হাসপাতালে অবরুদ্ধ’ নাহিদ-আসিফ, নজরদারিতে ‘গোয়েন্দা পুলিশ’

155

ওলিউল্লাহ জনি, ঢাকাঃ ঢাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ। সেখানে কঠোর নজরদারিতে  কেবিনে অবরুদ্ধ ও হাসপাতালের ওয়াই-ফাই ও টেলিফোন সংযোগও বিচ্ছিন্ন করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে।

কোটাবিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের প্ল্যাটফর্ম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা জানায়,৪ দিনের আলটিমেটাম শেষ হওয়ার পর ২৫ জুলাই বৃহস্পতিবার তাদের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করার কথা ছিল। আমাদের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম ও আসিফ মাহমুদ হাসপাতালে ভর্তি থাকায় সেখান থেকেই তারা কর্মসূচি ঘোষণা করবে বলে জানিয়েছিল। কিন্তু রাতে ঐ হাসপাতালে নাহিদ ও আসিফের কক্ষের সামনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দুই সদস্য পাহারা দিচ্ছে। সমন্বয়কদের অভিযোগ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা২৫ জুলাই বৃহস্পতিবার ঐ হাসপাতালে যায় এবং নাহিদ ও আসিফকে তাদের কেবিনে অবরুদ্ধ করে রাখে। পাশাপাশি হাসপাতালের ইন্টারনেট ও টেলিফোন সংযোগও বিচ্ছিন্ন করে ফেলে তারা। এ কারণে তারা সময়মতো নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করতে পারে নাই।” অথচ বিকেলে আসিফ মাহমুদ গণমাধ্যমকে বলেছিল, তারা সমন্বয়কদের সঙ্গে বৈঠক করে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবে। পরে সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে আসিফ ফোন করে জানায়, সে ও নাহিদ হাসপাতালে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হাসপাতালের নেট ও টেলিফোন লাইন কেটে দিয়েছে। এ কারণে তারা অপর সমন্বয়কদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে নাই।

সুত্রমতে, ঐদিন রাতে হাসপাতালের সপ্তম তলায় নাহিদের কেবিনের সামনে ৩ জন ও ৩য় তলায় আসিফের কেবিনের সামনে ৪ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যকে সাদা পোশাকে অবস্থান করেছে। তারা নিজেদের গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য পরিচয় দিয়ে প্রতিবেদককে কেবিনে প্রবেশ করতে দেয় নাই। পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ গণমাধ্যমকে বলে, আমরা সংবাদ ব্রিফিং করতে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। কিন্তু সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আমাদের নাহিদ ও আসিফের সঙ্গে দেখা করতে দেয় নাই। পরে আমরা হাসপাতাল থেকে চলে আসি। এ ব্যাপারে নাহিদ বলে, “হাসপাতালের বাইরে অনেক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য অবস্থান করছে। কাউকে ভেতরে ঢুকতে বা বের হতে দিচ্ছে না তারা। বিকেলের পর থেকে নেট সংযোগও পাচ্ছি না।”

একইদিন রাতে হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ জানায়, “সকাল থেকেই আমাদের হাসপাতালের ওয়েটিং রুমে কয়েকজন পুলিশের পোশাকে ও কয়েকজন সাদা পোশাকে অবস্থান করছে। তারা হাসপাতালের স্বাভাবিক কার্যক্রমে কোনো সমস্যা করেনি। আমাদের কাছে কিছু জানতেও চায়নি। হাসপাতালের ভেতরে রোগীরা যেখানে থাকে, সে দিকেও ঢোকে নাই।

২০ জুলাই শনিবার ভোরে রাজধানীর সবুজবাগের একটি বাসা থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে নাহিদকে তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে এবং ২১ জুলাই রোববার তাকে পাওয়া যায়। ঐ সময় তার বাম উরু ও কাঁধে প্রচণ্ড ব্যথা ও গভীর ক্ষত ছিল। অন্যদিকে ১৯ জুলাই শুক্রবার আসিফকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অপহরণ করে বলে অভিযোগ ওঠে। ৫ দিন পর তাকে পাওয়া গিয়েছে বলে জানা যায়।