হবিগঞ্জের জাহির দুর্নীতি করে গড়েছে সম্পদের পাহাড়, সহয়তায় আহমেদ

169

স্টাফ রিপোর্টারঃ হবিগঞ্জের জাহিরের সম্পদের পাহাড় থাকত একটি টিনশেড ভাড়া বাসায়। পেশায় ছিল আয়কর উপদেষ্টা (আয়কর আইনজীবী)। রাজনীতিতে সর্বদা সক্রিয় থাকায় পেশায় মনোযোগী হতে পারেনি। হবিগঞ্জের জাহির থাকত টিনশেড ভাড়া বাসায় দুর্নীতি করে গড়েছে সম্পদের পাহাড় সহয়তায় আহমেদ আলী মেম্বার।

, আগে আয়ও তেমন ছিল না। কখনো কখনো বাসা ভাড়া দিতেও হিমশিম খেত। অথচ এখন কি নেই তার। বিলাসবহুল ছয় তলা বাড়ি, একাধিক বিলাসবহুল গাড়ি, বাড়িভরা স্বর্ণ, শহরে কয়েকটি বাড়ি। সরকারি, ব্যক্তি মালিকানাধীন বাড়ি, জমি দখলেও জাহির ছিল অত্যন্ত পটু। এই সে নামকরা দুর্নীতিবাজ হবিগঞ্জের সাবেক সংসদ-সদস্য (এমপি) ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ আবু জাহির হয়ে। আর এই দুর্নীতিবাজের ডান হাত নামে ক্ষেত আহমেদ আলী মেম্বার, এই আহমেদ আলী সব দুর্নীতির স্বাক্কী ও প্রতেক্ষ্য ও পরোক্ষ্যভাবে সহয়তা করত আবু জাহিরকে। আহমেদকে ধ্রলেই পাওয়া যাবে জাহিদকে।

আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাও এলাকাবাসী জানায়, আহমেদ আলী মেম্বারের সহয়তায় শহরে অসংখ্য বাড়ি, জমি সাবেক এমপি আবু জাহির দখল করেছে। সরকারি, ব্যক্তিমালিকানাধীন কোনো জায়গা আবু জাহির ছাড়েনি। স্কুলের বাসা, মার্কেট পর্যন্ত দখল করেছে। যে ব্যক্তি ভাড়া বাসায় থেকে ঠিকমতো ভাড়া পরিশোধ করতে পারেনি, সে দুর্নীতিবাজ এখন কয়েকশ কোটি টাকার মালিক। ছয় তলা বিশিষ্ট বাড়ি করেছে, বিলাসবহুল কয়েকটি গাড়ি কিনেছে, প্রায় আড়াইশ ভরি স্বর্ণ কিনেছে। শাহজাহান মিয়া নামে একজন বলে, হবিগঞ্জের এমন কোনো এলাকা নেই যেখানে আবু জাহিরের জায়গা বা বাসা নেই। জাহির অসংখ্য বাসা বাড়ী দখল করেছে আহমেদ আলীকে দিয়ে। অলিপুরে কয়েক কোটি টাকা মূল্যের একটি জায়গা দখল করেছে। টাকা পাচার করেছে বিদেশে। মোঃ আবু জাহির টাউন হল রোডে একটি পুকুরের জমি বিক্রি করে দেওয়ার শর্তে মালিক তাকে ৮.৫ শতাংশ জমি দান করে। মাটি ভরাট করে এখানে বাসা নির্মাণ করে ২০০১ সালের দিকে। একতলা বাসায় থাকতে। ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি বৈদ্যের বাজারে সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়ার সঙ্গে গ্রেনেড হামলায় আহত হয়। এরপরই তার কপাল খুলে যায়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর তৎকালীন এমপি মোঃ আবু জাহির হবিগঞ্জ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের সভাপতি হয়। তখনই জাহির স্কুলের ভবন এবং মার্কেট নিজের আয়ত্তে করে নেয়। স্কুলের প্রায় ২৫ লাখ টাকা খরচ করে ভবন এবং মার্কেট সংস্কার করে এগুলো নিজের ভাইকে ভাড়া হিসাবে দেয়। ভাড়া ধার্য করা হয় বাসা এবং দুটি দোকান সব মিলিয়ে ৯ হাজার টাকা। অথচ এগুলোর বাজার মূল্য হিসাব করলে কমপক্ষে ২০ হাজার টাকা একেকটির ভাড়া হওয়ার কথা। টানা সাড়ে ১৫ বছর এমপি থাকার সুবাধে শহরের সার্কিট হাউজ রোডে শায়েস্তানগর এলাকায় একজন প্রবাসীর প্রায় ৭৫ লাখ টাকা মূল্যের একটি বাসা দুজনের বিরোধের সুযোগে সালিশ করে দেওয়ার নামে দখল করে নেয় মোঃ আবু জাহির। তেঘরিয়া পিডব্লিউডি অফিসের পাশে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আরেকজনের ৩০ শতাংশ জমি দখল করেছে। ওই জমির মূল্য প্রায় ৬ কোটি টাকা। হবিগঞ্জ হাইস্কুলের কোয়ার্টার, মার্কেট প্রভাব খাটিয়ে দখল করেছে। পুরাতন খোয়াই নদীর কয়েক কোটি টাকা মূল্যের জমি দখল করে সেখানে সেলুনপট্টি করেছে।

হবিগঞ্জ হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের পেছনের পুকুরের ১৮ শতাংশ জমি নিজের স্ত্রীর নামে করেছে। বাল্লা সীমান্তে শতকোটি টাকা মূল্যের জমি স্ত্রী আলেয়া আক্তার, ছেলে ইফাদ জামিল, ভাই বদরুল আলম, ভাতিজা সাইদুর রহমান এবং নিজের পিএস সুদ্বীপ দাসের নামে ২শ শতাংশ জমি কিনেছে বলে জানা যায়। বাল্লা স্থলবন্দরের জন্য জমি অধিগ্রহণ শুরু হলে চারগুণ মূল্যে সরকারের কাছে এ জমি বিক্রি করে। শহরের রেলওয়ে বাইপাস সড়কে ঈদগার পাশে এক কানাডা প্রবাসীর ৩০ শতাংশ জমি দখল করে। ঐ জমির মূল্য অন্তত ১০ কোটি টাকা। এই অপকর্মের সাথে ছিল আহমেদ আলী মেম্বার। অনুসন্ধান চলমান রয়েছে ।