দুর্নীতির আইকন সামিউল হক পুনরায় পদায়ন

89

আবার সেই সামিউল হক: কি হবে ময়মনসিংহ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের
যথাযথ কর্তৃপক্ষের নির্দেশক্রমে জারীকৃত প্রজ্ঞাপন অনুসারে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের জনৈক নির্বাহী প্রকৌশলী, ময়মনসিংহ জেলার দায়িত্ব গ্রহণের ৩ দিনের মাথায় প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতার তদবিরে তাকে সরিয়ে নির্বাহী প্রকৌশলীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন জনাব সামিউল হক। বিশ্বস্ত সূত্রে প্রাপ্ত সংবাদ অনুসারে দায়িত্ব গ্রহণের ক্ষেত্রে তিনি ন্যূনতম বিধি-বিধান অনুসরণ করেননি। তার এই ‍উগ্র এবং ঔদ্ধত্বপূর্ণ আচরণের কারণ উম্মোচন হতে হয়নি। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই তার আসল উদ্দেশ্য প্রকাশিত হয়। জনাব সামিউল হক, নির্বাহী প্রকৌশলী, ডিপিএইচই, ময়মনসিংহ এবং তার এস্টিমেটর জনাব ইলিয়াস মিলে তাদের পছন্দের ঠিকাদারদের সাথে যোগসাযোশে বড় অঙ্কের টাকার বিনিময়ে দরপত্রের রেইট দিয়ে কাজ পাইয়ে দিতো। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় অন্যান্য ঠিকাদারদের মধ্যে ব্যপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। এ বিষয়ে একাধিক দৈনিক পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হয়। তথাপি তিনি ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মারুফা আক্তার (পপি) এর ক্ষমতা ব্যবহার করে নিজের চেয়ার রক্ষা করেন। সে সময়ে তিনি প্রায় ৪ বছর ময়মনসিংহ জেলার নির্বাহী প্রকৌশলীর দায়িত্বে ছিলেন। জাতীয় পত্রিকা দৈনিক ইনকিলাব এবং স্থানীয় পত্রিকা দৈনিক আজকের ময়মনসিংহ সহ অনেক পত্রিকায় জনাব সামিউল হক এর বিরুদ্ধে নিয়মিত অনিয়ম ও দুর্ণীতির খবর প্রকাশিত হতে থাকে। কিন্তু, অদৃশ্য ক্ষমতার বলে সামিউল বহাল তবিয়তে ময়মনসিংহ থেকে যান। প্রায় প্রতিটি ওয়ার্ক অর্ডারের জন্য তিনি ৩-৫% কমিশন নিতেন। তাকে সরাসরি শেল্টার দিতো ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মারুফা আক্তার (পপি) এবং তৎকালীন উপসচিব ও ফ্যাসিস্ট হাসিনার সাবেক এপিএস মো: খাইরুল ইসলাম। সে কারণে, জনাব সামিউল হক ২০১৭ সাল হতে ২০২১ সাল পর্যন্ত ময়মনসিংহের নির্বাহী প্রকৌশলী হিসাবে নির্বিঘ্নে দায়িত্ব পালন করেন এবং লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেন। তার দুর্ণীতির খবর দৈনিক ইনকিলাব ‘দুর্নীতির ঘটনায় তোলাপাড়’, মানবকন্ঠ পত্রিকায় ‘ময়মনসিংহে জনস্বাস্থ্য অধিদফতরে দূর্নীতি’, আজকের ময়মনসিংহ পত্রিকায় ‘ময়মনসিংহে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলে অনিয়ম-দূর্নীতির ঘটনায় তোলপাড়’ অপর একটি স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় ‘ময়মনসিংহ জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলে অনিয়মের অভিযোগ’ শিরোনামে ২০১৮ ও ২০১৯ সালে খবর প্রকাশিত হওয়া স্বত্বেও স্থানীয় সরকার বিভাগ পুন:রায় আওয়ামী ফ্যাসিস্ট নেত্রী মারুফা আক্তার (পপি) এর অনুগত সামিউল হককে ময়মনসিংহে পদায়ন করে। যেই ময়মনসিংহে আওয়ামী সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাকে নিয়ে এত আলোচনা ও অনিয়মের উদহারণ রয়েছে সেই সামিউল হককে পুনরায় ময়মনসিংহে পদায়ন করায় স্থানীয় ঠিকাদাররা আবার হতাশা ও আশংকায় ভুগছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঠিকাদার জানান যে, সামিউল জামালপুরের বাসিন্দা এবং মারুফা আক্তার (পপি)-ও জামালপুরের বাসিন্দা। সামিউল হক মারুফা আক্তার (পপি)-র ভাইকে ঠিকাদারী করার জন্য সুযোগ করে দেবার বিনিময়ে তিনি আওয়ামী সরকারের সম্পূর্ণ রাজনৈতিক ‍ও প্রশাসনিক সাপোর্ট পেয়েছেন। এ বিষয়ে ময়মনসিংহের এক সমন্বয়ক জানান যে, ছাত্র আন্দোলনের সাথে বেইমানী করে পুনরায় সরকার এই সামিউল হককে ময়মনসিংহ পদায়ন করেছে এটা হতে পারে না। সম্ভবত কর্তৃপক্ষ সামিউল হক এর অতীত ইতিহাস গোপন করে তাকে দিয়ে বিভাগীয় শহর ময়মনসিংহে নতুন করে লুটপাট করার একটা ফন্দি এটেছে।