ইসমাম হোসাইনঃ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বৈরশাসন দেশের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ইউনুস বলে, “এমন একটি সময়ে এসে দেশের দায়িত্ব নিয়েছি, যখন প্রায় সব ক্ষেত্রেই চরম বিশৃঙ্খলা। তাই নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ, জনপ্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গণমাধ্যমে সংস্কারের পর যত দ্রুত সম্ভব অন্তর্বর্তী সরকার একটি অবাধ, সুষ্ঠু এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের আয়োজন করবে।”
রাজধানীর একটি হোটেলে গতকাল রোববার দুপুরে বিদেশি বিভিন্ন মিশনের রাষ্ট্রদূত ও জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের প্রথম ব্রিফিংয়ে ড. ইউনূস এ কথা বলে। বিদেশি মিশনগুলোর ৫১ জন এবং আন্তর্জাতিক সংস্থার ১৬ জনসহ সব মিলিয়ে ১৯ অগাস্ট সোমবার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ৬৭ জন বিদেশি অতিথি। পরে ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের জানায়, প্রধান উপদেষ্টা সরকার পরিচালনায় বিদেশি কূটনীতিকদের সমর্থন চেয়েছে।
ণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের নবযাত্রায় বাংলাদেশের বন্ধু, অংশীদার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পাশে থাকবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রধান উপদেষ্টা। সরকারের প্রাথমিক লক্ষ্য তুলে ধরে। তার পাশাপাশি রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বাংলাদেশ যে সন্ধিক্ষণে এসে দাঁড়িয়েছে, তা থেকে উত্তরণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জোরালো সহযোগিতা প্রত্যাশা করে। বিদেশি রাষ্ট্রদূত ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ব্রিফিং সকালে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে বিক্ষুব্ধ লোকজন পথরোধ করায় প্রায় দুই ঘণ্টা পর অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছান ড. ইউনূস।
ড. ইউনূস অনুষ্ঠানে দেরিতে পৌঁছানোর জন্য প্রথমেই দুঃখ প্রকাশ করে বলে, সংক্ষুব্ধ লোকজন তাঁর পথ আটকে দিয়েছিল। বিক্ষুব্ধরা তাৎক্ষণিকভাবে সিদ্ধান্ত চাইছিল। কিন্তু তিনি তাঁদের তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিশ্রুতি দেয়নি।
এরপর জুলাই থেকে শুরু হওয়া দেশ কাঁপানো ১৩ দিনের শান্তিপূর্ণ ছাত্র আন্দোলনের কথা বলতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ে শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ড. ইউনূস। প্রধান উপদেষ্ঠা বলে, ‘পৃথিবীর আর কোনো দেশে ছাত্রদের এতটা ত্যাগ স্বীকার করতে হয়নি। তাদের শরীর যেভাবে ক্ষত-বিক্ষত হয়েছে, সেটা বলে বোঝানো যাবে না। চোখের ভেতরে বুলেট ঢুকে গেছে। তরুণ ছেলেমেয়েগুলোর কী হবে, আমরা জানি না। স্বাস্থ্যবান এক তরুণ আমাকে বলল, “আমি তো স্যার ক্রিকেটার হতে চেয়েছিলাম। চেয়ে দেখুন কী হয়েছে আমার পায়ের।” আমি তার সঙ্গে কথা বলতে পারছিলাম না।’