আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ সোনারগাঁ সাবরেজিস্ট্রি অফিসের উমেদার আমজাদ

131

মোঃ মোক্তার হোসাইন

নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ সাব রেজিস্ট্রি অফিসের উমেদার মো. আমজাদ হোসেনের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে।

দলিল দাতা-গ্রহিতা ও দলিল লেখকদের জিম্মি করে প্রতিদিন অবৈধভাবে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।এছাড়াও ওমেদার আমজাদ হোসেন সোনারগাঁ সাব রেজিস্ট্রি অফিসের সহকারী, পিওন ও নকল নবীশদের নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে জিম্মি করে রেখেছে। ফলে তার বিরুদ্ধে কেউ কোন কথা বলার সাহস পাচ্ছে না।

জানা যায়, সোনারগাঁ উপজেলার কাঁচপুর এলাকার মোঃ হযরত আলীর ছেলে আকাশ উমেদার মো. আমজাদ হোসেনের দুর্নীতি ও অনিয়মের বিরুদ্ধে ২ মে দুদকে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

সোনারগাঁ সাব রেজিস্ট্রার অফিস এর দলিল লেখকগন জানান, উমেদার আমজাদ হোসেন তাদের পার্টিদের বাড়ীতে গিয়ে দলিল লেখকদের দিয়ে দলিল নিবন্ধন না করিয়ে তাকে দিয়ে করাতে বলে তা না হলে সাব রেজিস্ট্রার দিয়ে দলিল নিবন্ধন বন্ধ করে দিবে বলে হুমকি দেয়। দলিল লেখকরা আরও জানান উমেদার আমজাদ হোসেন আমাদের পার্টিদের বাড়ীতে যাওয়া বিষয়টি আমরা সাব রেজিস্ট্রার মোঃ মুজিবুর রহমান কে জানিয়েছি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উমেদার মো. আমজাদ হোসেন সোনারগাঁ সাব রেজিস্ট্রি অফিসে ৬০ টাকা দৈনিক মজুরিতে সাব রেজিস্ট্রারের বিভিন্ন ফরমায়েশ (আদেশ) পালনের জন্য চাকুরি নেন। আমজাদ হোসেন উমেদারের চাকুরি পাওয়ার পর সে অত্র অফিসটি আস্তে আস্তে নিজের কব্জায় নিয়ে নেয়। শুরু হয় তার দাপট, সে অত্র অফিসের সহকারী থেকে শুরু করে টিসি মোহরার, সবাইকে বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি দেখিয়ে তার কর্তৃত্ব দেখাতে শুরু করে। মাত্র ৭-৮ বছর ৬০ টাকা মুজুরিতে চাকুরি করা উমেদার আমজাদ হোসেন এখন কোটি কোটি টাকার মালিক।

২০২৩ সালে ঘুষ দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে উমেদার আমজাদ হোসেন কে সোনারগাঁ সাব রেজিস্ট্রার অফিসের সাব রেজিস্ট্রার আলী আজগরের সময় জেলা রেজিস্ট্রার উমেদার আমজাদ হোসেন কে স্ট্যান্ড রিলিজ (তাৎক্ষণিক অবমুক্ত) করা হয়েছে।

বদলির আদেশ পাওয়া উমেদার আমজাদ হোসেনকে রূপগঞ্জ সাব রেজিস্ট্রী অফিসে বদলি করা হয়েছে। দ্রুত তাদের বর্তমান কর্মস্থল ত্যাগ করে সেখানে যোগ দিতে বলা হয়েছে। পরে কয়েক মাস না যেতে সে জেলা রেজিস্ট্রার ও বিভিন্ন নেতাদের ম্যানেজ করে সোনারগাঁ সাব রেজিস্ট্রি অফিসে আমজাদ হোসেন যোগদান করেন। তার কিছুদিন পরই উমেদার আমজাদ হোসেন নানাভাবে জনহয়রানী করে দুর্নীতির মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়া শুরু করে। বর্তমানে সে নিজেকে অনেক বড় অফিসার মনে করে। কারণ সে সাব রেজিস্ট্রার মোঃ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে দাড়িয়ে দলিল চেক করার নামে দাতা-গ্রহীতাকে বিভিন্ন ধরনের খুটিনাটি ভুল ধরে দাতা- গ্রহীতাদের জিম্মি করে লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ আদায় করে থাকে।

নিয়মানুযায়ী একজন উমেদারের কাজ হলো সাব রেজিস্ট্রারের বিভিন্ন আদেশ পালন করা। কিন্ত বাস্তবে তা হচ্ছে না, উমেদার আমজাদ হোসেন নিয়মের বাহিরে গিয়ে সে দলিল চেক করে। আর সহকারী যার কাজ মূলত দলিল চেক করা সেই সহকারী পুতুলের মতো বসে থাকে। কারণ তাকে উমেদার আমজাদ হোসেন ও পারভীন দলিল চেক করতে দেন না।

জানা যায়, উমেদার আমজাদ হোসেন অনেক চালাক টাইপের লোক, তার নামে জায়গা জমি না কিনে তার শশুরের নামে অনেক জমি ক্রয় করেছেন।

সূত্র আরও জানায়, উমেদার আমজাদ হোসেন নাকি জেলার রেজিস্ট্রার ও আইজিআর অফিস ম্যানেজ করে এইসব কর্মকাণ্ড বেপরোয়া চালিয়ে যাচ্ছেন । এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীরা আইন মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন ও আইজিআর পরিদপ্তরের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে উমেদার আমজাদ হোসেন ঘুষ গ্রহণ ও অনিয়মের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কোনো দলিল লেখকের কাছে ঘুষদাবি করিনি। একটি মহল আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ এনেছে। এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট।