ইতি আক্তার পায় (.৪২৭+.০৪৪৪=.৪৭১)অযুতাংশ করে পায়।

নুসরাত জাহান মানিক ১ শতাংশ জমি ২৮/০৯/০৪ তারিখে ৫২৩৭ নং দলিলে মালিক হয়ে মোমেনের নিকট ০৩/১২/১৮ তারিখে ১১৬২১ নং দলিল বিক্রি করে। অন্যদিকে ১২/০১/১৭ তারিখে ৪২৪ নং দলিলে লায়লা, লিপি, ইতি .১৩২ অযুতাংশ জমি মমতাজ মুন্নি(মোমেনের মা)এর বিক্রি করে।১৮/০৭/১৮ তারিখ ৬৭৩৭ নং দলিলে নুসরাত জাহান মানিক .৪৪ অযুতাংশ জমি মমতাজ মুন্নি(মোমেনের মা) এর নিকট বিক্রি করে।  দুই দলিলে ক্রয়সুত্রে ১.৩২+.৪৪=১.৭৬+.০৪৪৪=১.৮০ শতাংশ জমির মালিক হয়ে ত্যাজ্যভিত্তিতে মো মোমেনকে একমাত্র ওয়ারিশ রেখে ইন্তেকাল করলে মোমেন উক্ত ১.৮০ শতাংশ জমি মালিক হয়ে নিজ নামে নামজারি জমাভাগ করিয়ে ভোগ দখল করে। সরেজমিনেও তা পরিলক্ষিত হয়।

এমতাবস্থায় আতাউর রহমান রিনা ভাগিনা মোমেনের জমির সাইনবোর্ডের উপর সাইনবোর্ড টানিয়ে জবর দখল করে যা আইনত দন্ডনীয় অপরাধ। মোমেনের খালাত ভাই ফয়সাল সহ অন্যান্য মামাতো ভাই ও খালাতো ভাই এবং খালারা মোমেমের জমির দখল ও মালিকানা স্বীকার করে। তারা আতাউর রহমান রিনার জবর-দখলের নিন্দা জানায় এবং তার বিচার দাবী করে। মোমেনের জমিটুকু বুজিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করে।